somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১০ বছরে পরিবহন দুর্ঘটনায় মৃত ৩৮ হাজার ৯শ

১৬ ই মার্চ, ২০১১ রাত ৯:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দেশে বাড়ছে পরিবহন দুর্ঘটনা
আপেল মাহমুদ
প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
দেশে বাড়ছে পরিবহন দুর্ঘটনা। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। সড়ক, নৌ এবং রেলপথেদুর্ঘটনায় মৃত্যুর পাশাপাশি অনেকে হয়ে পড়েছে পঙ্গু। কিন্তু তারপরও থেমে নেই পরিবহন দুর্ঘটনা। চালকের অসচেতনতা, অজ্ঞতা কিংবা ফিটনেসহীন যানের কারণে দুর্ঘটনায় মৃত্যু এখন নিত্যদিনের ঘটনা। রেল ও নৌদুর্ঘটনার তুলনায় এগিয়ে আছে সড়ক দুর্ঘটনা। গত দশ বছরে নৌ, সড়ক ও রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৮ হাজার ৯শ মানুষের। এর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ বছরে মারা গেছে ৩২ হাজার ২শ জন। সড়ক, নৌ ও রেল দুর্ঘটনা।
১৭ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ১ লাখ ৩ হাজার
পুলিশ হেডকোয়ার্টারের এফআইআর রিপোর্ট অনুসারে ১৯৯৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত দেশে ৭০ হাজার ৫শ ৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, যাতে ১ লাখ ৩ হাজার ৬শ ৪ জন মানুষ হতাহত হয়। মারা যায় ৫০ হাজার ৫শ ৪৪ জন। ২০১০ সালে মোট সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২ হাজার ৮শ ২৭টি। এতে মোট হতাহতের সংখ্যা ৪ হাজার ৪শ ৪৯ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ২ হাজার ৬শ ৪৬ জন, গুরুতর আহত বা পঙ্গুত্ব বরণ করেছে ১ হাজার ৩শ ৮৯ জন এবং সাধারণ আহত হয়েছে ৪শ ১৪ জন।
সূত্র মতে, ২০০৯ সালে নিহত হয় ২ হাজার ৯শ ৫৮ জন এবং গুরুতরভাবে আহত হয় ২ হাজার ২শ ২৩ জন। ২০০৮ সালে নিহত হয় ৩ হাজার ৭শ ৬৫ জন ও গুরুতর আহত হয় ২ হাজার ৭শ ২০ জন। ৪ হাজার ৮শ ৬৯টি দুর্ঘটনা ঘটে ২০০৭ সালে, যেখানে ৭ হাজার ২২ জন হতাহত হয়। ৩ হাজার ৭শ ৯৪টি দুর্ঘটনা ঘটে ২০০৬ সালে এতে ৫ হাজার ৬শ ২ জন হতাহত হয়। ২০০৫ সালে ৩ হাজার ৯শ ৫৫টি দুর্ঘটনা ঘটে। যাতে ৫ হাজার ৯শ ৪২ জন মানুষ হতাহত হয়। এর মধ্যে নিহত হয় ৩ হাজার ১শ ৮৭ জন। ২০০৪ সালে ৫ হাজার ৭শ ২০ জন ৩ হাজার ৯শ ১৭টি দুর্ঘটনার শিকার হয়, যার মধ্যে নিহত হয়েছে ২ হাজার ৯শ ৬৮ জন। ২০০৩ সালে ৪ হাজার ৭শ ৪৯টি দুর্ঘটনায় হতাহত হয় ৭ হাজার ১শ ৭ জন মানুষ। গত দশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে ২০০২ সালে। এই সময় ৪ হাজার ৯শ ১৮টি দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ১শ ৬৮ জন মানুষ হতাহত হয়। মোট নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ৩শ ৯৮ জন। ৬ হাজার ২শ ৮১ জন দুর্ঘটনার শিকার হয় ২০০১ সালে। এ সময় ৪ হাজার ৯১টি দুর্ঘটনায় মারা যায় ৩ হাজার ১শ ৯ জন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) তথ্য মতে, ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯ হাজার ৭শ ১০ জন মারা গেছে। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছে ২২ হাজার ৪শ ৮৫ জন এবং সাধারণ আহত হয়েছে ১০ হাজার ৪শ ৬ জন।

বেশি দুর্ঘটনার শিকার ২৬ থেকে
৩০ বছর বয়সীরা
১৯৯৮ থেকে ২০০৯ সালে যত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়েছে ২৬ থেকে ৩০ বছরের মানুষ। এ বয়সী আহত ও নিহতের সংখ্যা অন্য বয়সীদের তুলনায় অনেক বেশি। বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ২৬ থেকে ৩০ বছরের মানুষ হতাহত হয় ৬ হাজার ৭শ ১৫ জন। ৩১ থেকে ৩৫ বছরের মানুষ রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে। ২১ থেকে ২৫ বছরের মানুষের অবস্থান তৃতীয়। একই সময়ের মধ্যে ২১ থেকে ২৫ বছরের ৫ হাজার ৩শ ৭২ জন দুর্ঘটনার শিকার হয়। সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের দিক থেকে চতুর্থ অবস্থানে আছে ৬ থেকে ১০ বছরের শিশুরা। ২ হাজার ৯শ ৬৬ জন এই সময়ে হতাহত হয়। পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে ৩৬ থেকে ৪০ বছরের মানুষ। এই বয়সের ৪ হাজার ৩শ ৯৬ জন হতাহত হলেও নিহতের সংখ্যা ২ হাজার ২শ ১১ জন ও আহত ১ হাজার ৪শ ৩১ জন।


