somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একলা ভাবনা

১৭ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৩:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ তেমন কোন ব্যস্ততা নেই, নেই কোথাও যাওয়ার তাড়া। সকালে রোজকার মত জিম থেকে ফিরে শাওয়ার আর তরপরে আর কোন কাজ নেই হঠাৎ করেই। :( আর আমার কাজ না থাকলে বা মন খারাপ থাকলই আমি বেশি খাই :(

জিম থেকে ফিরে হ্যাশ ব্রাউন ও চিকেন বারগার বানালাম। টিভির সামনে বসে ওগুলো শেষ করলাম। পালা করে প্রেশারের ওষুধ আর সাপ্লিমেন্ট গুলো গিলে হারবাল টি নিয়ে চ্যানেল আই খুলে বসলাম। এই হয়েছে আমার একলা দিনের সাথি যখন ক্লিফ অফিসের কাজে কোথাও ট্রাভেল করে। ক্লিফ এখন সাউথ আফরিকায়। চ্যানেল আই এ বাংলা ভাষায় অনুষ্ঠান গুলো যখন দেখি, মনে হয় আমি কত কাছে কাছের মানুষ গুলো থেকে।

বসে বসে ত্রিতীয় মাত্রা দেখে দেখে মজা পাই দুপক্ষের লাইভ ঝগড়া আর উপস্থাপকের অসহায় রেফারিগিরি :D:D!!! তাছাড়া টপিক গুলোও মজার!! আবার "তাড়কা কথা"ও কম মজার নয়। আজ তারকা কথায় আল মনসুর কে দেখে ভাল লাগল। আমি উনার খুব একজন ভক্ত ছিলাম যখন ছোট ছিলাম। চেষ্টা করলাম ফোন করতে শুভেচ্ছা জানাবার জন্য। কিন্তু ওনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেও একটাও লাইন খালি পেলাম না :(। খুব বলতে ইচ্ছে করছিল উনার নাটক দেখবার জন্য এক সময় নামাজ পরে দোয়া করতাম যেন উনি নাটকে অভিনয় করেন ও ইলেক্ট্রিসি না চলে যায় :P:P উনি অদ্ভুৎ এক মোহ তৈরি করতেন এক সময়। সেই রোগা পাতলা মানুষটার আজ মোটা হয়ে পুরা আংকেল আংকেল ভাব হয়ে গেছে ;);)

গত কদিনে মুক্তি যুদ্ধের উপর দেখান অনুষ্ঠান গুলো দেখতে দেখতে একলা টিভির সামনে বসে হাউ মাউ করে কান্না করেছি কষ্টে, আর চোখ মুছতে মুছতে কিচেনে গিয়ে প্লেট ভরে ভরে খাবার নিয়ে আাবার সোফায় ফিরে বসা। কান্নার সাথে খাবার না হলে কান্না থামেনা আমার।

আমার ফুফা, ফুফু ও মামা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তি যুদ্ধের সময় আমার এক চাচাকে মেরে ফেলেন রাজাকাররা। মুক্তিযুদ্ধের সব কষ্টই আমাকে কস্ট দেয়। কান্না চলে আসে এত এত মহা মানবদের প্রান উৎসর্গ করার কাহিনি দেখে। গর্বে ভরে ওঠে মন। অথচ উনারা রক্ত দিয়ে যে স্বাধীনতা আনলেন, আজ আমাদের দেশের ক'জন মানুষ তার মুল্য বোঝে বা মুল্য দেয়?

এই কদিনের খবর গুলো যখন দেখেছি একটা দিনও মৃত্যু সংবাদ ছাড়া খবর দেখতে পারিনি। খুব মন খারাপ হয়েছে ব্যপার টা তে। আমি অনেক দুরে থাকলেও মনে মনে খুব কষ্ট নিয়ে থাকি দেশ ছারতে হয়েছে বলে। এই কদিন চোখের পানি যেন আরো বেশি গেছে :((:((

