somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জিপিএ ফাইভ না পাওয়ায় হোক জীবনের সফলতার ভিত্তি।

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ৯:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ থেকে ৭ বছর আগে যেদিন আমার এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দেয়, সেদিন আমার বন্ধুরা সবাই বাসায় জিপিএ ৫ নিয়ে ফিরেছিল। আমি পারি নাই। আমি ৪.৭ নিয়ে ফিরেছিলাম। মাত্র দশমিক তিন নম্বরের জন্য আমি যেন লজ্জায়-অপমানে মাটির সাথে মিশে যাচ্ছিলাম। এই দশমিক তিন নম্বরই যেন আমাকে দেশের ৩য় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করেছিল। বাবা-মা হতাশ ছিলেন, কিন্তু আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ, যে তারা তাদের হতাশা আমাকে বুঝতে দেন নাই। আমাকে বকাঝকা তো দুরের কথা, হাতে টাকা দিয়ে ভাই-বোনকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গিয়ে খেয়ে আসতে বলেছিলেন।

আমি যেদিন এইচএসসির রেজাল্ট পাই সেদিন হিসাব করে বুঝতে পারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০ নম্বরের যেই মূল্যায়ন তার মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে যেই ৮০ নম্বর, সেখানে আমার আছে মাত্র ৭০.২৮। আমার বেশীভাগ বন্ধুরই তখন ৮০। আমি প্রায় ১০ নম্বর পিছিয়ে আছি। শতকরা হিসেবে সেটা মাত্র ৫ শতাংশ। তবুও মনে হলো আমি যেন যোজন যোজন পিছনে আছি। তাই ঠিক করলাম, বন্ধুদের তুলনায় দ্বিগুন পড়তে হবে, দ্বিগুন এফোর্ট দিতে হবে। বন্ধুরা সিনেমা দেখতে যাচ্ছে, আমি যাচ্ছি না। বন্ধুরা ঢাকার বাইরে বেড়াতে যাচ্ছে আমি যাবনা। মাথার পিছনে ঐ ১০ নম্বরের পিছিয়ে থাকা। মনকে বুঝ দেয়া ‘এই ৩টা মাস ভালোমত খাটলে ওদের সাথে সবসময়ই ঘুরতে যাওয়া যাবে। মাত্র তো ৩ টা মাস’।

জীবনে কোনদিন এতো এফোর্ট দিয়ে পড়ি নাই যত ঐ ৩ মাসে পড়েছি। সবই ঐ ১০ নম্বর পিছিয়ে থাকার কল্যাণে। এইচএসসির রেজাল্ট দেয়ার আগে ভাবতেও পারিনি যে আমি ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম ২০০ এর মধ্যে থাকবো। অথচ ১০ নম্বর পিছিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ১১৬ তম হলাম। আর এর সবথেকে বেশী কৃতিত্ব আমি দেই ঐ ১০ নম্বর পিছিয়ে থাকাকে। কচ্ছপ আর খরগোশের সেই গল্পটা মনে আছে? ঐ ১০ নম্বর আমাকে দৌড়ের কচ্ছপ বানিয়ে দিয়েছে। স্লো এন্ড স্টেডি। রেইস তো জিতবই, নাকি?

আজ ৭ বছর পার হয়ে গেছে। ৪.৭ আমার জীবনে এখন শুধুমাত্র একটা সংখ্যা, এর থেকে বেশী কিছু না। আমি বলছি না, জীবনে অনেক বড় কিছু করে ফেলেছি বা স্টিভ জবস হয়ে গিয়েছি। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা বেশ ভালোই রেখেছেন। একটা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায় ভালো একটা চাকরি করছি। পরিবারের দেখাশোনা করতে পারছি। আলহামদুলিল্লাহ

দিনশেষে তোমার জিপিএ ৫ ই হোক আর ৩ ই হোক, সেটা তোমার জীবনটাকে নির্ধারণ করে দিবে না। আজকের পর সেটা তোমার জীবনেও একটা সংখ্যা হয়েই রয়ে যাবে। তোমার আগামীকালটা এখন তোমার হাতে। সেই লড়াইয়ের জন্য শুভকামনা।
তোমাদের সবাইকে অভিনন্দন।

৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×