''আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে
খেলা করে;''
জীবনানন্দ দাশের অন্যতম আলোচিত কবিতা ও অনেকেরই প্রিয় কবিতা ''আট বছর আগে''। কবিতাটি পড়ে এক বিশাল ধাক্কা খেলাম মাথায়।কিছু লাইন বার বার মাথা এলোমেলো করে দিচ্ছে। কবিতাটি যত পড়ি ততই অবাক হই, বিস্মিত হই;বারবারই মনে হয় এই বুঝি পঞ্চমীর রহস্যময় চাদ ডুবল।গাঢ় অন্ধকারে একজন অভিমানী মানুষ দড়ি হাতে নিয়ে ঘরের পিছনে অশুত্থ গাছের দিকে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে।পেছনে ফেলে সমস্ত জীবন,প্রেম,আশা। আমি মনে করি জীবনানন্দ যদি সুরিয়েলিস্ট হন তবে এই কবিতা নিশ্চয় তার সবচেয়ে গাঢ় সুয়েরালিজম।
"শোনা গেল লাশকাটা ঘরে
নিয়ে গেছে তারে;
কাল রাতে - ফাল্গুনের রাতের আঁধারে
যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ
মরিবার হল তার সাধ ।
বধু শূয়েছিল পাশ, শিশুটিও ছিঃল; প্রেম ছিল, আশা ছিল - জোছনায় - তবু সে দেখিল
কোন ভূত? ঘুম কেন ভেংগে গেল তার?''
এবার আমার কিছু প্রশ্ন।কবি বলছেন ''বধূ শুয়েছিল পাশে,শিশুটিও ছিল//প্রেম ছিল,আশা ছিল-জোছনায়''-------------এতকিছু থাকার পর -তবুও কেন একটা মানুষের মরার সাধ হবে?। অন্য একজায়গায় আবার জীবনানন্দ ---''যে জীবন ফড়িঙের দোয়েলের- মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা''-----এর মানে কি?সেই জীবনইবা কি জীবন আর কেমন জীবন? কবিতার শেষের লাইনগুলো দেখুন আরো বিস্ময়কর।
"জানি-তবু জানি
নারীর হৃদয়-প্রেম -শিশু -গৃহ-নয় সবখানি;
অর্থ নয়,কীর্তি নয়,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
ক্লান্ত ক্লান্ত করে;
লাশকাটা ঘরে
সেই ক্লান্তি নেই,
তাই
লাশ কাটাঘরে
চিৎ হয়ে শূয়ে আছে টেবিলের পরে।"
কি সেই বিপন্ন বিস্ময় যা একটা মানুষের সবকিছু থাকার পরও তাকে ক্লান্ত করে?এতই ক্লান্ত করে সবকিছু ছেড়ে চলে যেতে মন চায়।
আমি কবিতা ভালো বুঝি না,সামুতে অনেক বল্গার আছেন যারা কবিতা ভালবাসেন,কবিতার মাধ্যমে সুন্দরের পূজা করেন।তাদের কাছে উপরের প্রশ্নগুলো রেখে যাচ্ছি।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১১ রাত ২:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