হতাহতের দিক থেকে পুরুষরা এগিয়ে
আহত ও নিহতের দিক থেকে মহিলাদের তুলনায় পুরুষের সংখ্যা বেশি। অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, ২০০৯ সালে পুরুষ হতাহত হয় ৩ হাজার ৬শ ১২ জন ও মহিলা ৬শ ৩২ জন, ২০০৮ সালে পুরুষ ৪ হাজার ৫শ ৫১ জন ও মহিলা ৭ হাজার ৪১ জন হতাহত হয়। এ ছাড়া ২০০৭ সালে পুরুষ ৪ হাজার ৫শ ৩৬ জন ও মহিলা ৭শ ৮১ জন, ২০০৬ সালে পুরুষ ৪ হাজার ৬শ ৬২ জন ও মহিলা ৫শ ৬৫ জন, ২০০৫ সালে পুরুষ ৪ হাজার ৯শ ২৫ জন ও মহিলা ৫শ ৭৭ জন, ২০০৪ সালে পুরুষ ৫ হাজার ৩শ ৫৪ ও মহিলা ৭শ ২৫ জন, ২০০৩ সালে পুরুষ ৬ হাজার ১শ ৯১ ও মহিলা ৮শ ১ জন, ২০০২ সালে ৫ হাজার ৫শ ৮২ জন পুরুষ ও ৭শ ২৬ জন মহিলা, ২০০১ সালে পুরুষ ৪ হাজার ২শ ৯৩ ও মহিলা ৬শ ২৫ জন এবং ২০০০ সালে ৫ হাজার ৬শ ৩৯ জন পুরুষ ও ৮শ ৫৩ জন মহিলা হতাহতের শিকার হন।

দুর্ঘটনায় এগিয়ে ঢাকা
দেশের জেলাগুলোর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার হতাহতের দিক থেকে এগিয়ে আছে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকা। এর পরের অবস্থানে আছে বগুড়া, টাঙ্গাইল, নরসিংদী, চট্টগ্রাম, মানিকগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলা। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির তথ্য মতে, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ২০০৯ সালে দুর্ঘটনায় ৫শ ২০ জন হতাহতের শিকার হয়, বগুড়ায় ১শ জন, টাঙ্গাইলে ৯৫ জন, নরসিংদীতে ৯০ জন, চট্টগ্রামে ৭৮ জন, মানিকগঞ্জে ৭৭ জন, কুমিল্লায় ৭৬ জন এবং সিরাজগঞ্জে ৫৫ জন নিহত হয়।

বেশিরভাগই পথচারীর সঙ্গে সংঘর্ষজনিত দুর্ঘটনা
দেশে যেসব সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে তার বেশিরভাগই পথচারীর সঙ্গে সংঘর্ষজনিত দুর্ঘটনা। বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, দুর্ঘটনার শতকরা ৫৪ ভাগই পথচারীর সঙ্গে সংঘর্ষজনিত দুর্ঘটনা। বিশ্লেষণে আরো দেখা যায়, পথচারীর সঙ্গে সংঘর্ষসহ গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ, পশ্চাদ্ভাগে আঘাত এবং উল্টে যাওয়াজনিত দুর্ঘটনায় প্রায় ৮৫ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী। তাদের তথ্য মতে, মুখোমুখি সংঘর্ষে শতকরা ১৩ ভাগ, পশ্চাদ্ভাগে আঘাতে ১১ ভাগ, পার্শ্ব ঘর্ষণে ৫ ভাগ, দাঁড়ানো গাড়িকে আঘাত ও রাস্তার পাশের বস্তুতে আঘাত করে ২ ভাগ, সমকোণে ১ ভাগ এবং অন্যান্য কারণে ৪ ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে।

শহরের বাইরে এবং হাইওয়েতে বেশি দুর্ঘটনা
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির তথ্য মতে, যেসব বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং এতে বেশিরভাগ মানুষ মারা গেছে শহরের বাইরে দিয়ে যাওয়া হাইওয়েতে। শতকরা ৬৫ ভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে গ্রামের হাইওয়েতে এবং শহরে ঘটেছে ৩৫ ভাগ। এ ছাড়া সড়ক ভিত্তিতে ৫১ ভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে হাইওয়েতে, স্থানীয় সড়কে ১৩ ভাগ, রেলপথ কিংবা ব্রিজের সঙ্গে সংযোগস্থাপনকারী শাখা সড়কে ১২ ভাগ, গ্রামীণ সড়কে ১১ ভাগ, প্রধান বিভাগীয় শহরের সড়কে ১৩ ভাগ।

দুর্ঘটনার দিক থেকে মোটরসাইকেল এবং মৃত্যুর দিক থেকে বাস এগিয়ে
দেশে যেসব সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে তার বেশিরভাগই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা এবং দুর্ঘটনায় মৃত্যুর দিক থেকে এগিয়ে আছে বাস। একটি পরিসংখ্যানে জানা যায়, মোটরসাইকেলের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে শতকরা ১.৭ ভাগ এবং এতে মৃত্যুর শতকরা হার ৫.৬। বেবিট্যাক্সি এবং টেম্পোর কারণে দুর্ঘটনার শতকরা হার ১২.৪ এবং এতে মৃত্যুর হার ৩.৮ ভাগ। মাইক্রোবাস, জিপ এবং পিকআপের কারণে দুর্ঘটনার হার ৬.১ এবং মৃত্যুর হার ৬.২ ভাগ, মিনিবাসের কারণে দুর্ঘটনার হার ২.৯ এবং মৃত্যুর হার ৭.৮ ভাগ। বাসের কারণে দুর্ঘটনার হার ৩.০ এবং মৃত্যুর হার ২৯.১ ভাগ, কার বা ট্যাক্সির কারণে দুর্ঘটনার হার ১৪.৮ এবং মৃত্যুর হার ২.৩ ভাগ। ট্রাকের কারণে দুর্ঘটনার হার ৫.৪ এবং মৃত্যুর হার ২২.২ ভাগ এবং অন্যান্য কারণে ৩.৬ ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মারা যায় শতকরা ২৩ ভাগ মানুষ।

