somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাজা পায়নি কেউ, বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ বছরে ৫৫ শিক্ষাথী হত

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাজা পায়নি কেউ বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ বছরে ৫৫ শিক্ষার্থী হত
আপেল মাহমুদ
সাপ্তাহিক ২০০০ এ শনিবার ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১ প্রকাশিত


বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২০ বছরে মারা গেছে ৫৫ শিক্ষার্থী। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে হত্যার শিকার হন ১১ জন, যাদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক, কর্মচারী ও বহিরাগত। দুটি ক্যাম্পাসে অধিকাংশ মৃত্যুর পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক কারণ। কিন্তু আজ পর্যন্ত এসব মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটন কিংবা দোষীদের শাস্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি।

বুয়েটে ২০ বছরে ১৯ ছাত্রের মৃত্যু

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২০ বছরে মারা গেছেন ১৯ ছাত্র। এদের মধ্যে ১২ জন ড. এমএ রশীদ হলের আবাসিক ছাত্র। তবে এদের মধ্যে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ৪ ছাত্রের। ছাত্ররা কী কারণে মারা গেছেন তার সুস্পষ্ট কোনো তথ্যও বুয়েটে নেই। বুয়েট ছাত্রদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর থানায় মামলা হলেও অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। আবার কিছু অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হলেও তাদের শাস্তি প্রদান করা যায়নি।
সর্বশেষ অস্বাভাবিক মৃত্যুর শিকার হন ২০০৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রশীদ হলের আদিব আল হাসান। স্টুডেন্ট নং-০৪০১০১১। আদিব ছিলেন স্থাপত্য বিভাগের ছাত্র। ২০০৪ সালে মারা যান রশীদ হলের ৩০৭ নং কক্ষের মোঃ আবু ওবায়দুল হক। কেমিকৌশল বিভাগের ৯৬০২০৬৩ নম্বরধারী ছাত্র ছিলেন তিনি। ২০০২ সালে ৮ জুন বুয়েট ক্যাম্পাসে টেন্ডারকে কেন্দ্র করে মারা যান মেধাবী ছাত্রী সাবেকুন নাহার সনি। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দুগ্রুপের বন্দুকযুদ্ধের মাঝে পড়ে নিহত হন সনি। বিশাল অঙ্কের টেন্ডারকে কেন্দ্র করে বুয়েটের সাবেক ছাত্র মোকাম্মেল হায়াত খান মুকিবের নেতৃত্বে একটি গ্রুপের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের টগর গ্রুপের সঙ্গে ক্যাফেটেরিয়া, শহীদ মিনার, আহসানউল্লাহ হলের সামনে গুলিবর্ষণ ও সংঘর্ষ হয়। আর তাতেই নিহত হন কেমিকৌশল বিভাগের লেভেল-২, টার্ম-২-এর ছাত্রী সনি। এ সময় বুয়েট ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভের কারণে বুয়েট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে সনি হত্যাকা- মামলায় মুকিব ও টগরসহ তিনজনের ফাঁসি এবং অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে হত্যাকারীদের শাস্তি মওকুফ করে দেওয়া হয়। আর এ ব্যাপারে বুয়েট কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করে। ১৯৯৭ সালে মারা যান তড়িৎকৌশল বিভাগের আবু ওবায়দা মোঃ জাফর সাদিক সুবর্ণ। তার স্টুডেন্ট নম্বর ছিল ৯২০৬১১৩ এবং তিনি ড. এমএ রশীদ হলের ১০৭ নং কক্ষের ছাত্র ছিলেন।

