somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডেথ এরর

২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৮:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





একটা মানুষ মারা গেছে। বাড়ির উঠোনে কফিন রাখা হয়েছে কিন্তু দাফন নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যথা নেই। এই নিয়ে পুরো বাড়িতে কোন শোকের চিহ্ন পর্যন্ত নেই। সবাই ব্যাস্ত হয়ে রয়েছে ফজল সাহেব মৃত্যুর আগে একটি সিন্দুক রেখে গেছেন তাই নিয়ে। ফজল সাহেব একবার নাকি স্বপ্নে পেয়েছিলেন এই সিন্দুকটি। স্বপ্নে মানুষ অনেক কিছুই পেতে পারে। তাই এমন বিশ্বাস থেকেই সিন্দুক পাওয়ার উৎস নিয়ে কেউ কখনও কোন রহস্য করেনি কিন্তু সমস্যা ছিলো সিন্দুকটি ফজল সাহেব জীবিত থাকা অবস্থায় কখনও নিজেও খুলে দেখেন নি। কারণ স্বপ্নে তাকে নিষেধ করে দেয়া হয়েছিলো সিন্দুকটি খোলার জন্য। তাই সবার মাঝে তীব্র আকাঙ্ক্ষা থাকার পরেও কেউ সিন্দুকটি খোলা নিয়ে এতকাল আগ্রহ দেখায়নি। অবশেষে ফজল সাহেবের মৃত্যুর পর সেই নিষেধ মেনে চলার আর কোন বাঁধা থাকল না কিন্তু সিন্দুকটি খোলার চাবি পাওয়া যাচ্ছেনা। তাই কিভাবে এটি খোলা যাবে আর এর ভেতর কি আছে তাই নিয়ে সবার মধ্যে চলছে তুমুল উত্তেজনা। নানা জনের নানা মত। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হল যে সিন্দুকটি ভেঙে ফেলা হবে। এমন সময় বাড়ির উঠোনে একজন মহিলা এলেন। মহিলা বললে বেশি বলা হয়ে যাবে। অল্প বয়সী এক মেয়ে। দেখতে ভীষণ ফর্সা যেন ঠিক এক টুকরো সাদা মেঘ এই মাত্র উঠোনে নেমে এসেছে। মেয়েটি সবাইকে সতর্ক করে দিল যে যদি কেউ এই সিন্দুকটি খোলার চেষ্টা করে তবে তার জীবনে নেমে আসবে অভিশাপ। এই বলে মুহূর্তেই মেয়েটি হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো।

তবু কেউ অবাক হলনা। মেয়েটির কথা না মেনে অবশেষে সিন্দুকটি ভেঙে ফেলা হল। কিন্তু খালি সিন্দুকটি সবাইকে হতাশ করে দিল। অবশেষে এক বুক হতাশা নিয়ে ফজল সাহেবের দাফনের কাজ শেষ করা হল। অনেকে আবার তার কবরে মাটি ফেলতে ফেলতে মনে মনে দু চারটি গালিও দিয়ে ফেলল এর মধ্যে ফজল সাহেবের লাশটিকে। কিন্তু পরদিন সকালে সেই বাড়ির কেউ আর ঘুম থেকে উঠতে পারলনা। চিরদিনের জন্য ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেলো। ফজল সাহেবের একটি মেয়ে আছে ছয় বছর বয়স। নাম অহনা। শুধু সেই বেঁচে রইল।

