বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ডা. জাফরুল্লাহ'র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। '৭১ সালে কয়েকজন মিলে বাংলাদেশ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্থ করেছেন। স্বাধীনতার পরও বিরাট অবদান রেখেছেন। চেয়েছিলেন মৃত্যুর পরও অবদান রাখতে। তাই তো মরণোত্তর দেহদান করতে চেয়েছেন। তার পরিবারও সম্মত ছিল। কিন্তু বাঁধ সাধেন কয়েকজন চিকিৎসক। তারা তাঁর সম্মানার্থে তার দেহে ছুরি-কাচি লাগাবেন না। এটা কি সম্মান না কি অসম্মান?
পৃথিবীর বহু মানুষ মরণোত্তর দেহদান করেছেন। যদ্দুর জানি, ড. আহমদ শরিফও মরণোত্তর দেহদান করেছেন। তার দেহে ছুরি-কাচি চালানোয় অসম্মান হয়েছে?
একটা সময় ছিল টিভি-যক্ষা-কলেরায় লোকজন মারা যেত। এমনও তো শোনা গেছে যক্ষা হলে রক্ষা নেই। কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য যক্ষায় মারা গেছেন। এখনকার যুগে যক্ষা কোনো রোগ?
কলেরায় গ্রামের পর গ্রাম উজার হয়ে যেত। যাকে অনেকেই উলাউঠা রোগ বলে। অথচ কলেরা এখন নিরাময় যোগ্য।
এসব রোগের প্রতিষেধক তৈরি করতে গিয়ে অনেকে প্রাণ হুমকিতে ফেলেছেন। আমরা কি করোনার টিকা আবিষ্কারের ঘটনা জানি না? যারা আবিষ্কার করলেন তাদের দুর্ভোগ দেখি নি? অনেকে নিজের শরীরে টিকা নিয়ে দেখেছেন কার্যকারিতা কেমন? এমন সব দুঃসাহসী কাজ যারা করেন, তাদের তো আমরা মনেও রাখি না। বলি, টাকা দিয়েই তো চিকিৎসা নিই। আমরা ভুলে যাই টাকা খেয়ে মানুষ বাঁচতে পারে না।
মরণোত্তর দেহদানকে ধর্মমতে সমর্থন করা হয় না বোধকরি। এই মরদেহ মাটিতে পঁচলে বা শ্মশানে পোড়ালে আসলে কী লাভ? কোনো কাজে লাগে? স্রষ্টা শাস্তি দিলে তো আত্মাকে দেবেন, শরীরকে দেবেন কি? যারা মরণোত্তর দেহদান করেন, তারা তো মানবকল্যাণে দান করেন, এতে তো স্রষ্টার অখুশি হওয়ার কথা না। তারপরও কেন মরণোত্তর দেহদানকে ভিন্ন চোখে দেখা হয়?
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৯:৪২