লাইসেন্সহীন চালক চার লাখ, বৈধ নয় লাখ
সরকারি হিসাব অনুযায়ী দেশে লাইসেন্সবিহীন পরিবহন চালকের সংখ্যা চার লাখের বেশি। বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা তিনগুণ। পরিবহনের বিপরীতে প্রায় ৬১ ভাগ অবৈধ চালক হওয়ায় দেশে সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ঢাকাসহ দেশের ৬১ ভাগ চালক বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি চালাচ্ছেন। এ কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনার মাত্রা।
বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ নিবন্ধিত পরিবহনের বিপরীতে বৈধ চালকের সংখ্যা নয় লাখ। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় প্রায় এক লাখ বৈধ চালক।
২০০৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সাত বছরে রাজধানীতে মোটর গাড়ি নিবন্ধিত হয়েছে ৫ লাখ ২৭ হাজার ২৮৫টি। এর মধ্যে মোটর কারের সংখ্যা ১ লাখ ৪৭ হাজার ২৮৩, জিপ, ওয়াগনসহ মাইক্রোবাস ৫৮ হাজার ৬০৮, ট্যাক্সি ১০ হাজার ৬৮২, বাস ৮ হাজার ২১০, মিনিবাস আট হাজার ৩১৭, ট্রাক ৩০ হাজার ১৫, অটোটেম্পো ১৪ হাজার ৮২০, মোটরসাইকেল ২ লাখ ১৯ হাজার ৪৪৩, অন্যান্য ২৯ হাজার ৯০৭টি। রাজধানীতে ২০ বছরের পুরনো বাস, মিনিবাস ও ট্রাকের সংখ্যা ১৩ হাজার ৭৭৮টি। ফিটনেসবিহীন গাড়ি ৮০ হাজার ৬১৫টি। এর মধ্যে ২৫ বছরের বেশি পুরনো ট্রাকের সংখ্যা আট হাজার ১২৫ এবং ১ হাজার ৮৪২টি ভ্যান। ২০ বছরের বেশি পুরনো রয়েছে এক হাজার ৪৪৬টি বড় বাস, দুই হাজার ৩৬৫টি মিনিবাস। দেশে নিবন্ধিত পরিবহনের সংখ্যা ১৩ লাখ ৪৮ হাজার। এর মধ্যে মোটর কার ১ লাখ ৮৬ হাজার ৮১৩, জিপ, ওয়াগন ও মাইক্রোবাস ৮২ হাজার ৫৯৫; ট্যাক্সি ১২ হাজার ২৯৮, বাস ৩৭ হাজার ১৭১, মিনিবাস ৩৫ হাজার ৫৯৭, ট্রাক ৭১ হাজার ৫০৫, অট্রোরিকশা ও অটোটেম্পো ১ লাখ ৬৩ হাজার ৭৩১, মোটরসাইকেল ৭ লাখ ৪৪ হাজার ৩৪ ও অন্যান্য ৪৯ হাজার ৫৭৫টি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব বলেন, ঢাকাসহ আন্তঃজেলা পরিবহনে বেশিরভাগই রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত গাড়ি চালানো হচ্ছে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী ২০ বছরের পুরনো গাড়ি ঢাকাসহ হাইওয়েতে চালানো নিষিদ্ধ। তাই ২০ বছরের পুরনো গাড়ি এখন বিভিন্ন জেলায় চলছে। আমরা চেষ্টা করি বৈধ লাইসেন্স দেখে চালক নিয়োগ দেওয়ার। চালকের লাইসেন্স সঠিক কিনা তা পরীক্ষা করার দায়িত্ব বিআরটিএ’র। তিনি বলেন, লাইসেন্স নিতে বিআরটিএ’র জটিলতার কারণে অনেক অভিজ্ঞ চালক দিনের পর দিন ঘুরেও লাইসেন্স পাচ্ছেন না। আমরা লাইসেন্স পদ্ধতি সহজ করতে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি। আমি মনে করি দক্ষ চালক তৈরি করতে সরকারের পক্ষ থেকে একটি পৃথক ইনস্টিটিউট গঠন জরুরি। এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা সড়ক পরিবহন সমিতির পক্ষ থেকে বিআরটিএকে দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। সরকারের পক্ষ থেকে ইনস্টিটিউট করা হলে আমরা সহযোগিতা করব।
সরকারি গবেষণায় বলা হচ্ছে জাল, ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স, অদক্ষ গাড়িচালক, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন, সড়ক নিরাপত্তার অভাব, সড়ক নির্মাণে ত্রুটি, মোটরযানের ত্রুটিসহ নানা কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। ১৯৮৩ সালের মোটরযান অধ্যাদেশ অনুযায়ী গাড়ি, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ ৭০ মাইল, মধ্যম আকারের কোস্টার ৩৫ মাইল, মালবাহী যানের ১০-৩৫ মাইল গতিসীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ পরিবহন চালকের এসব নিয়মনীতির প্রতি কোনো তোয়াক্কা নেই। অনেকেই আছেন এসবের কিছুই জানেন না।
বিআরটিএ বলছে, জনবল সঙ্কটের কারণে অবৈধ চালক ও পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এ দায়িত্ব পুলিশের। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলছেন, বিআরটিএ’র নানা জটিলতার কারণে দক্ষ চালকরা লাইসেন্স নিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান মোঃ আইয়ুবুর রহমান জানান, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আমরা আন্তরিক। ইতিমধ্যে অবৈধ চালক ও পরিবহনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আমাদের নিজস্ব জনবল না থাকার কারণে অভিযান ধারাবাহিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।

