somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি সত্যি ঘটনা অবলম্বনে..................(১৮ বয়সের নিচে প্রবেশ নিষেধ)....২য় পর্ব

২৭ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১ম পর্ব

দুই
হটাত করে বাস্তবে ফিরে এলাম। এতক্ষণ ধরে আগের সব কথা মনে করছিলাম, যাইহোক আমি আর রেহা দুজনে মিলে পাশাপাশি লেক ধরে হাঁটছি, হটাত করে আমার ফ্রেশ রুমে যাবার দরকার পড়ল। কিন্তু লজ্জায় বলতে পারছিলাম না, আর এর আগে আমি কখন ধানমণ্ডি লেক আসিনি, যদিও সারাজীবন ঢাকাতে বড় হইছি। যাইহোক বাধ্য হয়ে রেহাকে বললাম। ও বলল একটা আছে, কিন্তু অনেক দূরে। রেহা আমার তুলনাই বেশ খাটো, আর তাই ও একটা বড় হিল পরে এসেছিল, আর তাই খুব জোরে হাঁটতে পারছিল না, কিন্তু চেষ্টা করছিল। যাইহোক ১৫ মিনিট পরে একটা ফ্রেশ রুম পেলাম। আমি অফিস যাব, তাই ভাল করে হাত মুখ ধুয়ে নিলাম। ফেরার সময় মনে পড়ল রেহার পায়ে সমস্যার কথা। হিল জুতো পরাতে ওর পায়ে ফস্কা পরে গিয়াছিল। আমি অনেক কষ্ট করে দুহাত দিয়ে ওর জন্য পানি নিয়ে আসলাম। তারপর ওর পায়ে লাগিয়ে দিলাম। এতে রেহা খুব অবাক হল, কারন ও আশাই করেনি, এতগুলো লোকের সামনে ওর পায়ের চিকিৎসা করব। কিন্তু আমার মাথায় কাজ করছিল, রেহার কষ্টটা, কে কি মনে করল, তাতে আমার কিছু এসে যায় না। বন্ধু হয়ে যদি কিছু করতে না পারি, তাহলে আর বন্ধু হয়ে লাভ কি। এরপর অফিস এ চলে গেলাম। এর দুদিন পর প্রথম রোজা। কিন্তু আমার শরীর দিন দিন খারাপ হচ্ছে। পরেরদিন ডাক্তার এর কাছে গেলাম। ডাক্তার আমাকে কিছু টেস্ট করতে দিল। আমি কোনরকমে প্রথম রোজা রাখলাম। ২য় রোজা রাখার কিছুক্ষণের মধ্যে ভাঙতে বাধ্য হলাম। ডাক্তারের টেস্ট রিপোর্ট আসলো। আমার জন্ডিস ধরা পড়ল। মোটামুটি ভালভাবে ধরছে। কি আর করব, আর কোন রোজা রাখার সুযোগ নাই। অফিস থেকে ছুটি নিলাম। ২ সপ্তাহ অফিস গেলাম না। এর মধ্যে ২২ অগাস্ট মনিকার সাথে কথা হল। কথা শুনে যা বুঝলাম, মনিকা আমাকে চরম ঘৃণা করে, ও পুরো ধরে নিয়েছে আমি রেহার প্রতি টার্ন করছি। আসলে মনিকার একটা বড় সমস্যা ছিল, মনিকার তুলনাই রেহা অনেক বেশি সুন্দর, আর তাই মনিকার মনে একটা বড় ভয় ছিল, আমি টার্ন করতে পারি, কিন্তু মনিকা ভুলে গিয়াছিল আমি দ্বিপ, কোন সিম্পল ছেলে নই, আমার কাছে মনটাই আসল। চেহারা কোন ব্যাপার না, কারন আমি সবসময় বিশ্বাস করতাম, চেহারা দু দিনের, যখন চেহারা নষ্ট হয়ে যাবে, তখন কি হবে। আর তাই আমার কাছে মনটাই আসল ছিল, অথচ মনিকার এই ফালতু সন্দেহ আমাকে পুরো পাগল বানিয়ে ফেলেছিল, এর মধ্যে রেহা খালি জিজ্ঞেস করত আমি এখন অন্যকিছু ভাবছি কিনা, আমি সবসময়ে মনিকাকে পক্ষ নিয়ে কথা বলতাম। যাইহোক মনিকার ফালতু সন্দেহ আমাকে ওর প্রতি বিশ্বাস নষ্ট করে দিতে শুরু করল। আমি চাইতাম, রেহা যেন আমাকে নিয়ে আশা না করে, আর সেই জন্য রেহার মানা করা সত্ত্বেও আমি