বুয়েটে অস্বাভাবিক মৃত্যুর পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনায়ও বেশ কয়েক ছাত্র প্রাণ হারান। সর্বশেষ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন ২৭ মে ২০১০ সালে খন্দকার খানজাহান সম্রাট। যন্ত্রকৌশল বিভাগের এই ছাত্র ইডেন কলেজের সামনের রাস্তায় বাসচাপায় মারা যান। সম্রাটের মৃত্যুর পর ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও দোষীদের এখনো শাস্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি। সম্রাট ছিলেন আহসানউল্লাহ হলের ০৯১০০০৪ স্টুডেন্ট নম্বরের প্রথম বর্ষের ছাত্র। ২০০৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান মোহাম্মদ কামরুজ্জামান শুভ। রশীদ হলের ৩০০৬ নম্বর রুমের আবাসিক ছাত্র শুভ ছিলেন স্থাপত্য বিভাগের ছাত্র।
আরো বিভিন্ন কারণে বুয়েটের কিছু ছাত্র মারা যান। ১৯৯০ সালে নৌকাডুবিতে মারা যান ৮৫ নম্বর ব্যাচের কাজী মোঃ আরিফুল ইসলাম ও মোঃ আলী মুর্তজা শোভন। ২০০৪ সালে সমুদ্র দুর্ঘটনায় মারা যান যন্ত্রকৌশল বিভাগের সামিউল হাসান খান।
২০০৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৩ বছর বুয়েটে মারা যান ৬ ছাত্র। তবে তারা কে কীভাবে মারা গেছেন সে ব্যাপারে কিছুই জানাতে পারেনি বুয়েট কর্তৃপক্ষ। ২০০৮ সালের ১৪ নভেম্বর মারা যান পুরকৌশল বিভাগের আহমদ আল ফয়সাল। তার স্টুডেন্ট নম্বর ছিল ০৩০৪০২৫ এবং তিনি ছিলেন রশীদ হলের ছাত্র। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১০ সালে মারা যান যন্ত্রকৌশল বিভাগের অনুপম ভট্টাচার্য। তার স্টুডেন্ট নম্বর ছিল ৫০৯৩ এবং তিনি ছিলেন আহসানউল্লাহ হলের আবাসিক ছাত্র।
৮ নভেম্বর ২০১০ সালে শেরেবাংলা হলের দুজন ছাত্র মারা যান। তারা হলেন তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশল বিভাগের জুলফিকার আলী আহমদ আপেল এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল বিভাগের শফিউর রহমান শাহান। বুয়েট ছাত্র কল্যাণ থেকে জানানো হয়, আরো দুজন ছাত্র সুন্দরবন ভ্রমণে গিয়ে মারা যান। তারা ছিলেন সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক ছাত্র।
কারা কীভাবে মারা গেছেন তা জানা নেই
অধ্যাপক ড. এসএম নজরুল ইসলাম
ভিসি, বুয়েট


গত ২০ বছরে কতজন ছাত্র মারা গেছে সে ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। কারা কীভাবে মারা গেছে সেটাও আমার জানা নেই। ছাত্র হত্যার সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদের শাস্তি প্রদান করা হয়েছে কি না কিংবা সেসব হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন হয়েছে কি না তা আমাদের রেকর্ড না দেখে কিছুই বলতে পারছি না। তবে বর্তমানে ভ্রমণে গিয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এটি রোধে আমরা বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছি; আমরা এ ব্যাপারে কাউন্সিলিং করছি। দুর্ঘটনা সম্পর্কে সচেতন করছি, যাতে তারা কোনো রিস্কে না যায়। প্রতিটি হলের প্রভোস্টদের নিয়ে কমিটি করতে বলেছি, যাতে তারা ছাত্রদের এ ব্যাপারে সচেতন করে তোলে।