সড়কে অতিরিক্ত বাঁক
সড়ক দুর্ঘটনার আরেকটি কারণ হচ্ছে সড়কে অতিরিক্ত বাঁক। পূর্বাঞ্চল হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নির্দিষ্ট গতিসীমা অনুযায়ী গাড়ি না চালানো এবং এসব বাঁকে উদাসীনভাবে গাড়ি ওভারটেকিং করার কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে, ঘটছে বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি। এছাড়া গাড়ির চালক ও সহকারীর যখন-তখন মোবাইল ফোনে কথোপকথন, বাঁক সম্পর্কে সতর্ক না থাকা, বাসস্ট্যান্ড ও সড়কে অস্থায়ী বাজার ইত্যাদিও সড়ক দুর্ঘটনার কারণ। প্রায়ই দেখা যায়, মহাসড়কে সতর্কীকরণ বার্তা সংবলিত বিভিন্ন সাঙ্কেতিক চিহ্ন থাকা সত্ত্বেও চালকরা তা মানছেন না। বাঁকের মধ্যে ৪০ কিলোমিটার গতিসীমা লঙ্ঘন করে চালানো হচ্ছে বড় যাত্রীবাহী বাস ও মালবোঝাই কাভার্ড ভ্যান। এতে বাঁকের মধ্যে গাড়ি উল্টে পড়ছে অথবা মুখোমুখি সংঘর্ষ হচ্ছে। এ ঘটনা বেশি ঘটে বাঁকবহুল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। সর্বোপরি দিনের পর দিন গাড়ির সংখ্যা বেড়েই চলছে। শহরাঞ্চলে যানজটের কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনা কমলেও মহাসড়কে বেড়েছে।

বিধিমালা মানছে না কেউ
মহাসড়ক নিরাপত্তা, সংরক্ষণ ও চলাচল বিধিমালা ২০০১-এ বলা আছে, ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার গতি নেই এমন কোনো মোটরযান মহাসড়কে চলাচল করতে পারবে না। অথচ মহাসড়কগুলোতে রিকশা, অটোরিকশা, নসিমন, ট্রাক্টর ইত্যাদি চলাচল করছে। এক্ষেত্রে পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে। তবে সড়ক এবং জলপথের বেশিরভাগ দুর্ঘটনার জন্য প্রধানত দায়ী চালকের অসচেতনতা ও অদক্ষতা। অনেক সময় যাত্রীরাও বাদুড়ঝোলা হয়ে তড়িঘড়ি গন্তব্যে যেতে চান। বিশেষত শহরের পথচারীরা রাস্তা পারাপারে কোনো শৃঙ্খলা রক্ষা করেন না। এক গবেষণা মতে, বাংলাদেশে গাড়িপ্রতি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। প্রতি ১০ হাজার যানবাহনে নিহতের সংখ্যা বছরে ১৬৯ জন। এ অবস্থায় দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনতে আইনি ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে এবং বাড়াতে হবে গণসচেতনতা। রাস্তা প্রশস্ত করা ছাড়াও লেন বাড়ানো, চালক ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির মালিকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, যথাসম্ভব মহাসড়কে বাঁকের সংখ্যা কমানো এবং পুলিশি নজরদারি বাড়ানো দরকার। মোট কথা, কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানোর সর্বাত্মক প্রয়াস চালাতে হবে।
প্রতিদিন মামলা হচ্ছে ১৫টি
সড়ক দুর্ঘটনার কারণে প্রতিদিন গড়ে মামলা হচ্ছে ১৫টি। মামলায় ৮৩ শতাংশ আসামি থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ২০০৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় রাজধানীতে ৬১৭টি মামলার মধ্যে সাজা হয়নি একজন আসামিরও। এ প্রেক্ষাপটে সড়ক দুর্ঘটনার দিক থেকে বিশ্বের মধ্যে শীর্ষ তালিকায় আছে বাংলাদেশের নাম। সড়ক দুর্ঘটনার কারণে বছরে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি, যা মোট জিডিপির দুভাগের বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা না গেলে আগামী ১০ বছরে দুর্ঘটনার পরিমাণ হবে দ্বিগুণ। দেশে সড়ক দুর্ঘটনার ২০৯টি স্পট চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট। বিভিন্ন এলাকার হাইওয়ে সড়কের এ স্পটগুলোতে ঘটছে ৯০ শতাংশ দুর্ঘটনা।

নৌদুর্ঘটনা
বাংলাদেশের শতকরা ৫৪ ভাগ মানুষ জলপথে পরিবহন হিসাবে ব্যবহার করে লঞ্চ, নৌকা, ফেরি, ট্রলার, কার্গো জাহাজ। তবে বহুল ব্যবহৃত ও জনপ্রিয় জলযান লঞ্চ। বিআইডব্লিউটিএ’র তথ্য মতে, দেশে যাত্রীবাহী লঞ্চ ৫৪ ভাগ, কার্গো জাহাজ ৩৯ ভাগ, মাছ ধরার নৌকা-ট্রলার ৬ ভাগ এবং অন্যান্য শতকরা ১ ভাগ নৌযান আছে। আর তাই লঞ্চে দুর্ঘটনার পরিমাণও সবচেয়ে বেশি। একদিকে ফিটনেসবিহীন ত্রুটিপূর্ণ জলযান অন্যদিকে অধিক যাত্রী পরিবহনের কারণে প্রতিবছর অসংখ্য মানুষকে প্রাণ দিতে হচ্ছে। সারাবছরে দেশে সবচেয়ে বেশি নৌদুর্ঘটনা ঘটছে শীতকালে।
৪৫ বছরে মৃত ১৭ হাজার
১৯৬৫ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত নৌদুর্ঘটনায় মারা গেছে প্রায় ১৭ হাজার মানুষ। বিআইডব্লিউটিএ’র সূত্র মতে, ২০১০ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ৭শ ৫৫টি নৌদুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ৬শ ৮৮টি যান উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। সরকারিভাবে ৪শ ২২টি এবং বেসরকারিভাবে ২শ ৬৬টি নৌযান উদ্ধার করা হয়। ৬শ ২৩টি নৌযান উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক এমদাদুল হক বাদশা বলেন, নৌযান উদ্ধারের জন্য এবং প্রাণহানি কমানের জন্য যেসব উদ্ধারকারী যন্ত্রপাতি দরকার তার সব কটি আমাদের নেই। বর্তমানে যা আছে তা দিয়ে দ্রুত কাজ করা সম্ভব হয় না। তিনি আরো জানান, ৪৫ বছরে মোট সম্পদহানি হয়েছে ২ হাজার ৩শ ৫৪ কোটি টাকা। দুর্ঘটনা রোধ ও দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে না পারলে মৃত্যুহার কমানো কঠিন হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