***

বরফ কল থেকে চলচিত্র নায়িকা মালতী দেবীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে ধীর গতিতে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে অপরাধীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হবে। সেই এক সপ্তাহ শেষ হয়েছে প্রায় তিন মাস হতে চলল এখনো কোন সুরাহা হয়নি হত্যাকান্ডের। এবার তদন্তের গুরুভার পরেছে গোয়েন্দা বিভাগের উপর। শফিক স্যার গোয়েন্দা প্রধান। বেশ আবেগী একজন মানুষ। এমন মানুষ কিভাবে গোয়েন্দা প্রধান হয়েছেন সেটা আমার মত সামান্য একজন ড্রাইভারের পক্ষে বোধগম্য নয়। যাই হোক এখন চব্বিশ ঘন্টা স্যারের সাথেই থাকতে হচ্ছে। রাত নেই, দিন নেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছুটে চলছি স্যারকে নিয়ে। স্যারকে নিয়ে গাড়ি চালানর সবচেয়ে কষ্টকর দিকটি হচ্ছে সিগারেট খেতে না পারা। স্যার আবার ধূমপান একদমই পছন্দ করেন না। তাও আবার সামান্য ড্রাইভার হয়ে কি করে এমন একজন বড় স্যারের সামনে সিগারেট খাই ! তাই স্যারের সাথে থাকতে থাকতে এই কয়দিনে প্রায় সিগারেট খাওয়া একরকম ছেড়ে দেয়াই হয়েছে।

***

আমার বাবা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। নতুন কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে কিন্তু সে অনেক টাকার ব্যাপার। কিন্তু এত টাকা জোগাড় করা আমার মত গরীবের পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব না। তাই আমি আমার বাবাকে চিরদিনের জন্য হারাচ্ছি এই অমোঘ সত্য মেনে নিয়ে বাবার সাথে শেষ কয়েকটা দিন হাসপাতালেই কাটাচ্ছি। এক রাতের ঘটনা। রাত তখন প্রায় তিনটা বাজে। প্রচণ্ড চায়ের তৃষ্ণা পেয়েছে। হাসপাতাল হতে বের হলাম। রাস্তার ওপারে একটি টং দোকান খোলা ছিলো। একটি ছয় বছরের মেয়ে দোকানে বসে ছিলো।

কি ব্যাপার তুমি এত রাতে দোকানে কি করছ?

দেহেন না দোকানদারী করতাছি !

কিন্তু তুমি কেন ? আর কেউ নেই ?

জে না। এইটা আমার মামার দোকান। হেয় সারাদিন চালায় আর আমি রাতে চালাই।

তোমার নাম কি ? তোমার বাবা-মা কোথায় ?

জে আমার নাম অহনা। উনারা মইরা গেছে। আমি মামার কাছে থাকি। মামাতো আর আমারে বইসা বইসা খাওয়াইবনা। হের লাইগা মামার দোকানে কাম করি। ওত কথার কাম নাই চা খাইবেন?

আচ্ছা দাও। তুমি রং চা বানাতে পার?

জে পারি। আপনে বহেন আমি বানায়া দিতাছি।

অহনা তোমার নামটা খুব সুন্দর। আচ্ছা অহনা আমাকে একটি সিগারেট দাও।

লন।

আমি দোকানের সামনে রাখা টুলের উপর বসে চা আর সিগারেট খাচ্ছি। মেয়েটির জন্য প্রচন্ড মায়া হচ্ছিল। এই এতিম মেয়েটির জন্য কিছু করতে পারলে ভাল হত। কিন্তু যে আমার নিজের চলারই সামর্থ নেই সে আবার আরেকজনের জন্য কি করবে? কিছু করতে পারলেতো নিজেরই এতদিনে একটি গতি করে ফেলা যেতো। যাই হোক আপাতত বাবার জন্য যদি কিডনি ম্যানেজ করা যায় সেটাই ভাগ্যের ব্যাপার হবে। ভাবতে ভাবতে হাসপাতালের ভেতর ফিরে এসেছি। সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময় আমার পাশ দিয়ে বস্তা নিয়ে একটি লোককে নেমে যেতে দেখে কিছুটা সন্দেহ হলো।

ভাই কি নিয়ে যাচ্ছেন?

ময়লা।

এত রাতে কেন ভাই?

ওই মিয়া নিজের কাম করেন গিয়া। ময়লা রাতে ফেলাই আর দিনে তাতে আপনার কি?

