somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গরু এবং ধর্ম

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা জানি যে হিন্দু ধর্মে গরুর গোশত খাওয়া নিশেধ আছে ? আসলেই কি তা ?
যে গরু কোরবানি নিয়ে বালতে দেও-ভন্ড রা ফতোয়া পর্যন্ত দিল যে “গরু কোরবানি হারাম”……… আসলে ব্যাপারটা কি ??
নিচে দেখুন এক হিন্দু – ব্রাহ্মণ কি বলছে

রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য ((গতকাল এই লেখাটা একটা গ্রুপে দিয়েছিলাম, বিতর্ক হচ্ছিল বলে
======================
গোমাংস খাওয়া নিয়ে প্রচুর তর্ক বিতর্ক হয়েছে । তাই কয়েকটা কথা বলি । অনেকেরই ধারণা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা গোমাংস খায় না বা খেত না । এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা ।
প্রথমেই বলি, সংস্কৃতে একটা প্রাচীন শব্দ আছে । “ গো-সঙ্খ্য” । এই শব্দটার অর্থ হলো- গো পরীক্ষক । পরে অর্থ সঙ্কুচিত হয়ে “গোপ” হয়েছে ।
এই পরীক্ষা কেন হতো ? কারণ, আর কিছুই না , যে বলদ বা ষাঁড়কে কাটা হবে, তার স্বাস্থ্য কেমন আছে সেটা দেখার জন্য । না পরীক্ষা হলে, সেই মাংস মানুষের জন্য খারাপ হতে পারে ।

মাংস তিন প্রকার :-
ভূচর ( যারা ভূমিতে চরে )
খেচর ( যারা আকাশে ওড়ে )
জলচর ( যারা জলে বিচরণ করে )

এক জলচর বাদে, স্ত্রী- পশু বধ নিষিদ্ধ ছিল, কারণ তাতে প্রজনন কমে যাবে । মাছেদের লিঙ্গ নির্ধারণ করা শক্ত বলেই হয়তো, এই ব্যাপারটা হয়েছিল ।
বৌদ্ধ যুগের আগে , হিন্দুরা প্রচুর গোমাংস ভক্ষণ করতো এ তথ্যও অনেকেই জানেন।
ডাঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ প্রণীত Beef in Ancient India গ্রন্থে, স্বামী ভুমানন্দ প্রণীত অনেক গ্রন্থে, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের ‘জাতি গঠনে বাধা’ গ্রন্থে উল্লেখ আছে।
এসব গ্রন্থ থেকে জানা যায়, বৌদ্ধযুগের আগে গো-হত্যা, গো-ভক্ষণ মোটেই নিষিদ্ধ ছিল না। মধু ও গো-মাংস না খাওয়ালে তখন অতিথি আপ্যায়নই অপূর্ণ থেকে যেতো ।
তাই অতিথির আর এক নাম – গোঘ্ন ।
বৌদ্ধ সম্রাট অশোকের সময় থেকে গো-হত্যা নিষিদ্ধ করা হয়। সুতরাং বৌদ্ধ ধর্মের আবির্ভাব ২০০০ বছর আগে হলেও গো-হত্যা আরও অনেক পরে নিষিদ্ধ হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, সম্রাট অশোকের নিষেধাজ্ঞা হিন্দুরা মানছে কেন?
এটাও ধর্মীয় সংঘাতের ফল । বৌদ্ধ ধর্ম এতই জনপ্রিয় হয়েছিল যে, প্রচুর লোক, বিশেষ করে তথাকথিত “ নীচ জাতি” আকৃষ্ট হয়েছিল, এই ধর্মের প্রতি ।
ব্রাহ্মণ্য বাদী এবং ব্রাহ্মণরা প্রমাদ গুনলো । তারাও পুরোপুরি মাছ- মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়ে ভেক ধারী হয়ে গেল ।
মূলত, এটা উত্তরভারতেই হয়েছিল । তাই এখনও ওটা “গো- বলয়” ।
বেশীদিনের কথা নয়, আলিবর্দির সময়ে রামপ্রসাদের গুরু কৃষ্ণা নন্দ আগম বাগীশ একটা বই লেখে। নাম – বৃহৎ তন্ত্রসার ।
এতেও অষ্টবিধ মহামাংসের মধ্যে গোমাংস প্রথম বলেই বলা হয়েছে ।
ঋগ্বেদে ফিরে আসি । কি দেখছি ? প্রথম মণ্ডলের ১৬৪ সূক্তের ৪৩ নং শ্লোকে বৃষ মাংসের খাওয়ার কথা আছে । মহিষ মাংসের উল্লেখ আছে পঞ্চম মণ্ডলের ২৯ নং সূক্তের ৮ নং শ্লোকে ।
মোষ বলি আজও হয় । নেপালে যারা মোষের মাংস খায়, তাদের ছেত্রী বলা হয় ।
এছাড়া, বনবাস কালে রামচন্দ্রের লাঞ্চের মেনু কি ছিল, অনেকেরই জানা নেই ।
তিন রকম মদ ( আসব ) গৌড়ী, ( গুড় থেকে তৈরি ) পৌষ্টি, ( পিঠে পচিয়ে তৈরি ) মাধ্বী ( মধু থেকে তৈরি ) । এর সঙ্গে প্রিয় ছিল- শূলপক্ব গোবৎসের মাংস ।
বিশ্বাস না হলে রামায়ণ পড়া উচিত । রামকে যদি কল্প চরিত্র বলেও ধরি, তাহলেও এই গুলো তখনকার খাদ্যাভ্যাসের নমুনা ।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×