চলতি বছরে ২১টি নৌদুর্ঘটনা
চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে দেশে ২১টি নৌদুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে মৃত্যু হয় ২০ জনের। সূত্র জানায়, বছরের প্রথম দিনে দুটি জাহাজের মধ্যে সংঘর্ষে এমভি মানিক মিয়া-২ চট্টগ্রামে ডুবে যায়। ২ জানুয়ারি ঝালকাঠিতে জাহাজের ধাক্কায় নৌকা ডুবে দুজন নিহত হয়। ৩ জানুয়ারি ঢাকার সোয়ারীঘাটে বালুবাহী জাহাজের সঙ্গে নৌকার ধাক্কায় নৌকা ডুবে যায়। এতে দুজন নিহত হয়। ২১ জানুয়ারি বরিশালের ভোলানাথ নদীতে লঞ্চের সঙ্গে ট্রলারের ধাক্কায় ট্রলার ডুবে গেলে একজন নিহত হয়। একই দিনে রাঙামাটিতে আরো একটি নৌকা ডুবে যায়। এতে নিহত হয় দুজন। ২৩ জানুয়ারি বুড়িগঙ্গা নদীতে এমভি মিতালী-২ লঞ্চের ধাক্কায় ট্রলার ডুবে একজন নিহত হয়। ফেব্রুয়ারির ১৬ টিটু-২ দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে নিহত হয় সাতজন। চাঁদপুরের মোহনপুরে ১৮ ফেব্রুয়ারি ট্রলারডুবিতে নিহত হয় একজন। চট্টগ্রামের হালদা নদীতে দুজন ছাত্র নিহত হয় নৌকা ডুবে। চট্টগ্রাম বন্দরে ১৮ ফেব্রুয়ারি এভি বাংলার জ্যোতি নামক লঞ্চ দুর্ঘটনার শিকার হলে একজন শ্রমিক নিহত হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি বরিশালের লাহার হাটে যাত্রীবাহী ট্রলারডুবিতে একজন নিহত হয়। সর্বশেষ ২৭ ফেব্রুয়ারি বাঘাবাড়ীতে তৃণা নামক লঞ্চ চরে আটকে দুর্ঘটনার শিকার হলে একদিন পর উদ্ধার করা হয়।

নৌযানের পরিসংখ্যান
সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে নিবন্ধন করা নৌযানের সংখ্যা ছয় হাজার ২৫৭টি। যাত্রীবাহী লঞ্চের সংখ্যা ৬২৫। বালিবাহী ২ হাজার ১৪১, মালবাহী ১ হাজার ৬৬৭, পণ্যবাহী ২৪৮, বার্জ ১৩৬, যাত্রীবাহী বোট ৬৫২, তেলবাহী নৌযান ১৪১, স্পিডবোট ৭১, টাগ ৪৭, ক্রেন বোট ৯, ড্রেজার ৫৩৩, ভ্রমণতরী ৪, পাইলট বোট ৯৬, পানিবাহী নৌযান পাঁচ, পরিদর্শন বোট ৩২টি। বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের মতামত সরকারি এই পরিসংখ্যান সঠিক নয়। সারাদেশে নিবন্ধনের বাইরে কয়েকগুণ নৌযান চলাচল করছে। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, কয়েক গুণ না হলেও সরকারি হিসাবের চাইতে বেশি। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের অসংখ্য নৌযান নামানো হচ্ছে। সরকারি জনবল কম ও দেশের সব জেলা-উপজেলায় পরিদর্শক না থাকায় সব ধরনের নৌযান রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।

নৌদুর্ঘটনার কারণ
সাধারণত দুটি কারণে নৌদুর্ঘটনা ঘটে। এর একটি হলো নৌযানের অংশবিশেষ ভেঙে যাওয়া, অন্যটি নৌযানের ভারসাম্য হারানোর ফলে কাত হয়ে ডুবে যাওয়া বলে জানায় বিআইডব্লিউটিএ। এ ছাড়া নৌদুর্ঘটনার পেছনে অন্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে, নৌযান ফেটে যাওয়া, মুখোমুখি সংঘর্ষ, নির্মাণে নিম্নমানের স্টিল ব্যবহার, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, দক্ষ চালকের অভাব, ইনল্যান্ড শিপিং অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ তোয়াক্কা না করা অর্থাৎ বিদ্যমান আইন না মানা, মনিটরিং ও পর্যবেক্ষণের অভাব, সঠিক পরিমাপের স্টিল ব্যবহার না করায় অনেক সময় অল্প আঘাতেই জাহাজের খোলের অংশ ভেঙে যায় কিংবা খোলের অভ্যন্তরে পানি ঢুকে জাহাজ ডুবে যায়। অনেক সময় অধিক যাত্রী ও অতিরিক্ত মাল পরিবহনের কারণে জাহাজের তলা ফেটে দুর্ঘটনা ঘটে। মুখোমুখি সংঘর্ষের কারণে ৫৯টি নৌদুর্ঘটনা ঘটেছে, যা শতকরা হিসাবে ৪২ ভাগ। নিমজ্জিত হওয়ার ঘটনা ৪২, যা শতকরা হিসাবে ৩০ ভাগ। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কারণে ২৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে, যা শতকরা হিসাবে ২০ ভাগ, সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ে ১০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে, যা শতকরা হিসাবে ৭ ভাগ ও অন্যান্য কারণে এক ভাগ দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুখোমুখি সংঘর্ষের কারণে আমাদের দেশে নৌদুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে।

