
বুধবার সন্ধ্যা ৬টা। পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে মানুষের ভিড়। এক ব্যক্তির প্রায় বস্ত্রহীন রক্তাক্ত দেহ ফটকের ভেতর থেকে টেনে বের করছে দুই যুবক। কালো প্যান্ট পরা খালি গায়ের এক তরুণ তার গালে চড় মারছে। কালো গেঞ্জি পরা আরেকজন এসে ওই ব্যক্তির বুকের ওপর লাফাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর আরেকজন এসে একই কাজ করছে। একপর্যায়ে আরেকজন এসে তার মাথায় লাথি মারে।
ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে মিটফোর্ড হাসপাতাল চত্বরে পিটিয়ে ও ইট-পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তার পর মরদেহের ওপর চলে এই বর্বরতা।
সাধারণ মানুষ তো বটেই, হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরাও কেউ এগিয়ে আসেনি। ঘটনার ভয়াবহতায় তারাও হতবিহ্বল। ভিডিওতে হত্যা ও বীভৎসতায় জড়িতদের হাত উঁচিয়ে চিৎকার করে উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে কিছু বলতে শোনা যায়।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, পূর্ব-পরিচয়ের সূত্র ধরে পুরান ঢাকার কয়েকজন যুবক সোহাগকে বুধবার দুপুরে ডেকে নেয়। সন্ধ্যায় তাকে হত্যা করা হয়। সোহাগ পুরোনো তামার তার ও অ্যালুমিনিয়াম শিটসহ ভাঙাড়ি জিনিসের ব্যবসা করতেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, নিহত সোহাগ এবং হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তরা একসময় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সোহাগের ১৪ বছর বয়সী মেয়ে সোহানা ষষ্ঠ শ্রেণিতে এবং ১১ বছর বয়সী ছেলে সোহান চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে।
শুধু সোহাগ হত্যা নয়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। গতকাল চট্টগ্রামে এক গৃহবধূকে হত্যার পর লাশ ১১ টুকরো করা হয়েছে। তার পলাতক স্বামীকে পুলিশ যশোর থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
সম্প্রতি গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে কারখানায় চুরির অপবাদ দিয়ে হৃদয় (১৯) নামের এক শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ১৮ মে রাতে রাজধানীর সেন্ট্রাল রোডে এক যুবককে প্রকাশ্যে কোপানো হয়। ১৬ মে রাজধানীর জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন পাতাম রেস্টুরেন্ট এলাকায় হত্যা করা হয় সামিউর রহমানকে (আলভি) নামে এক ব্যক্তিকে।
সূত্র: পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী খুন, জনসমক্ষে অবর্ণনীয় নৃশংসতা
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