আবার অন্য দিকে চ্যানেল আই নতুন শিল্পিদের গানের কম্পিটিশনের ওনুষ্ঠানটি - "সেরা কন্ঠ", ওর উপস্থাপকের নাদানের মতন উপস্থাপনা দেখলে গা কিশমিশ করে রাগে X(X((। কোথা থেকে এসব ধরে আনে যে বাংলাতে কথা চালিয়ে যেতে পারেনা? মেয়েটা আমাকে মনে করিয়া দেয় বাংলাদেশের রেডিও সেন্টার গুলোর ডি জে দের কথা। কেন ওরা অমন অদ্ভুৎ ভাষায় বাংলা বলে কেজানে। যারা ভাল করে সুন্দর বাংলা বলতে পারেনা বা বাংলায় কনভার্সেশন চালিয়ে যেতে পারেনা, তাদেরকে দিয়ে টি ভি রেডিওর মত যায়গায় এই হাস্যকর উপস্থাপনা করাবার কি যুক্তি বুঝলামনা। দেশের মানুষরা কি কালা হয়ে যাচ্ছে? কেউ কোন প্রতিবাদ কেন করেন না।

পার্থ বড়ুয়ার নাটক দেখলাম " আই লাভ ইউ বাবা"। পরের দিন পার্থদা'র সাক্ষাতকার দেখাল "তাড়কা কথায়"। পার্থদা'র ফোন নাম্বার থাকলে ওকে ফোন করে আর অভিনয় না করতে বলতাম (উনাকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি)। এত বাজে অভিনয় অথচ উনাকে ফোন করে করে মানুষ গুলো বলল উনি নাকি অসাধারন অভিনয় করেন!!। এমন কি নিমা রহমান পর্যন্ত ফোন দিয়ে উনাকে বুক করলেন তাঁর পরের নাটকের জন্য, কি করে কোন ওয়েল উইশার এমন ব্যঙ্গ করে? কি হাস্যকর ব্যপাররে বাবা। নিমা রহমানকে খুব উচু চোখে দেখি আমি, উনি উনার মেধার ব্যপারে আমার মনে খটকা ধরিয়ে দিলেন। আমাদের দেশের মানুষদের কি ভাল মন্দ বোঝবার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে? আর পার্থদা তো গর্বে লাল হয়ে উনার স্বভাব মত মিষ্টি মিষ্টি হাসি দিতে থাকলেন গাধার মতন মদ খাওয়া ভাড়ি চোখ পিট পিট করে :|:|। একজন মানুষ ভাল গান করলেই সে ভাল অভিনয় করবে তাতো নয়। যাই হোক কেউ যদি উনাকে আমার এই কমেন্টা বলেন তাহলে আমি ধন্য হব।

আজ কোন এক সময় ঢাকার পথ দেখতে পেলাম খবরে। হঠাৎ খুব ইচ্ছে করল - আহা এই মূহুর্তে যদি জ্যাম বিহীন ঢাকার পথে পথে ড্রাইভ করে বেড়াতে পারতাম বা হেটে বেরাতে পারতাম!! খুব দম বন্ধ করা ইচ্ছেটা আমাকে পেয়ে বসল। যেসব রাস্তায় আগে একসময় প্রচুর কারনে অকারনে হেটে বা রিক্সায় বা গাড়িতে ঘুরে ঘুরে বেড়িয়েছি আজ খুব সে সব জায়গায় যেতে ইচ্ছে করল। গতবার ঢাকায় গিয়ে শহরটা ভাল করে দেখতে পারলাম না শুধু জ্যামের জন্য। ইচ্ছে ছিল খুব নিরবে যাবো। শুটকি দিয়ে সাদা সাদা ভাত খাব যার গন্ধ হাতে লেগে থাকবে সিংগাপুরে ফিরে আসার পরেও, মনে পরে অনেক বছর আগে একবার ওখানে শুটকি দিয়ে খাবার পরে ৭/৮ দিন আমার হাতে গন্ধ ছিল সাবান দিয়ে হাত ধোবার পরেও। কিন্তু পারলামনা এবার ওখানে যেতে। যেদিন যাব বলে ঠিক করেছিলাম শ্রাবন সন্ধ্যার সাথে সেদিন বেগম খালেদা জিয়া মহা সমাবেশ ডেকেছিলেন হর্তাল ডাকবেন বলে পরের মাসের ২৮ তারিখে। তার পরেও যাওয়া যেত যদি জ্যাম না থাকতো। খুব মন খারাপ ও শরীর খারাপ নিয়ে সেদিন হটেলে ফিরেছিলাম জ্যামের কারনে ও গরমে।