নাব্যতার অভাব
বাংলাদেশে নদীগুলোর নাব্যতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। আর তাই নৌদুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসাবে দেখা হচ্ছে নাব্যতা সঙ্কটকে। দেশে বর্ষাকালে নদীপথে মোট নাব্য নৌপথ ৬ হাজার কিলোমিটার। কিন্তু শীতকালে এটি কমে আসে ৩ হাজার ৬শ কিলোমিটারে। এ ক্ষেত্রে লঞ্চ বা ট্রলার বিকল্প পথ ব্যবহার করতে গিয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। আর এ প্রবণতা রাতেরবেলা সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। নাব্যতার অভাবে নদীবহুল দক্ষিণাঞ্চলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নৌযোগাযোগ ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে। এতে বছরের বেশিরভাগ সময় বরিশাল মংলা, খুলনা, চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। বাজেটের স্বল্পতা এবং সময়মতো ড্রেজিং না করায় দুর্ঘটনার পরিমাণ বাড়ছে। বিআইডব্লিউটিএ’র তথ্য মতে, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৭.৩৫ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ২.৬৬ লাখ ঘনমিটার। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩৪.২০ লাখ ঘনমিটার কিন্তু ড্রেজিং করা হয়েছে মাত্র ১০.০১ লাখ ঘনমিটার। আবার ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৩৭.৮৬ লাখ ঘনমিটার নির্ধারণ করা হলেও ড্রেজিং করা হয়েছে ৩১.২৪ লাখ ঘনমিটার। সময়মতো ড্রেজিং না করায় নৌপথগুলো সঙ্কুচিত হচ্ছে। ফলে দুর্ঘটনার পরিমাণও বাড়ছে।

সক্ষমতাহীন ড্রেজার
বিআইডব্লিউটিএ’র অধীনে নাব্যতা উন্নয়নে ড্রেজিং কাজের জন্য রয়েছে ৭টি ড্রেজার। এ ছাড়া টাগ, ক্রেন হাউস বোটসহ ৪৩টি সহায়ক জলযানের বহর আছে। কিন্তু ৭টি ড্রেজারের মধ্যে ২টি ১৯৭২ সালে এবং বাকি ৫টি ১৯৭৫ সালে ক্রয় করা হয়। অনেক পুরনো ড্রেজার হওয়ায় এগুলো এখন কর্মক্ষমতাহীন হয়ে পড়েছে। ড্রেজিং ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ২টি ড্রেজার, ২টি ক্রেন বোট, ২টি স্পিডবোট, ২টি ক্রু হাউস বোট ও ১টি টাগ বোটসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে আনার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

মানে না আবহাওয়া সতর্কবার্তা
প্রায় প্রতিবছর ঝড়ের কবলে পড়ে লঞ্চ বা ট্রলার ডুবে দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে। এর অন্যতম কারণ সঠিক সময়ে আবহাওয়াবার্তা না পৌঁছা এবং চালকদের বার্তা সম্পর্কে উদাসীনতা। দেশের বড় কয়েকটি লঞ্চ ঘাটে সাইক্লোন সতর্কবার্তা অফিস থাকলেও সেখানকার যন্ত্রপাতি অনেক পুরনো। এসব যন্ত্রপাতি অনেক সময় ভুল সতর্কবার্তা দেয়। এ ছাড়া বেশিরভাগ লঞ্চে রেডিও ব্যবস্থা নষ্ট থাকায় বার্তা পৌঁছানো সম্ভব হয় না। দু-একটি লঞ্চে রেডিও ব্যবস্থা সচল থাকলেও ট্রলারগুলোতে তথ্য পৌঁছানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই এগুলো সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে আছে বলে বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়। সদরঘাটের কয়েকজন ট্রলারচালক জানান, আজো তারা আকাশের দিকে তাকিয়ে ট্রলার চালান। আকাশে মেঘ থাকলে কিংবা ঝড়ের আশঙ্কা থাকলে সেক্ষেত্রে কখন নৌযান চালাবেন তা তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেন।

ওভারলোডিং
দেশে সবচেয়ে বেশি নৌদুর্ঘটনা ঘটে ঈদ কিংবা উৎসবে ছুটির দিনগুলোতে। এই সময় প্রায় সব লঞ্চ নিজেদের ধারণক্ষমতার ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি যাত্রী বহন করে। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের ফলে লঞ্চগুলো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ’র নিয়ম অনুসারে লঞ্চের ছাদে যাত্রী বহনের অনুমোদন না থাকলেও ঈদের ছুটিতে যাত্রীবাহী প্রতিটি লঞ্চে তিল পরিমাণ জায়গা ফাঁকা থাকে না। ওভারলোডিং যেন না হয় সেজন্য কোনো ঘাটেই দেখার কেউ থাকে না। ফলে প্রতিটি নৌযান অধিক টাকার আশায় অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে। ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা। বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক বলেন, ‘ওভারলোডিংয়ের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী লঞ্চ মালিকের লোক। তাদের অতিরিক্ত লোভের কারণে ওভারলোডিংয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে।