না কিছুই না। এমনি জানতে চাইলাম।

শোরগোল শুনে মর্গের রক্ষী এগিয়ে এলো। আরে ভাই আপনি উনারে বিরক্ত করতাছেন কেন ? দেহেন না ময়লা নিয়া যাইতাছে। আপনের বাবার কাছে গিয়া উনার সেবা করেন গিয়া। এদিক ওদিক নজর দেয়া আপনের কাম না। এইডা আমার কাম। আমি দেখতাছি কোথায় কি হয়।

চলে যাচ্ছিলাম এমন সময় পেছন থেকে রক্ষী আমাকে ডাকল। এইযে ভাই শুনেন। আপনার না আপনার বাবার জন্য কিডনি লাগব পাইছেন কিডনি?

না এখনো পাইনি। অনেক টাকার দরকার। কিন্তু এত টাকা আমার কাছে যে নেই!

রক্ষী এদিক ওদিক তাকিয়ে আমার কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলল আইচ্ছা আমি আপনারে কিডনি জোগাড় কইরা দিতে পারি। কিন্তু আমার একটা কাম কইরা দিতে হইব।

আমি যেন তখন আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম। খুশিতে আত্মহারা হয়ে গিয়ে বলে ফেললাম ভাই আপনি টাকা ছাড়া যেই কাজ বলবেন আমি করে দিব। পারবেন আমাকে দুটি কিডনি জোগাড় করে দিতে ?

আইচ্ছা যান তাইলে অহন। কিডনি ব্যবস্থা করতে পারলে আপনারে কমুনে। তহন কিন্তু আমার কামডা কইরা দিতে হইব।

বলেছিতো ভাই দিব। আপনি আমার জন্য এত বড় একটি উপকার করে দিবেন আর আমি আপনার সামান্য কাজ করে দিতে পারব না!

আইচ্ছা শুনেন তাইলে কাইল আমি আপনারে দুইটা কিডনি জোগাড় কইরা দিমু। আপনি আমারে একটা মাইয়া আইনা দিবেন।

মানে কি মেয়ে ?

হ মাইয়া। ঐযে রাস্তার ওইপারের দোকানে পিচ্চি মাইয়াটা আমারে আইনা দিবেন। আমারে চেনে আমি কইলে আইব না কিন্তু আপনেরে না করব না। যদি আমার এই কামটা কইরা দেন আপনারে আমি কিডনি জোগাড় কইরা দিমু।

আপনি ওই মেয়েটিকে নিয়ে কি করবেন ?

হেইডা আপনের জানার বিষয় না। আমি ওই মাইয়া নিয়া কি করি না করি হেইডা আমার বিষয়।

সেই মুহূর্তে আমার কাছে আমার বাবাকে বাঁচিয়ে তোলাই একমাত্র লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ানোর কারণে ভাল মন্দ বিচার করার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাই মর্গের রক্ষীর প্রস্তাবে রাজী হয়ে যাই।

কথা অনুযায়ী আমি তাকে মেয়েটিকে এনে দিলাম রাতের অন্ধকারে। আর সেও তার কথা অনুযায়ী আমাকে দুটি কিডনির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলো।

কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাসের কারণে কিডনি দুটি আমার বাবার জন্য প্রযোজ্য হয়নি। তার কিছুদিন পরেই বাবা মারা গেলেন। বাবা মারা যাওয়ার পর সেই রক্ষীর কাছে অহনার ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলাম। রক্ষী আমাকে তাচ্ছিলের সাথে বলল জান মিয়া আপনি একখান কুফা। কিডনি পাইয়াও নিজের বাপরে বাচাইতে পারলেন না আবার আইছেন কোনহানকার কোন অহনা না গহনার খোঁজ লইতে। যান মিয়া ভাগেন। আমার কিডনি দুইটা ফেরত দিলেন না আবার আইছেন মুখ দেহাইতে। কিডনি দুইটা ফেরত পাইলেতো অন্য কাউরে দেওন যাইতো। মিয়া আপনের লজ্জা করেনা এহনো খাড়ায় আছেন ?
আমি সেখান থেকে চলে এলাম। তারপর আর কোন খোঁজ জানা হয়নি অহনার !

