somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্কুল ডায়েরি-১

০৪ ঠা জুন, ২০২১ সকাল ৯:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মে মাস, ২০০৫, বাড়ি থেকে পালিয়ে শোলাকুড়ি,মধুপুর, টাঙাইল এসেছি। তখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়তাম রাজিবপুর সবুজবাগ মাদ্রাসায়। এসে বহু কেলেঙ্কারি করে ভর্তি হলাম শোলাকুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়। আমার প্রথম ক্লাস স্কুলের টিনের ভাঙ্গা ঘরে। রেজাউল করিম স্যার বাংলা ক্লাস নিচ্ছেন। স্কুল ড্রেস সহ কিং ছাড়া ক্লাস উপস্থিত। সবাই কেমন করে যেন তাকিয়ে ছিল একটু অসস্তির মধ্য দিয়ে প্রথম দিন পার করলাম। তখন আমার বন্ধু বলতে আমার কাকা আমিনুল ইসলাম যে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে । ক্লাসের মাঝে একটু সময় পেলেই ওর ক্লাসরুমের সামনেই গিয়ে দাঁড়াতাম। এর পর কয়েকদিন পরেই আমাদের ক্লাসরুম পরিবর্তন হয়ে নতুন বিল্ডিং এ গেল। আমাকে বানালো হল ক্লাস ক্যাপ্টেন কিন্তু কেন বানানো হয়েছিল সেটা আজও জানি না । মনে হয়, ভাল ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি জন্য আলাদা ক্লাসরুমে পাঠানোর পর বাকিদের মধ্যে আমি একটু ফাঁকিবাজ ছিলাম অথবা অন্য যে কয়জন পড়াশোনার বেপারের একটু সিরিয়াস ছিল ওরা দায়িত্ব নিতে চাচ্ছিল না। সে জন্য মনে হয় আমার উপর উগরে দেয়া হয়েছিল। অন্যদিকে নার্গিস নামের মেয়ের ঘাড়ে দায় পড়েছিল মেয়েদের ক্যাপ্টেন হবার। একটা আফসোস আমার সারাজীবন থাকবে বৃত্তি না দিতে পারা। যদিও সেবছর আলাদা করে বৃত্তি পরীক্ষা হয়নি কিন্তু আমি ওদের মত পড়ার প্রেসার এবং পরিবেশ পেলে হয়ত আরেকটু ভাল ছাত্র হতে পারতাম ।
সারাক্ষন মজা মাস্তিতেই দিন কাটত। মুখের শ্রী তখন জঘন্য হয়ে গেছিল ব্রুণ উঠে । অক্টবর মাসে প্রথম বন্ধু হতে এলে রেজুয়ান ইসলাম রাতিন। এর আগে ক্লাসের অন্যরা একটু কথা বার্তা বললেও সবসময় একটা দূরত্ব বজায় রেখেই চলত। কিন্তু এর পর থেকে বিশেষ বন্ধু মহল হয়ে উঠল। রাতিন, ফারুক এবং মফিজুল আর শোহাগ। তবে বেশির ভাগ সময় গল্প, আড্ডা ওই রাতিন কে ঘিরেই হত আমার। এর মধ্যে আমার পড়াশোনার পাল্লা রাতিনের সাথে কারণ ও যে রকম করে পড়ত আমিও ওরে প্রতিপক্ষ করে নিলাম। একসাথে চলি এক সাথে খাই, ঘুরি এবং পড়ায় ওর সমান সমান হতে চাই। বৃত্তি শাখায় ১৯-২০ জন ছাত্রছাত্রী ছিল মনে হয়। সর্বমোট ১১০ এর উপরে ছিলাম। যেহেতু পরীক্ষা দিছিলাম ১১০ জন।
আমার আর আমিনুল কাকার যাত্রা শুরু হত ধরংপার হতে। সকালে খেয়ে বের হতাম আর ফিরতাম বিকাল ৫ টা কিং মাঝে মধ্যে প্রাইভেট পড়ে ছয়টায়। আমি বেশ জেদি ছিলাম। মাঝে মধ্যে রাগ করতাম দাদির সাথে আর রাগে সকালে না খেয়েই স্কুলে যেতাম। একদিন খুদায় আর পারতেছিলাম না। পকেট এ টাকাও নেই তাই টিফিন খেতে যাব ধরংপার, হেটে যেতে যেতে দেখলাম ট্রাক যাচ্ছে, রাস্তা ভাঙ্গা এই জন্য আস্তে যাচ্ছে বলে লাফিয়ে উঠলাম কিন্তু ধরং পার এসে ডাকি কিন্ত ট্রাক দাড়ায় না। লাফিয়ে পড়তে গিয়ে প্যান্ট ছিরে হাটু ,থুতনি, এবং হাতের কুনই গেল কেটে। ছাল চামড়া উঠে রক্তারক্তি অবস্থা। ভাজ্ঞিস কিছু ভাঙ্গেনি। আমিনুল কাকার আম্মা এসব দেখেই আচ্ছা রকম বকা দিছিল ।যদিও মিথ্যা বলেছি যে রাস্তায় দৌড়ে আছাড় খেয়েছি। ট্রাকের কথা বললে মাইর একটাও মাটিতে পড়ত না।
স্কুলের সব থেকে আকাম যে কাজ টা করেছিলাম সেটা হল রেজা স্যারের মাইর থেকে বাঁচতে বাথরুমের কথা বলে ক্লাসের শুরু তে চলে যেতাম, বাজার দিয়ে ঘুরে ফিরে আসতাম শেষ পর্যায়ে । একদুইদিন যাবার পর স্যার বুঝে ফেলেছিল এরপর তো বাথরুম পেলেও যেতে দিত না ।

অষ্টম শ্রেণির থেকে নবম শ্রেণীতে পাস করেই উঠলাম কিন্তু মন মত ফলাফল করতে পারিনি। এরপর এল কোন বিভাগ নেব সেটা নিয়ে চিন্তা। আমার ডাক্তার কিং ইঞ্জিনিয়ার হবার স্বপ্ন ছিল না। কারণ অবশ্যই আছে। সেটা হল আমার ভাঙ্গা হাত। এই প্রতিবন্ধীত্ব নিয়ে ডাক্তার হয়ে সার্জন হতে পারব না। এমনকি আমি কোন কিছু মার্জিনও করতে পারিনা তাই বিজ্ঞান বিভাগ নেয়া সম্ভব না। আছে কমার্স আর আর্টস। কমার্স নিয়েই সামনে চলা। কমার্স নিল মাত্র কয়জন ছাত্র-ছাত্রী বাকি সব মানবিক আর বিজ্ঞানে গেল।
আমরা কম সংখ্যক ছাত্রছাত্রী থাকার কারনে বেশ মজাও হত। অনেক মজার কিছু ঘটে গেছে।

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০২১ সকাল ৯:০৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×