নেই জীবন রক্ষাকারী জ্যাকেট কিংবা লাইফ বয়া
যাত্রীবাহী কোনো লঞ্চেই নেই যথেষ্ট জীবন রক্ষাকারী জ্যাকেট কিংবা লাইফ টায়ার। দু-একটি জাহাজে সামান্য কিছু লাইফ বয়া থাকলেও নৌদুর্ঘটনায় তা কোনো কাজে আসে না। আবদুল খালেক নামে এক লঞ্চচালক জানান, লঞ্চ দুর্ঘটনার সময় জীবন রক্ষাকারী উপকরণের দড়ি খুলতে সময় লেগে যায়, আবার কখনো খোলা সম্ভব হয় না। তাছাড়া যতটুকু উপকরণ থাকে তা খুবই সামান্য। যাত্রীদের মধ্যেও যথেষ্ট সচেতনতার অভাব রয়েছে। বরিশালগামী সদরঘাটের এক যাত্রী বলেন, লঞ্চ ডুবলে পানিতে লাফিয়ে সাঁতার কেটে কূলে ওঠার চেষ্টা করব। তাছাড়া জীবন-মরণ সবই আল্লাহর হাতে। তিনি চাইলে বাঁচব না চাইলে মরব।

ঝুঁকিপূর্ণ নৌযানের সংখ্যা বাড়ছে হাওরাঞ্চলে
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৩৯টি উপজেলা নিয়ে গঠিত বৃহত্তর হাওরাঞ্চলের যোগাযোগ ও পরিবহনে ৮৮টি অভ্যন্তরীণ রুটে প্রতিদিন ১০ হাজারেরও বেশি নৌযান চলাচল করে। বিদ্যমান দুর্বল নৌযান আইনের সুযোগে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বহু নৌযান বা ট্রলার তৈরি হচ্ছে শ্যালো-টিউবওয়েলের ইঞ্জিন ব্যবহার করে। উপযুক্ত কাঠামো ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অভাবে এসব ঝুঁকিপূর্ণ নৌযান বারবার দুর্ঘটনায় পড়লেও বিআইডব্লিউটিএ’র অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নৌযান মালিকরা দাপটের সঙ্গেই তাদের নৌযান চলাচল অব্যাহত রেখেছে। গত এক দশকে ওই অঞ্চলে নৌদুর্ঘটনা ঘটেছে ৫ শতাধিক। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে দেড় হাজারেরও বেশি যাত্রী। ক্ষতি হয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। অথচ হাওরাঞ্চলের নৌপথের কোথাও কোনো উদ্ধার কেন্দ্র নেই। দুর্ঘটনা ঘটলে নারায়ণগঞ্জ কিংবা ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী জাহাজ ও ডুবুরি যেতে হয়। তাতে সময় লাগে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা। ফলে দুর্ঘটনার দীর্ঘ সময় পর উদ্ধারকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও তা কোনো কাজে আসে না। নৌদুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নৌযান নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকার কারণেই হাওরাঞ্চলে দুর্ঘটনার পরিমাণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।
নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলার নিম্নাঞ্চলে ৩৯টি হাওর থানা রয়েছে। নৌযান নিয়ন্ত্রণ আইন উপেক্ষিত হওয়ায় এ অঞ্চলে প্রায়ই নৌদুর্ঘটনা ঘটছে। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে শুধু গত পাঁচ বছরে সংঘটিত ২১টি নৌদুর্ঘটনায় শিশু ও মহিলাসহ কমপক্ষে ৫শ যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। ভয়াবহ দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে ৫টিরও বেশি। ২০০৩ সালের ১২ এপ্রিল এমভি শরীফপুর নামের একটি দোতলা যাত্রীবাহী লঞ্চ মিটামইন উপজেলার অদূরে নাগচিনি নদীতে কালবৈশাখীর ঝড়ে পড়ে ডুবে যায়। এ নৌদুর্ঘটনায় লঞ্চের ভেতরে ও ছাদে থাকা দুশতাধিক যাত্রীর প্রায় সবাই লঞ্চের সঙ্গে গভীর পানির নিচে তলিয়ে যায়। টানা ৮ দিন উদ্ধার অভিযান চালিয়ে বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম ২০ এপ্রিল উদ্ধারকাজ পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। কিন্তু তখনও অনেক নিখোঁজ যাত্রীর সন্ধান পায়নি স্বজনরা। একই বছরের ২১ এপ্রিল ৮২ জন বরযাত্রী নিয়ে এমভি মজলিশপুর নামের একটি লঞ্চ ভৈরবের অদূরে খোনাপাড়া এলাকায় কালবৈশাখীর কবলে পড়ে মেঘনা নদীর গভীরে ডুবে যায়। এ ঘটনায় ৪৯ বরযাত্রীর মৃত্যু হয়। ২০০৭ সালের ৭ আগস্ট যাত্রীবাহী একটি নৌকা উল্টে গেলে ১০ জন যাত্রী মারা যায়। একই বছরের ১২ মে এমভি চানপুর নামের একটি লঞ্চ গোড়াদিঘা এলাকায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। দুদিনের উদ্ধার অভিযানে মাত্র ৪৪ যাত্রীর লাশ উদ্ধার করে অভিযান পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
২০০৯ সালের ৪ ডিসেম্বর মেঘনার শাখা নদী আইলা দাইরায় যাত্রীবাহী লঞ্চ ও ট্রলারের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৭০-৭৫ ট্রলারযাত্রী নিখোঁজ হয়। দুদিন তল্লাশি চালিয়ে এলাকাবাসী ৫১ জনের লাশ উদ্ধার করে। এ দুর্ঘটনা ঘটার ৮ ঘণ্টা পর ঢাকা থেকে দমকল বাহিনীর ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সর্বশেষ গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ জেলার সুরমা নদীতে সংঘটিত নৌদুর্ঘটনায় ৫০ যাত্রীর মৃত্যু হয়। ৭০-৮০ যাত্রীবাহী ট্রলারটি বালুভর্তি একটি ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে গভীর পানিতে তলিয়ে যায়। এতে ৫০ যাত্রী নিখোঁজ হয়। এর মধ্যে ৩৭ যাত্রীর লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এ ঘটনার এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে ২৪ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ জেলার সুরমা নদীর একই স্থানে ফের নৌকাডুবিতে একজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়।
জানা যায়, প্রতিটি নৌদুর্ঘটনার পরপরই প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। প্রতিটি দুর্ঘটনায় প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি যথারীতি সুনির্দিষ্ট কিছু সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করে। এসব সুপারিশ কার্যকর হয় না। কর্তৃপক্ষের কোনো তদারকিও নেই। নেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম। ফলে নদীপথে অবাধে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বোঝাই নৌযান চলে। অধিকাংশ নৌযানচালক অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ। এ অঞ্চলের প্রায় ২০০ কিলোমিটার জলপথে নদীর সীমানা নির্ধারণী মার্কা নেই। নেই বিকন বাতি। অন্যদিকে উদ্ধারকারী জাহাজের অভাবে নৌদুর্ঘটনার পর মরদেহ দ্রুত উদ্ধার করা যায় না। কেবল জলপথে চলাচলের ওপর নির্ভরশীল হাওরাঞ্চলের কোটি মানুষের জীবন তাই অরক্ষিত।
অবৈধ নৌযানের চলাচল রোধেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো তদারকি নেই। আর এক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম তো দূরের কথা, এ সুযোগে নৌপথে অতিরিক্ত যাত্রী ও মাল বোঝাই ঝুঁকিপূর্ণ নৌযান চলাচল করছে অবাধে।
বিদ্যমান নৌযান আইনে ১৬ ঘোড়াশক্তির ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিন ব্যবহƒত নৌযান নিবন্ধনের প্রয়োজন নেই। তাছাড়া মাছ ধরা, যাতায়াত ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত ইঞ্জিনচালিত নৌযানগুলোর অধিকাংশই ৩০ ফুটের বেশি লম্বা। কিন্তু ইঞ্জিনের ‘হর্স পাওয়ারে’র ব্যাপারটি সামনে রেখে এক্ষেত্রে আইন উপেক্ষা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃৃপক্ষের তদারকির অভাবে ভুল নকশায় তৈরি ও ফিটনেসবিহীন নৌযানই এ অঞ্চলে বেশি চলাচল করছে। এসব দেখতে নৌ-ট্রাফিকেরও কোনো ব্যবস্থা নেই। বরং যথাযথ নিরীক্ষা, উপযোগিতা যাচাই না করেই কর্তৃপক্ষ হাওরাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে নৌযান চলাচলের রুট পারমিট ও নতুন লঞ্চের নিবন্ধন দিচ্ছে।