***

স্যার গাড়ি স্টার্ট দেবো ? এখন কোথায় যাবেন ?

হুম তুমি চল আজগর স্যারের বাড়িতে।

স্যার, আজগর স্যার উনাকে ঠিক চিনতে পারছিনা !

আরে বলকি? তুমি কি এই দেশেই থাক ? আজগর স্যার হলেন আমাদের মন্ত্রী। আর তুমি তাকেই চেন না ?

সরি স্যার ভুল হয়ে গেছে। স্যার উনার বাসা কোথায়? মানে স্যার কোথায় যাবো ?

হুম ! তুমি সোজা উত্তরা চল।

আমি আর কথা না বাড়িয়ে উত্তরার পথে গাড়ি চালাচ্ছি। স্যারের হাতে মালতী দেবীর ফাইল। স্যার এখন গভীর মনোযোগ দিয়ে মালতী দেবীর জীবন বৃত্তান্ত পড়ছেন। এই মুহূর্তে পৃথিবীর কোন খেয়াল স্যারের নেই। আজ প্রায় এক মাস হল স্যারের সাথে আছি। স্যারের কাজের ধরণ অনেকটাই এইকদিনেই বোঝা হয়ে গেছে। মন্ত্রী সাহেবের বাড়িতে চলে এসেছি। স্যার ভেতরে চলে গেলেন। ফিরে আসার সময় স্যারকে এগিয়ে দিতে দরজায় মন্ত্রী সাহেব এসেছিলেন। দূর হতে দেখে খুব চেনা চেনা লাগল লোকটিকে। এর আগেও দেখেছি কোথায় যেন ! হ্যাঁ মনে পরেছে আরে এইতো সেই মর্গের রক্ষী। গাড়িতে উঠার পর স্যারকে পুরো কাহিনী শুনালাম।

গ্রেট পেয়ে গেছি !

কি স্যার ?

ওহ তুমি জান না তুমি আমার কত বড় উপকার করলে ?
বহু দিন যাবত হাসপাতালের মর্গ থেকে লাশের কিডনি চুরির রহস্য নিয়ে কাজ করছি। এখন আমার জন্য এই চক্রের গডফাদারকে ধরা সহজ হয়ে গেলো। তুমি কি ঠিক চিনেছো?

জী স্যার ওই চেহারা আমি কখনও ভুলতে পারবনা।
কিন্তু স্যার এই হারামীটা হাসপাতালের মর্গের সামান্য রক্ষী থেকে দেশের মন্ত্রী হল কি করে ?

কিডনি স্মাগ্লিং করে বড়লোক হয়েছে। তারপর টাকা ঢেলেছে মন্ত্রী হবার জন্য। খুবই সহজ হিসাব। এমনইতো হয়ে আসছে। যত চোর বাটপার গুলো আজ দেশের মন্ত্রী হয়ে বসেছে। এ কারনেই দেশের আজ এই বেহাল দশা। এদের দিয়ে আর যাই হোক দেশের উন্নতি আশা করা যায় না। এরা এতদিন যে দেশকেই স্মাগ্লিং করে বেঁচে দেয়নি সেটাই ভাগ্য আমাদের।

ঠিক বলেছেন স্যার।

আচ্ছা শোন আমাদের কাল একবার সাটুরিয়া যেতে হবে। ওখানে নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে কিছু জেলে একটি সিন্দুক পেয়েছে। সিন্দুকের ভেতর একটি বাচ্চা মেয়ের লাশ পাওয়া গেছে।

বলেন কি স্যার ?

হুম !!!