নেহার এক বান্ধবী মম সাথে কথা বলতে শুরু করি। এতে রেহা অনেক কষ্ট পায়, কিন্তু আমি চাইনি, রেহা পরে কোন কষ্ট পাক, কারন আমার আর মনিকার মাঝে ও ছিল সেতুর মত। আর তাই আমি চাইনি, ও আবার আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখুক। আবার মম কে মনিকার ব্যাপারে সব জানাই, যাতে মম আমাকে নিয়ে আবার কিছু চিন্তা করার সুযোগ না পায়। মম শুনতে চাইত না, কিন্তু আমি জোর করে শুনাতাম। আমি চাইনি কেউ মনে কষ্ট পাক। রেহা কে বলেছিলাম মনিকার স্বপ্ন ছিল আগামী বছর আমার সাথে বাইরে বেরুবে, আর তাই ওইদিন মনিকাকে নিয়ে বাইরে যাব, এতে জানি রেহা অনেক কষ্ট পাইছিল, কিন্তু কি করব, আমি চাইনি আমারমত এতো সিম্পল ছেলেকে নিয়ে কেউ কষ্ট পাক। যাইহোক মনিকা ইচ্ছামত আমাকে যা খুশি বলল, অপমান করল, আমার কোন কথা মনে হয় বিশ্বাস করে নাই। আমিও জোর করে কিছু বিশ্বাস করাতে যাইনি। কারন রেহার ফোনে চার্জ ছিল না, তাই কিছুক্ষণ কথা বলে রেখে দিলাম। পরে রেহাকে ফোন করে কিছু মিথ্যা কথা বললাম। কারন আমি চাইনি, মনিকার কোন ক্ষতি হোক। কেউ যেন কোন কালার ছড়াতে না পারে। আমি জীবনে কারো কোন উপকার করতে না পারি, অন্তত ক্ষতি করার চিন্তা মাথায়েও আসেনা। আর তাই রেহাকে বললাম, আসলে মনিকাকে আমি প্রথমে অফার করেছিলাম, মনিকা না। অথচ আসল সত্যি আমি জানতাম আর আল্লাহ জানত। আমি অফার মেনে নিয়েও বিপদে পরছি, আমার ভারি রাগ হল, যেখানে আমি চাচ্ছি কেউ কষ্ট না পাক, অথচ বারবার উল্টা হচ্ছে। আমি রেহাকে তখন শুধু বন্ধু ভাবতাম। অথচ কত ভুল বুঝাবুঝি।মনিকার সাথে মাত্র একে অপরকে বুঝা শুরু করছি, অথচ এর মধ্যে কত জামেলা। তখন মনে হল সব প্যাঁচ রেহা লাগাইছে, এরমধ্যে রেহা কয়েকবার কল দিল, আমার কাছে মাফ চাইল, এসএমএস পাঠাল। পরেরদিন ঘুম থেকে উঠে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল, কারন গতকালকের ঘটনা। এরমধ্যে রেহা ৪/৫ বার কল দিল, আমি ধরিনি। পরেরদিন আবার কল দিল, ধরে ইচ্ছামত বকলাম রেহাকে। বকার পর আবার খুব খারাপ লাগল রেহার জন্য, কিন্তু কিছু বললাম না। এরপর আর দুদিন কারও কোন খবর নাই। দুদিন পর নেহা আমাকে মিস কল দিল, আমি কলব্যাক করলাম, বলল আপি কথা বলবে আপনার সাথে। এরপর দেখি, রেহা রেগে পুরো আগুন। আমাকে বলল ও সব সবাইকে জানিয়ে দিবে, মনিকার ১২ টা বাজাবে, ও তার কথা কিছু রেকর্ড করল প্রমান হিসেবে। আমার রাগ অনেক আগে পানি হয়ে গিয়াসিল, তার উপর ওর কাহিনী দেখে অনেক হাসি পেল, আমি মজা করা শুরু করলাম। আমার কথা শুনে কিছুক্ষণের ভিতর রেহা হেসে দিল। তখন আমার কাছে মনে হল, মানুষ এতো সুন্দর করে কিভাবে হাসে, যদি তখন রেহাকে নিয়ে চিন্তা করতাম, তাহলে ওই মিষ্টি রাগ মেশানো হাসি আমি রেকর্ড করে রাখতাম। আমাকে বলল ওরা নানাবাড়ি বেড়াতে গেছে। দুদিনের মধ্যে ফিরে আসবে।

১ম পর্ব
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×