রেজিস্ট্রেশন ছাড়া চলছে ৩৫ হাজার নৌযান
৩৫ হাজার নৌযান আড়াইশর অধিক নৌপথে (রুট) চলছে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া। অধিকাংশ নৌযানই অবকাঠামোগত ত্রুটি নিয়ে যাত্রী ও মাল পরিবহন করছে। জানা যায়, নৌযানগুলোর রেজিস্ট্রেশন ও সার্ভে করা হয় অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল অধ্যাদেশ ১৯৭৬-এর ১৭ ও ১৮ ধারা অনুসারে। এতে নানা জটিলতার কারণে রেজিস্ট্রেশন করতে উৎসাহী হচ্ছেন না মালিকরা। আর এ সুযোগে সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর, উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের একশ্রেণীর কর্মকর্তা ও থানা পুলিশ নৌযান মালিকদের কাছ থেকে ফায়দা লুটছে।
নৌযান তৈরি ও চলাচলে মালিকরা কোনো নিয়মকানুন মানে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্মাণের পর নৌযানের নকশা প্রণয়ন করা হয়। নকশা অনুমোদনের নিয়ম থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার তোয়াক্কা করা হয় না। যে কারণে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে এসব নৌযান।
কোকো-৪ নৌদুর্ঘটনা নিয়ে প্রথম থানায় মামলা হয়েছিল। প্রচলিত নৌপরিবহন আইন যুগোপযোগী না হওয়ায় মামলা করতে হয় মেরিন কোর্টে। এ আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে সাধারণ মানুষ মামলা করতে আগ্রহী হন না। দুর্ঘটনার জন্য দায়ীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।
সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বিদ্যমান নীতিমালায় জটিলতার কারণে নৌযানগুলো রেজিস্ট্রেশনে অনীহা প্রকাশ করছেন মালিকরা। এ নীতিমালা সহজ করা একান্ত জরুরি। রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সহজ করাসহ বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরে নৌমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আনাচে-কানাচে চলাচলরত নৌযান বাধ্যবাধকতার আওতায় এলে দুর্ঘটনাও অনেক কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
সূত্র জানায়, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া নৌযান চলাচল করায় সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে বৈধ মালিকানা স্বত্বের অভাবে মালিকরাও নৌযান বন্ধক রেখে ব্যাংক ঋণ গ্রহণ, ইন্স্যুরেন্স সুবিধা, নৌনিরাপত্তা সম্পর্কিত কারিগরি সহযোগিতাসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না। সরকারের সুবিধা পেতে হলে নৌযানের রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। এসব সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ায় অভ্যন্তরীণ নৌযান নির্মাণ, মেরামত ইত
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×