পরদিন খুব ভোরে সাটুরিয়ার পথে রওনা হলাম স্যারকে নিয়ে।

নীল আকাশ ধীরে ধীরে কালো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে। হয়ত কিছুক্ষনের মধ্যেই বৃষ্টি নামবে। আমার জন্য ভালই হল। বৃষ্টিতে লাশের একটি ভাল ব্যাবস্থা করা যাবে। পথে কোন নদী পেলে ফেলে দেয়া যাবে। বৃষ্টিতে নিশ্চয় রাস্তায় তেমন লোকজন থাকবেনা। সুযোগ বুঝে লাশ নদীতে ফেলে দিলেই হবে। একটু একটু কপালে ঘাম জমছে। নাহ আমাকে ঘাবড়ালে চলবে না। খুব সহজেই কাজটি করা যাবে। স্যার এই মুহূর্তে গভীর মনোযোগ দিয়ে আবারও মালতী দেবীর ফাইল নিয়ে বসেছেন। সিট কাভারের ভেতর লুকিয়ে রাখা পিস্তলটি বের করে ঠিক কপালের মাঝখানে একটি গুলি করলাম। মুহূর্তেই মাথার পেছন থেকে কিছু রক্ত গাড়ির পেছনের গ্লাসে ছিটকে পরল। মুষল ধারে বৃষ্টি নেমেছে এরই মাঝে। আমি গাড়ি চালাচ্ছি সামনে কোন নদী পেলেই লাশটি ফেলে দিতে হবে। বহুদিনপর স্যারের সামনে সিগারেট ধরালাম। তৃপ্তিটাই অন্যরকম লাগছে। পেছনে শুয়ে গোয়েন্দা প্রধান শফিক চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে দেখছে আমার আয়েশ করে সিগারেট টানা। তার বোবা কণ্ঠ আমাকে কিছুই বলতে পারছেনা। বেশ মায়াই হচ্ছে তার এমন অসহায়ত্ব দেখে।
অবশেষে লাশ নদীতে ফেলে আমি সিন্দুকটি একঝলক দেখার জন্য সাটুরিয়া পৌঁছালাম। মাঠের মাঝখানে সিন্দুকটি রাখা হয়েছে। তার ভেতর একটি বাচ্চার লাশ দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন চ্যানেল থেকে রিপোর্টাররা এসেছে পুরো ঘটনাটিকে সরাসরি সম্প্রচার করার জন্য। আমি ভিড় ঠেলে সিন্দুকের কাছে যেতেই অহনাকে দেখতে পেলাম। সিন্দুকের ভেতর পরে থাকা মেয়েটিই যে সেই অহনা যাকে আমি তুলে দিয়েছিলাম মর্গের রক্ষীর হাতে। অহনার কিডনি দুটি কেটে নেয়া হয়েছে। বীভৎস দৃশ্যটি আর একটুও আমার পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। সেখান থেকে চলে আসছি যখন আমার মোবাইলে ফোন এলো। স্ক্রীনে আজগর ভাই কলিং লেখা দেখে ফোন রিসিভ করতেই ওপার থেকে উৎসুক কণ্ঠে,

কি ফিনিশ ?

আজগর ভাই ফিনিশ তবে আমি আপনার কাছেই আসছি। পুরনো কিছু হিসাব আপনার কাছ থেকে আজ বুঝে নিতে হবে।

কিসের হিসাবের কথা বলছো ?

টেলিভিশনে দেখুন একটি সিন্দুকের খবর সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে। কথা পুরো শেষ না করেই আমি লাইনটি কেটে দিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলাম। আমার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে গাড়ি ছুটে চলেছে। পেছনে খুব দ্রুত সরে যাচ্ছে আশেপাশের সব ঘর-বাড়ি আর গাছ-পালা। বৃষ্টির পানিগুলো অবিরত পরিষ্কার করে চলেছে উইপার দুটি যেন এই মেঘলা আঁধারেও স্বচ্ছ থাকে জানালার গ্লাস।

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৫ রাত ১১:৪৯
৪৯টি মন্তব্য ৪৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×