ঢাবিতে ২০ বছরে ৩৬ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

গত ২০ বছরে বিভিন্ন কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মারা যান ৩৬ শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়া মারা যান আরো ১১ জন। এদের মধ্যে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী ও বহিরাগত। ৩৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে ছয়জন আত্মহত্যা করলেও বাকিদের বেশিরভাগই রাজনৈতিক কারণে হত্যার শিকার হন। কিন্তু গত ২০ বছরে একটি হত্যারও বিচার হয়নি। এমনকি কোন হত্যার বিচার প্রক্রিয়া কী অবস্থায় আছে সে ব্যাপারে কিছুই জানে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
১৯৯০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার মিছিলে ছাত্রলীগের হামলার জের হিসাবে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ ২৫ ফেব্রুয়ারি মধুর ক্যান্টিনে একত্রিত হয়। এ সময় একদল ছাত্র ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে স্লোগান দিলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এক সময় ছাত্রদল, ছাত্রলীগ ও পুলিশের মধ্যে গোলাগুলিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ভবনের পাশে জহুরুল হক হলের ছাত্রলীগের ভিপি শহীদুল ইসলাম চুন্নু মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
২০ জুন, ১৯৯১ সিট দখলসহ নিজেদের মধ্যে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের সূত্র ধরে আওয়ামী লীগ সমর্থক ছাত্রলীগ এবং জাসদ ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় মধুর ক্যান্টিন থেকে সব হলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। জাসদ ছাত্রলীগের কর্মীরা মুহসীন হলে এবং আওয়ামী লীগ সমর্থক ছাত্রলীগ জহুরুল হক হল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাবে একে অপরকে মোকাবেলা করে। সংঘর্ষ চলাকালে আইইআর ভবনের পশ্চিম গেটের সামনে জাসদ ছাত্রলীগের নেতা মাহবুবুর রহমান গুলিবিদ্ধ হন। রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মাহবুব ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের এমএ শেষ পর্ব এবং মুহসীন হলের ৩২৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।
২৭ অক্টোবর, ১৯৯১ ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন সন্ত্রাসী ঘটনার জের ধরে ছাত্রদল জিএস ডাকসুতে বৈঠক শেষে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি লেকচার থিয়েটারে পৌঁছলে সূর্য সেন হল থেকে আসা ছাত্রলীগের আরো একটি মিছিলের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। এ সময় ভাষা ইনস্টিটিউটের সামনে ছাত্রদলকর্মী মির্জা গালিব গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। গালিবকে নেয়ার জন্য এগিয়ে গেলে ছাত্রদলকর্মী লিটন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ দুজনের মৃত্যুর পর ছাত্রদল ছাত্রলীগের ওপর ব্যাপকভাবে গুলিবর্ষণ করলে রেজিস্ট্রারের বাসভবনের সামনে ছাত্রলীগ কর্মী মিজানুর রহমান ও এক টোকাই গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রথমে আহত ও পরে নিহত হন।
টিএসসি সড়ক দ্বীপে গুলিবিদ্ধ হয়ে ১৯৯২ সালের ১৩ মার্চ মারা যান মঈন হোসেন রাজু। মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের রাজু ছিলেন শহীদুল্লাহ হলের ১২০ নম্বর কক্ষের ছাত্র। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে কোন্দলে ১৯৯২ সালে ৯ জানুয়ারি মারা যান মনিরুজ্জামান বাদল। একই বছরে ৪ সেপ্টেম্বরে ছাত্রদলের অন্তর্দ্বন্দ্বেও দুজন ছাত্রের মৃত্যু ঘটে। তারা হলেন আশরাফুল আজম মামুন ও খন্দকার মাহমুদ হোসেন। ১৯৯৩ সালের ১ নভেম্বর ঠিকাদারের কাছ থেকে চাঁদা আদায় ও ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে মারা যান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নাট্য সম্পাদক জিন্নাহ। একই বছরের ২২ নভেম্বর হত্যার শিকার হন ছাত্রলীগের মন্টু গ্রুপের নেতা অলোক কান্তি। টেন্ডারের চাঁদা নিয়ে নিজেদের মধ্যে কোন্দলের শিকার হয়ে গুলিবিদ্ধ হন। তিনি ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ’৯৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর পুলিশের টিয়ারশেলের আঘাতে মারা যান তথ্য ও গ্রন্থাগার বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র কামরুল ইসলাম। তিনি ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপের সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন এবং এ সময় বুকে টিয়ারশেল আঘাত হানলে তিনি মারা যান। একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর মারা যান ডেমোগ্রাফি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র সরোয়ার হোসেন মিঠু। ছাত্রদলের দুটি গ্রুপের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে