সম্প্রতি ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পর আনোয়ারুল আজীম আনার নামে একজন বাংলাদেশি এমপি নিখোঁজ এবং পরবর্তীতে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার মরদেহের হাড়-মাংস আলাদা করে হাপিত্যেশ করে দেওয়া হয়। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী তার নিজেরই বাল্যবন্ধু এবং ব্যবসায়িক অংশীদার। জানা যাচ্ছে, এ হত্যায় নাকি পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একজন এমপি অন্য দেশে গিয়ে হানি ট্রাপে পড়ে এভাবে মারা পড়বেন- পুরো অবিশ্বাস্য ব্যাপার।
এমপির মৃত্যুতে মানুষের সহানুভূতি জাগার কথা, কিন্তু একদমই জাগছে না। বরং লোকে খুশি হয়েছে। কারণ, তিনি চোরাকারবারি ছিলেন। তার নামে মাদকের মামলাও ছিল। তিনি গুম-খুনের সাথেও জড়িত ছিলেন। এরকম একজন ক্রিমিনাল জাতীয় সংসদ পর্যন্ত চলে গেছে ভাবতেই দমবন্ধ লাগে। তবে ব্যাপারটা অস্বাভাবিক না। এদেশে যোদ্ধাপরাধীরাও জাতীয় সংসদে বসে আইন প্রণয়ন করেছে। সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশ। বেনজীর নামে পুলিশের সাবেক আইজিপি বীর বিক্রমে দায়িত্ব পালন করেছেন, আদালত তার সমস্ত সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন। সম্পত্তির পরিমাণ এত বেশি যে, কীভাবে এত সম্পদ হলো এটা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে লোকে মেরে দেয়। বাসার দারোয়ান একসময় মালিক বনে যায়। কী এক মগের মুল্লুকে বাস করছি, ভাবা যায়? আবার এরাই কত ওয়াজ-নসিহত করে। দেশ ভালো না বলে টাকা পাচার করছে এই ক্রিমিনালরাই। দেশে নিয়ম মানে না, কিন্তু দেশের বাইরে গিয়ে ঠিকই সব নিয়ম মানে।
কে কাকে বিশ্বাস করবে? এখানে যেই বড় পদে যায় সেই বড় প্রতারক বনে যায়। বেশিরভাগই সুযোগের অভাবে চরিত্রবান। এমপি আনারের এমন মৃত্যু দেখে আমাদের শিক্ষা হওয়া উচিত পাপ বাপকেও ছাড়ে না। যার জন্য গর্ত খোঁড়া হচ্ছে; একদিন নিজেকেই সে গর্তে পড়া লাগতে পারে।