somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মার সিলেট যাওয়া আর আমার বাবা-বাবা লাগা

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ৮:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার মা আগামী বৃহস্পতিবার সিলেট যাচ্ছেন , এর আগে কোনোদিন যাননি। উত্তেজনা উল্লেখ করা বাহুল্য।

মা মাজারে যাচ্ছেন। আমি বাংলাদেশ তীব্র-অত্যাচার বিশ্ববিদ্যালয় ( Bangladesh University of Extreme Torture , আমার বন্ধু সৌরভের দেয়া BUET এর এলাবোরেশন B-) ) এ চান্স পাবার পর মানত করেছিলেন , মানত পূরণ করতে যাচ্ছেন। বাঁশডলা খাইতে খাইতে অবস্থা কাহিল , আর মা যাচ্ছেন শোকরানা আদায় করতে , হায় খোদা। খোদা যদি মার উপর Impressed হয়ে আমার বিদ্যার্জন (!!) কয়েক গুন বাড়িয়ে দেন , তাহলে আর দেখতে হবে না :| :(( /:)

আমি কোথাও যাবার আগে প্রথম ভেটোটা মার কাছ থেকে আসে ( দ্বিতীয়টা বাবা দেয় )। মার ধারনা আমি কোথাও গেলে সবার আগে পানিতে নামব ( এমনিতেও বুয়েটের ছেলেরা নাকি পানিতে নামলেই মরে /:) )। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা শেষ হবার পরে আমি সাঁতার শিখতে চেয়েছিলাম কিন্তু ওই সময়ই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সুইমিং পুলে এক ছেলে সাঁতার শিখতে গিয়ে ডুবে মারা যায় শুনে মা আর কোনো অবস্থাতেই যেতে দিলেন না । বললেন "বাবা তুই মরলে চোখের সামনে মর , দূরে গিয়া মরা লাগবে না ... ই: ই: ই: :(( " ( মা কাঁদছেন :) )।

এবার একটু অপ্রাসঙ্গিক ব্যাপার নিয়ে বলি ..........

আমি যে বাবা-মায়ের কি ধরনের আদরের তা হয়ত অনেকে অনুমান করতে পারছেন। একটা কথা বলি , আমার মনে হয় আসলে অনুমান ও করতে পারছেন না :P। বাবারটা তো আগেই বলেছি , এবার মায়েরটা বলি। আমি এখন অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়া বুড়া দামড়া , এখন ও মায়ের হাতে ভাত খাই। শখ করে মাঝেমাঝে না , সারা বছর B-)। নিজের হাতে না খেতে খেতে এমন অবস্থা হয়েছে এখন ভাত মাখাতে গেলে অর্ধেক ভাত প্লেটের নীচে পরে যায় , হাতের তালু পর্যন্ত মেখে যায় , লবনের অনুমান ঠিকমতো দিতে পারিনা। একবার পহেলা বৈশাখে খাবার মুখে দিয়ে থু দিয়ে ফেলে দিয়েছিলাম , ফেলে দেবার পরে মনে পরল "আরে আমি তো পান্তাভাতে লবনই দেই নাই"।

এবার প্রসঙ্গে ফিরে আসি ..........

সিলেটে যাওয়া নিয়ে মার উৎকন্ঠার শেষ নেই। বাবা এমনিতেই মাকে ছাড়া থাকতে পারেন না , তার উপর আবার পুরো দু-দুটো দিন মা দূরে থাকবে , বেচারা পুরো মিইয়ে গেছেন। মা শুধু বাবাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলছেন "বুঝলা ইমনাব্বা , ক্যামেরা নিয়া যাব। মাজারে আল্লা-বিল্লা কইরা ঘুরতে বাইর হব আর কুট্টুস্ কুট্টুস্ কইরা ছবি তুলব , হি: হি: হি: :) :D B-)" তখন বাবার মুখের অবস্থা দেখার মতো হয়।

তবে মার যাওয়া নিয়ে আমি একধরনের টেনশন বোধ করছি। আমার কোথাও যাওয়া নিয়ে মার করা অহেতুক দু:চিন্তা গুলো এখন আর অহেতুক মনে হচ্ছে না। এতদূরে যাবে , রাস্তায় কি না কি হয় তা নিয়ে চিন্তা ও করতে পারছি না , এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। যারা আমার প্রথম পোস্টটা পড়েছিলেন তারা তারা জানেন যে আমি একটি বাবুকে সবসময় কল্পনা করি। আজ মনে হচ্ছে , আমার মেয়ে আমার সাথেই আছে , আমার মা হয়ে। মা আমাকে বারবার যে কারনে বাধা দিতেন সেই কারনে মাকে ও বাধা দিতে ইচ্ছে করছে। না আমাকে ২ দিন নিজের হাতে খেতে হবে তার জন্য না , অন্য কোনো কারনে আমার বুকের মানিকটাকে দূরে যেতে দেখতে ইচ্ছে করছে না।

আপনারা দোয়া করবেন যেন মা সুস্থ অবস্থায় কোনো বিপদ ছাড়াই ফিরে আসতে পারেন। ভ্রমন সংক্রান্ত কোনো টিপস থাকলে জানাতে কার্পন্য করবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:৫৮
৭০টি মন্তব্য ৬৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×