কয়েকদিন ধরেই পত্রিকা পড়া হচ্ছে না। আজ একটু অবসর পেলাম। আর তাই গতকালের পত্রিকাটা হাতে নিলাম। আর প্রধান প্রধান হেডলাইন গুলো পড়তে লাগলাম। প্রতিনিয়ত পত্রিকার পাতা জুড়ে যা আসলে থাকে তাই গতকালের পত্রিকাতে ও পেলাম। গাদিগাদি বিজ্ঞাপন, খুন হত্যা, দুর্নীতির কসরা, বিশিষ্ট জনদের বিশিষ্ট ভাবনা, আর চমকপ্রদ চাঞ্চল্লকার কিছু শিরোনাম।
তার মধ্যে দুইটি শিরোনাম বিশেষভাবে আমার নজর কাড়ল-
১।" জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের হলে বিধিনিষেধ জারির অভিযোগে প্রতিবাদ"
২।"ধর্মান্তর করা নিয়ে উত্তপ্ত ভারতের পার্লামেন্ট''
(সুত্রঃ প্রথম আলো, ১১ ডিসেম্বের,১৪)
প্রথমত,
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে মেয়েরা ছেলেদের মত রাতবিরাতে যেকোনো সময় দরকার হলে বের হতে পারতো। কিন্তু সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাত ১০ টার পরে কোন মেয়ে হলের বাইরে থাকতে পারবে না। আর এই সিদ্ধান্তেই ফুঁসে উঠেছে বাম দলগুলো। তারা বলছে এই সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক? আমার মতামত হচ্ছে, কিছু কিছু সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক হলে ও মেনে নিলে সমাজের জন্য তা ভাল। কোন সন্দেহ নেই নারী পুরুষের মধ্যে কোন বিভাজন নেই। আমি নারী পুরুষের মধ্যে বৈষম্যের বিপক্ষে। কিন্তু আমাদের আগে বুঝতে হবে আমরা কোন সমাজে বিলং করি। এই সমাজে রাত ১০ টার পরে কোন নারীর চলাচল করা কখনই নিরাপদ নয়, কখনই ছিল না । আর এই অধিকার চেয়ে গলা ফাটালে ভালোর থেকে খারাপ হওয়ার সম্ভবনাই বেশি। সবাই জানেন তো, আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হলগুলো ঠিক রাত ১০ টার মধ্যেই বন্ধ্ হয়ে যায়? কই তা নিয়ে তো কোনদিন ডান বাম কোন দলকেই কোন আন্দোলন করতে দেখলাম না? উপরন্তু এই নিয়মের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ কিছুটা হলে ও ভাল আছে বলে আমার ধারণা।
দ্বিতীয়ত,
ভারতের উত্তর প্রদেশে ২০০ লোককে সম্প্রতি ধর্মান্তরিত করা হয়েছে প্রলোভন দেখিয়ে এবং জোরপূর্বক ভাবে। এর নেপথ্যে ছিল উত্তর প্রদেশের উগ্র হিন্দুবাদী সংঘটন (আর এস এস)। (আর এস এস ) ক্ষমতাশীল দল বিজেপির ভাবাদরশিক পরামর্শ দাতা বলে পরিচিত। আপনারা সকলেই নরেন্দ্র মোদী, ভারতের প্রধানমন্ত্রী কে উগ্র হিন্দুবাদী মতাদর্শে বিশ্বাসী বলে জানেন। তাহলে এই ঘটনা কি তার মনের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন বলে আমাদের মনে হতে পারে কিনা?
ধর্মান্তরিত যে কেউ হতেই পারে। খোদ ভারতেই দিনে দিনে হিন্দু ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার ঘটনা বেড়েই চলেছে ক্রমাগত। কিন্তু সেই সব ধর্মান্তরিত মানুষ ধর্মান্তরিত হয়েছে সজ্ঞানে, স্বেচ্ছায়। কিন্তু এভাবে জোর করে কিংবা প্রলোভন দেখিয়ে ধর্মান্তরিত করার ঘটনা আগে এভাবে ভারতে ঘটেছে কিনা তা আমার জানা নেই। আর এই ঘটনা ভারতের সেকুলার রাষ্ট্রের চিন্তা ভাবনার সাথে কতটা যায় তা নিয়ে ও আজ আমি চিন্তিত.........