somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খালেদা জিয়ার মিশন, তার ফাঁকা ভাষণ এবং একটি ভিশন ( ২০৩০)

১৯ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিএনপির কাউন্সিলে দলটির চেয়ারপারসন যে বক্তব্য রেখেছেন তা তার গতানুগতিক বক্তব্য থেকে কিছুটা ভিন্ন মনে হয়েছে। সরকার দলের নানা কর্মকান্ডের সমালোচনার পাশাপাশি তিনি তার দলের ভবিষ্যত্ রূপরেখা কী হবে বলেছেন। ভাষণটা ভাল। অন্তত শুনতে ভাল। কিন্তুটা এগুলো কতটা তার ও দলের নেতাদের মনের কথা সে হিসাব মেলাতে পারছি না।
কারণ ইতিপূর্বে যে বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখেছি, সে বিএনপির মধ্যে যুগোপযুগি ও বাস্তবধর্মী কোন কর্মপন্থা দেখা যায়নি।
বরং মনে হয়েছে খালেদার বক্তব্যটা আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে করা হয়েছে। তৃতীয় কোন পক্ষ বা গোষ্ঠী যে স্ক্রিপ্ট লিখে দিয়েছে তা আমি নিশ্চিত। এবং ক্ষমতায় কখনও যদি তারা যেতে পারে এর দশভাগ অঙ্গীকারও তারা পূরণ করবে না। যেমনটি করেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
স্ক্রিপ্ট রাইটার কিছু কিছু বিষয়ে মনে হলো আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পরিকল্পনার সঙ্গে একধরনের পাল্লা দিয়েছেন। যেমন মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে ঘোষণা, সন্¿াসী ও জঙ্গিবাদ বন্ধে কর্মসূচী।
‘ভিশন ২০৩০’ শিরোনামটা মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগের ভিশন ২০২১ এর এক্সটেন্ট ভার্সন। এর জায়গায় বলা যেত ‘২০৩০ সালে নতুন বাংলাদেশ’। তা হলেও একটা নতুনত্ব থাকত।
তবে প্রধানমন্¿ীর ক্ষমতা হ্রাস, দ্বি কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠনের অভিপ্রায় নতুন মনে হল। এগুলা্ যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে ভাল হবে।
যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াত প্রসঙ্গে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি কী তা খোলামেলা করে স্পষ্ট করলে ভাল হতো। সময় এসেছে নতুন প্রজন্মের কাছে একটা জবাবদিহি করার। আমার মনে হয় দল হিসেবে ্বিএনপি ও আওয়ামী লীগ একই রকম। শুধু এই দুটি ইস্যু দল দুটির মাঝখানে বিরাট ব্যবধান করে দিছে। এই ফারাকের সুযোগ নিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
খালেদা জিয়া তার ভাষণে বলেছেন, দেশের বিশিষ্ট জন, পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবী ও সবার মতামতের ভিত্তিতে তার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। দেশের অগ্রসর চিন্তাবিদ ও বুদ্ধজীবী ও শীর্ষ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
এই জায়গায় আমার সন্দেহ আছে। আমার জানামতে দেশের পেশাজীবী ও বুদ্ধিজীবীদের বেশিরভাগই হয় আওয়ামী মনা না হয় বাম কেন্দ্রিক। আর যারা আছেন তারা কোন রাজনৈতিক দলের কাছে যান না। এই অংশটা কম, কিন্তু তারাই দেশের সত্যিকারের বুদ্ধিজীবী। এদেরকে দু দলই সন্দেহ করে। কারণ তাদের স্পষ্টবাদীতা। অবশ্য বিএনপিরও ‘পেশাজীবী’ ও ‘বুদ্ধিজীবী’ উইং আছে বলে দাবি তাদের। এদের কয়জন বিএনপির আর কয়জন জামায়াতের সে হিসাব খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের আছে কিনা সন্দেহ।
খালেদা জিয়া উদার গণতান্¿িক সমাজ গড়তে সকলের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ করবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেছেন আমরা সকল মত ও পথকে নিয়ে এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চাই যেখানে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য গড়ে উঠবে। বাংলাদেশ হবে একটি রেইনবো।
এইটা উনি কখনই বাস্তবায়ন করবেন না। বা করতে পারবে না। মত প্রকাশের স্বাধীনতা পাব বলে যে সরকারের কাছে সবচেয়ে বেশি আশা করেছিলাম, তারা কী করলো? বরাবরই মিডিয়া আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচীর পক্ষে সমর্থন করে। সমালোচনার দরকার যেখানে সেখানে নিরব থাকে। তাদের সেই নিরবতা ভাঙবে, যদি কখনও বিএনপি ক্ষমতায় যায় তখন। আর তখন বিএনপিও সেই সব গণমাধ্যমে কণ্ঠরোধের চেষ্টা করবে। বিরোধী দলের কথা না হয় বাদই দিলাম।
বেগম জিয়া বলেছেন, সব বাহিনীর স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে দলীয় সব অনাকাঙ্খিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করা হবে। উচ্চ আদালতের নিয়োগের জন্য আইন করবে বিএনপি। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, অখন্ডতা রক্ষায় সমর সম্ভারে সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলা হবে আধুনিক সামরিক বাহিনী।
আমার মতে সশস¿ বাহিনী ও পুলিশের ক্ষমতা আরো বাড়বে ভবিষ্যতে। বিচারপতি নিয়োগে বিএনপি এমন আইন করবে যাতে দলটির মতাদর্শ যারা লালন করবে শুধু তারাই নিয়োগ পেতে পারেন।
খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো তিনি বলেছেন, ‘সন্¿াসী ও জঙ্গি তত্পতার বিরুদ্ধে বিএনপি সব সময় সক্রিয়। জঙ্গিবাদী নাশকতাকে আমরা কঠোরভাবে নিশ্চিহ্ন করেছিলাম। গেপ্তার, বিচার করা হয়েছিল। ভবিষ্যতে সেই কঠোরতা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের ভুখন্ডের মধ্যে সন্¿াসবাদী তত্পরতা বরদাশত করবে না বিএনপি। বাংলাদেশের মাটি থেকে অপর দেশে সন্¿াসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী তত্পরতা মেনে নেয়া হবে না।’
এগুলাও কথার ফুলঝুড়ি ছাড়া আর কিছুই নয়। এদেশে জঙ্গিরা সবচেয়ে অনুকূল পরিবেশ পেয়েছিল ২০০১-০৬ এর সময়। একজন এমপির পৃষ্ঠপোষকতায় রাজশাহীতে জেএমবি ভয়ানক শক্তিশালী হয়েছিল। মানুষ মেরে লাশ ঝুলিয়েও রেখেছিল গাছে। জেএমবির শীর্ষ কয়েকজন নেতাকে ধরে পরে তাদের ফাঁসি দেয়া হয়েছিল। ওই সময় আমরা দেখেছি, তারা জঙ্গিবাদের উত্থান ও পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে অনেক কিছু মিডিয়ার সামনে বলতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই সুযোগ দেয়া হয়নি। চলছে। তাই জঙ্গিবাদ দমনে আসলে বিএনপি কিছু করতে পারবে কিনা সন্দেহ থেকেই যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০২
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×