টি,এস,সি থেকে বাড়ি ফেরার সময় রিকশা খুঁজে পাচ্ছিলামনা । রাত্র সাড়ে ন'টা বেজে গেছে, সব শালা রিকশাওয়ালাই আমরা যেখানে যাব সেগুলো ছাড়া আর সব জায়গায় যেতে রাজী । ডি, ইউ, পি, এস এর পুরান ঘরটার সামনে এসে দেখলাম এক বুড়া দাড়ায়ে আছে । "চাচা, যাইবা" বলেই আমি তাজ্জব হয়ে গেলাম । বুড়োর সারা মুখ ঘর্মাক্ত, ব্যথায় বিকৃত, সে বুকে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে... দেখে স্পষ্ট বুঝা যায় তার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে ।
"কি হইসে তোমার?"
"আমার হাঁপানি । আপনে কই যাইবেন?"
ওখানে দাঁড়িয়েই নীলক্ষেত যাবার ভাড়াটুকু তাকে দিয়ে আমি হাঁটা ধরলাম । সে ঐ শারীরিক অবস্থাতেও আমাকে টেনে নিয়ে যেতে চাইছিল । তাকে আমি বারবার বলে এসেছি মেডিকালে যেতে । তবে আমার ধারণা সে আমি চলে আসবার পরেই আরেকটা যাত্রী জোগাড় করে রিকশা টানা শুরু করেছে । হাতে দশ টাকা ধরিয়ে দিয়ে বেশি কিছু বলবার সাহস আমার হয়নি । তবে আমার পরিবারে হাঁপানি রোগী দেখার অভিজ্ঞতার ফলে আমার ধারণা - আজ-কালকের মধ্যে নেবুলাইজার না নিলে লোকটা বাঁচবেনা ।
আমার প্রশ্ন, উপরওয়ালার কাছে আমার দোষটা কি? আরও স্পেসিফিক্যালি বললে, আমাদের প্রজন্মের দোষটা কি? এইসব কেন আমাদের দেখতে হবে ? ৩৯ বছর ধরে দেশের মাথারা কি করসে? ঐ লোকটা কি কারো ভোটার না? কোন নেতার কি তাকে দিয়ে কোন পারপাস সার্ভ হবার নাই? তাদের কারো বাসার সামনে গিয়া সে হাঁপাইতে পারলনা? কুলাঙ্গার ফকির স্টুডেন্টের সামনেই আপনার তাকে পাঠাইতে হইল? এক,
আর দুই, মানুষ এতদিন বাঁচে কেন? জগতের অধিকাংশ প্রাণীইতো একটু বয়স্ক হলেই নানাভাবে মারা যায় । বৃদ্ধ মানুষদের এতদিন এভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে বাঁচায় রাখার মানে কি?