গুলিতে তার মৃত্যু হয়। ১৯৯৬ সালের ২২ সেপ্টেম্বর স্যার সলিমুল্লাহ হল শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র জাকিরকে জগন্নাথ হলের গোবিন্দচন্দ্র দেব ভবনের ৭১ নম্বর কক্ষে গুলি করে হত্যা করা হয়। ১৯৯৭ সালের ১৩ মার্চ ছাত্রদলের প্রভাবশালী নেতা কামরুজ্জামান রতন নিয়ন্ত্রিত ইলিয়াস গ্রুপ ও বরিশাল টিটো গ্রুপের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে মুজিব হলের ৩০৫ নং কক্ষে গুলিতে মারা যান আরিফ হোসেন তাজ। তিনি ছিলেন অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল সূর্য সেন হল দখলকে কেন্দ্র করে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সাংবাদিকতা বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র পার্থ প্রতিম আচার্য।
২০০১ সালের ২৯ মার্চ ৫৬ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই ও টাকা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে জহুরুল হক হলের পুকুরের পাশে গুলিতে নিহত হন খায়রুল আলম লিটন। লিটন কুত্তা লিটন নামে পরিচিত ছিলেন। একই বছরের ১৭ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান জিয়াউর রহমান হলের ছাত্রলীগ নেতা ফিরোজ আহমেদ। ফিরোজ ছিলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র এবং থাকতেন জিয়া হলের ৪২০ নম্বর কক্ষে। গত বছর ৩ ফেব্রুয়ারি নিহত হন এফ রহমান হলের ছাত্র আবু বক্কর সিদ্দিক। দলীয় কোন্দলে মারা যাওয়া বক্কর ছিলেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র।
সড়ক দুর্ঘটনা কিংবা পুকুরে ডুবে আরো কিছু ছাত্রের মৃত্যু হয়। ১৯৯৩ সালে ৩১ আগস্ট ট্রেনের ধাক্কায় নাম না জানা এক ছাত্র নিহত হন। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের ক্লাস বন্ধ ছিল। ১৯৯৪ সালের ২৫ অক্টোবর গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র মিজান মারা যান। তিনি ছিলেন ফজলুল হক হলের ছাত্র এবং তার মৃত্যু ঘটে পুকুরে ডুবে। শাহবাগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় মনোবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী হ্যাপী। ২৮ মে ২০০৫ সালে মারা যাওয়া হ্যাপী ছিলেন রোকেয়া হলের ছাত্রী। একই বছরের ২১ ডিসেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান ইসলামের ইতিহাস বিভাগের কাজল। সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে গিয়ে পানিতে তলিয়ে যান হিসাববিজ্ঞান বিভাগের আশিকুল আলম ও সালাউদ্দিন কাদের সিদ্দিকী।
২০০৬ সালের ৮ মার্চ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মোঃ সাজ্জাদ হোসেন। আম পাড়তে গিয়ে ক্যাম্পাসে নিহত হন সাংস্কৃতিক ও পালি বিভাগের প্রথমবর্ষের ছাত্র আলমগীর হোসেন। একই বছরে আক্তার হোসেন নামে বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের এক ছাত্র ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান। শাহবাগে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ২০০৬ সালে মারা যান মোবারক হোসেন। সর্বশেষ গত বছর ২৬ অক্টোবর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান চতুর্থ বর্ষের ছাত্র বিল্লাল হোসেন মোল্লা।
শুধু দলীয় কোন্দল কিংবা দুর্ঘটনায় নয়, আত্মহত্যা করেছে ছয় শিক্ষার্থী। সূর্য সেন হলের ছাত্র হুমায়ূন কবির হলের ছাদ থেকে পড়ে আত্মহত্যা করেন ২০০৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। একই বছরের ২০ অক্টোবর প্রেমঘটিত কারণে কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেন রোকেয়া হলের ছাত্রী শিল্পী রানী সরকার। ২০০৬ সালের ২৮ জুলাইয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন রোকেয়া হলের সাজিদা আক্তার। তিনি ছিলেন ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।
আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জোহরা খান ২৫ জুন ২০০৭ সালে গলায় রশি দিয়ে রোকেয়া হলে আত্মহত্যা করেন। তার রুম নং ছিল ১৩। বুয়েটের ছাত্র ফয়সালের সঙ্গে বাকবিত-া করে
অতিরিক্ত ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যা করেন সাবেরা ইয়াসমিন পাপড়ি। তিনি ছিলেন চারুকলার ছাত্রী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের ছাত্রহত্যার মামলার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে রমনা জোনের ডিসির কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, মামলাগুলো শাহবাগ থানার অধীনে আছে এবং তার অবস্থা সম্পর্কে আদালত ছাড়া কেউ ভালো বলতে পারবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ছাত্রহত্যা ছাড়া অন্যগুলোর ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। কোন মামলা এখন কী অবস্থায় আছে তা আমি জানি না।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:২৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×