দেশপ্রেম মানে নিজের দেশের প্রতি প্রেম; এ প্রেম অনেকটা নিজের মায়ের প্রতি ভালোবাসার মতোই। কবি-সাহিত্যিকরা দেশ বা জন্মভূমিকে স্বর্গের চেয়েও বড় বলে অভিহিত করেছেন। কত জাতি সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য নিজেদের সর্বস্ব বিলিয়ে দিল! আবার কেউ কেউ দেশ পেয়েও গুরুত্ব বোঝে না। যারা বোঝে না তারা কি ফিলিস্তিনের অবস্থা দেখেও কিছু বোঝে না?
ভারত ভেঙে পাকিস্তান হলো। বোধোদয় হলো শুধু ধর্মের ভিত্তিতে দেশ হয় না। ২৩ বৎসরের অবিচার, জেল-জুলুম সহ্য করে একাত্তরের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলো। বাঙালিরা নিজেদের জন্য স্বতন্ত্র আবাসভূমি পেল। যার নাম বাংলাদেশ। পাওয়া-না পাওয়ার হিসেব কষতে কষতে কেটে গেল ৫২ বছর। এখন ৫৩ তে পড়েছে।
আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারিনি। দেশে এখনও সুশাসন নিশ্চিত হয়নি, দুর্নীতি বন্ধ করা যায়নি, বেকারত্ব হ্রাস করা যায়নি, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকানো যায়নি। যাদের তত্ত্বাবধানে দেশটা স্বাধীন হয়েছিল, তারা ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও দেশের মানুষ নিশ্চিন্ত হতে পারছে না। গণতান্ত্রিক কাঠামো তথৈবচ অবস্থায় থাকায় বহির্বিশ্বের সাথেও দেশের গোল বেঁধেছে। এ সুযোগে যারা স্বাধীনতা চায়নি, তারা এবং তাদের বংশধরেরা ডালপালা মেলার সুযোগ পেয়েছে। বলছে, পাকিস্তানই ভালো ছিল। এখন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, দেশকে দুটো গালি দিতে পারলেই দেশপ্রেম।
স্বাধীনতা বিরোধিরা ধর্মকে এমনভাবে ব্যবহার শুরু করেছে, সরকারের অদক্ষতার দরুণ জনগণ বিভ্রান্ত হয়ে বিরোধীদের কাতারে চলে যাচ্ছে। প্রকৃত দেশপ্রেমিক এবং উদারচিন্তার লোকজন পড়েছে মহাবিপদে। ওরা কার হয়ে কথা বলবে? মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দলের হয়েও নেতারা যখন নিদেশে আবাসভূমি গড়ে, অর্থ পাচার করে তখন সাধারণ দেশপ্রেমিক মানুষ কী করতে পারে? নেতাকর্মীরা, আমলারা যখন নিজেদের উদরপূর্তি করে, তখন তাদের দেখে নানা প্রশ্ন উঁকি দেওয়াও তো অস্বাভাবিক কিছু না।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:০৯