somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্কুল_ডায়েরি_৩

০৪ ঠা জুন, ২০২১ সকাল ৯:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


স্বিদ্ধান্ত হল স্কুলের নারিকেল গাছ থেকে নারিকেল চুরি করব এবং সেগুলা খাব। কিন্তু ঝামেলা হল আমাদের দারওয়ান আর নাইট গার্ড বেলাল ভাইকে ফাকি দেয়া মুশকিল। তবে আশার আলো যে বেলাল ভাই প্রতি তিন-চারদিন পর পর রাতের বেলা থাকে না। মান্নে বাসায় থাকে আরকি। আর এই রাতকেই বাছাই করে আমাদের পরিকল্পনা সাজানো হল। আমি ছিলাম বানর প্রকৃতির, ছোট বেলা থেকেই গাছ বাওয়া অভ্যাস। সুতরাং আমি গাছে উঠবো আর বাকিরা ডাব, নারিকেল সংগ্রহ করার দায়িত্বে এবং পাহারার কাজ দেখবে। আর অফিসের সামনের গাছ সহ আমরা সারা দিন ঘুরে ঘুরে কোন গাছে কয়টা পাকা নারকেল আর কোন গাছে বেশি ডাব আছে এগুলো নির্ধারন করলাম। লাটের গুরু যেহেতু আমি। তাই আমিই ঠিক করলাম যে মই কোঁথায় থাকে, মোসাদ্দেক স্যার কখন আমাদের রাতের ব্যাচ ছুটি দিয়ে বাসায় ফিরে এবং কতটা সময় নেব এই মহাচুরির কাজ সাড়তে।
নির্ধারিত তারিখে আমরা পড়লাম একটু মুছিবতে। দিলিপ কুমার স্যার হোস্টেল এ ঘুমাবেন। কিন্তু স্যার একবার ঘুমালে ভোরের আগে আর বের হয়না আর স্যার যদি ধরেও ফেলে ওনাকে ম্যানাজ করা খুব কষ্ঠ হবে না । স্যার আমাদের কে একটু বকা দেবে কিন্তু মাইর দেবে না এটা নিশ্চিত হয়েই কাজে নেমে পড়লাম। আমি ট্রাউজার পরিধান করে গাছে উঠতে শুরু করলাম। শালার যেই না অর্ধেক গাছ উঠেছি ট্রাউজার গেল ফাটাস করে ফেটে। থামবার মত বানর আমি নই। ওদের বললাম উপর দিকে যেন লাইট না মারে নইলে আমার মূলধন যাবে! গাছে উঠে নারিকেল টপাটপ ফেলছি। ওরা সংগ্র করবে কি এর আগেই ব্যাংক থেকে একজন এসে দেখে নারিকেল দুইটা নিচে পড়া। গাছে লাইট মারার আগেই নিজেকে গাছে উপরে আড়াল করলাম। নইলে বেটায় আমার এই অবস্থা দেখে নিশ্চিত ভয় পেত! উনি কাউকে না পেয়ে নারকেল দুইটা নিয়ে চলে গেল। আমাদের কাজ শেষ করলাম, গুনে গুনে ৪ টা গাছের নারকেল আর ৩০-৪০টা ডাব পেরে। স্যার যে বস্তায় বই ভরে নিয়ে গেছিলো সেই বস্তায় আমরা নারিকেল ভরে নিয়ে গেলাম হোস্টেলে।

আনার পর খাব কি করে সেটা কিন্তু কোন প্লান ছিল না তখন। মনে হয় রোজার মাস ছিল তাই দিনের বেলাও খাওয়া সম্ভব না। তো রাতেই খেতে হবে। এদিকে হোস্টেলের পাশের রুমে বটি আছে কিন্তু ওরা জানলে সর্বনাশ।বুদ্ধি বের করল আল আমিন আর কাওছার। ডাব স্টিলের স্কেল দিয়ে কেটে পান করা হল। কিন্তু নারকেল কি করে খাব সেটার একটা গতি করা দরকার। স্টিলের স্কেল দিয়েই আশ ছাড়ানোর পর নারকেল ভাঙ্গা বেশ সহজ ফ্লোরে আছাড় মারলেই হয়। কিন্তু পাশের রুমেই যেহেতু দিলিপ কুমার স্যার ঘুমাচ্ছেন সেই সাথে অন্যপাশের রুমে খাটাস রানা আর সোহেল ঘুমাচ্ছে এরা জানলে দিনের বেলা বাকীগুলাও যাবে। ঘুম ভাঙলে জেগে আছি এর জন্যই বেশি বকাঝকা করবেন দিলিপ স্যার । আমাদের নিয়ম রাত ১২ টার মধ্যে ঘুমাতে হবে ফজরের সময় মোসাদ্দেক স্যার ডেকে নামাজ পড়িয়ে পড়াতে বসাবেন। এখন বাজে আনুমানিক দুইটা।

শেষমেশ বুদ্ধি হল আমি আজান দেব, মানে যেই আল্লাহু আকবার বলব ওমনে বাঁ ওই আজানের তালে তালে নারকেল ফ্লোরে আছাড় দিয়ে ফাটাবে। একটা এরকম করে ফাটিয়ে খাইছি আরেকটা প্রসেস শেষ। যেইনা আজান দিচ্ছি স্যার ধমক দিয়া বলে নারকেল ভাঙ্গবি ভাঙ আজান দেশ কেন? কে কার আগে লাইট বন্ধ করে, নারকেল- ডাব লুকায়, সে এক হুলুস্থল অবস্থা। নারকেল ডাব লুকিয়ে ৫ মিনিটের মধ্যে সব নীরব।

সবার মনে এক ভয় সকালে যদি সহকারী প্রধান শিক্ষক জান, তো প্রতিশোধ আমাদের উপরই নিবে। সকালের যুদ্ধের ময়দানে পেঁদানি খাওয়ার মনোবাসনা নিয়ে চুপাচাপ শুয়ে ছিলাম সবাই। কিন্তু সকালে স্যার উঠে আমাদের পড়তে বসালেন যেন গতকাল রাতে কিছু হয়নি। বিকাল এ খালি এসে বললেন আমারে একটা নারকেল দিস! উনি যে একজন মজার স্যার ছিলেন এই একটা কথায় তা বুঝা যায়।

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০২১ সকাল ৯:৩১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×