আজকাল বল্গে ঢুকলেই দেখি নোংড়া শব্দ ব্যবহারের প্রতিযিগিতা চলছে। অথচ এই জাতীর পূর্ব পুরুষরা একসময় বাংলা ভাষার জন্য প্রান দিয়ে ছিলেন (?)। আর আজ সেই ভাষার গর্বের সাথে কি অপব্যবহার!! আজ উনারা বেঁচে থাকলে কি যে কস্ট পেতেন সেটাই ভাবি। যে কোন জিনিসের ব্যবহারের দুটো দিক থাকে ১) ভাল দিক। ২) খারাপ দিক। তো আমারা ২ নাম্বারটাই বেছে নিয়েছি (?) মনে কষ্ট পাই ভাবলেই। একবার ৪ বছর বয়েসে বাইরে বন্ধুদের সাথে খেলতে গিয়ে "শালা" কথাটি শিখলাম। মনে মনে নিজেকে খুব বড় মনে হলাম শব্দটি শিখেই। আমার আবার কোন কিছু শিখলেই সেটা প্রয়োগ করতে হয় যত তাড়াতারি সম্ভব। বাড়ি ফিরে মা'কে বোঝাতে ইচ্ছে করল যে আমি বড় হয়ে গেছি আমার নতুন শেখা শব্দ ব্যবহার করে। যেই না 'শালা" বলেছি মা' তো অবাক :-/:-/। ভিষন মন খারাপ করে বলল "ছি ছি এই নোংড়া কথা কোথায় শিখলে? এই কথা কোন ভাল মানুষ বলে?" সেই আমার শেষ শ্লাং বলা চেষ্টা। আমাদের বাড়িতে সামান্য "শালা" বলাটাকে অপমান জনক ও নিজেকে ছোট করা মনে করা হতো। আজ পর্যন্ত আর কখনও শ্লাং বলার চেষ্টা পর্যন্ত করিনি। আজ ভাবি আজকালকার বাবা মা'রা কি উনাদের শিশুদের এমন করে শেখান না? কেমন করে তারা বড় হয়ে বাংলা ভাষার এই অপব্যবহার করেন? যাদিও আপানারা বলবেন আমার মুখে একথা মানায় না কারন আমি বাংলা বানান জানি না। আমি স্বিকার করি আমি বানান জানি না তবে ভাষাকে অপমান করে কোনদিন বাজে শব্দ ব্যবহার করেছি বলে মনে পরে না।

যাই হোক সব মিলিয়ে মনখারাপ মনভাল হয় চ্যানেল আই এর প্রগ্রাম গুলো দেখে বা ব্লগ পরে। দেশের কথা জেনে কাছা কাছি গিয়ে কষ্ট আবার সুখ ও হয় । তবে এই নিয়েই তো আমার দেশের মানুষ ও আমার দেশ। দেশকে সব সময়ই ভাল বাসি তবে মানুষদের অনেককেই ভাল বাসতে মন চায় না। /:)/:)/:)

আমারা কেন মানুষ হই না প্রথমে তার পরে বাংগালী। কেন নিজেদের বিবেক বুদ্ধি খাটাই না?

এখানে এখান বিশাল শব্দ করে মেঘ গর্জন করে বৃষ্টি পড়ছে। মন চায় সবাই কে নিয়ে বৃষ্টি স্নাত হয়ে বলি ধুয়ে যাক আমাদের সব কষ্ট আর মুক্ত হই সমস্ত কিছু থেকে, নতুন করে জন্ম নেই, নতুন করে দেশ কে ভালবাসি ও নতুন করে আবারও দেশ গড়ি, নতুন করে ভাবি।

বেশি বেশি মনখারাপ হলে সমস্যা /:)। আমার মন খারাপ হলেই বেশি বেশি খিদে পায়। আর বেশি বেশি খেলে অতি শিগ্গিরি হাতির বন্ধু হয়ে যাব। :P:P:P:P

ছোট্ট আপডেট টা না দিলেই নয়। আজ থেকে চ্যানেল আই এর সেরা কন্ঠ নতুন করে নতুন উপস্থাপনায় শুরু করেছে এবং উপস্থাপনা ভাল। :) বিচারক সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা ও ইমন সাহা।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ১১:৩৫
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×