আজ প্রথম আলো তাদের ২০১২ সালের নভেম্বরে চালানো রাজনৈতিক জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছে। এতে তারা বলছে , বিরোধী দলের প্রতি মানুষের সমর্থন বেড়ে ৪৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে এবং সরকারি দলের প্রতি সমর্থন কমে ৩৫ শতাংশে এসেছে। অর্থাৎ এই মুহুর্তে ভোট হলে বি এন পি ৪৪ শতাংশ, আওয়ামীলীগ ৩৫ শতাংশ ভোট পাবে বলে মনে করে তারা। দলগতভাবে বি এন পির প্রতি মানুষের আস্থা বাড়লেও খালেদা জিয়ার প্রতি নাকি মানুষের সমর্থন কমে ৬৪ শতাংশ হয়েছে । কিন্তু শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন ৬৫ শতাংশের। এটা কিভাবে সম্ভব? প্রধানমন্ত্রীর একেকটা বক্তব্যের পর প্রথম আলোতে সহ সব জায়গায় যে পাঠক প্রতিক্রিয়া দেখা যায় তাতে এটা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা না যে শেখ হাসিনার উপর মানুষ এখন কতটা বিরক্ত। গত বছর খানেক ধরেই প্রথম আলো যে দৈনিক অনলাইন জরিপগুলো চালায় , তাতে সরকারের বিপক্ষে নিয়মিত ৮০-৮৫ ভাগ মতামত থাকে। এমনকি যে হরতালের খবরে সবচেয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখায় প্রথম আলোর সুশীল পাঠকেরা, তারাই গতকাল হরতাল সমর্থনে কমেন্ট করেছে। অনলাইন জরিপে হরতালের সমর্থন এসেছে প্রায় ৮৫ ভাগের কাছ থেকে, যেখানে খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পরে দেয়া হরতালে সমর্থন ৫২ শতাংশের বেশি ছিলো না। এরশাদের জনপ্রিয়তা নাকি বেড়েছে কি এমন করেছে এরশাদ যে তার জনপ্রিয়তা বাড়বে? মনে হচ্ছে দিল্লী থেকে এরশাদ যে আশীর্বাদ নিয়ে এসেছে তার সুফল শুরু হয়েছে। 'র' এর টাকা কথা বলতে শুরু করেছে। দেশের সাধারন মানুষের সাথে কথা বললে স্পষ্টতই ধারনা পাওয়া যায় যে এই মুহ্রুর্তে নির্বাচন হলে আওয়ামীলীগের অস্তিত্ত্ব নিয়েই টানাটানি পড়ে যাবে। কিন্তু সরকারের সেই ভয়াবহ জনপ্রিয়তার ধ্বস ঢাকতে বি এন পি কে আওয়ামীলিগের চেয়ে মাত্র ৯ শতাংশ ভোটে এগিয়ে রেখে প্রথম আলোর এই ভৌতিক জরিপ দেখে মনে হচ্ছে তারা কারো পিঠ বাঁচানোর চেষ্টায় আছে। তবে তা এত সহজ হবে না। ইনু-মেননদের মুখপাত্র এবং ভারতীয় আশীর্বাদ পাওয়া পত্রিকা প্রথম আলো যদি ভাবে এভাবে তারা ইনু-মেননদের বাঁচাবে তবে তা হবে ভুল। তবুও প্রথম আলোকে ধন্যবাদ, নির্লজ্জভাবে ডেইলি স্টারের মত বি এন পির সমর্থন আওয়ামীলিগের চেয়ে কম দেখিয়ে দেয়নি। কে জানে, প্রথম আলো অফিসে বোধ হয় ডেইলি স্টারের চেয়ে কম টাকা এসেছিলো।
প্রথম আলোতে উল্লেখ করা একটা লক্ষ্যনীয় লাইন হচ্ছে, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি (এরশাদ) পুরুষদের কাছে বেশি জনপ্রিয়; বিএনপি নারীদের কাছে। বয়স্ক ও তরুণদের মধ্যে বিএনপি সমর্থন বেশি লক্ষ করা গেছে। অর্থাৎ তরুনদের মধ্যে বি এন পি সমর্থন বাড়ছে। নারীদের মধ্যে বি এন পি জনপ্রিয় এবং এই কারনেই কি কিছুদিন আগে হালনাগাদ করা ভোটার তালিকায় ১৩ লক্ষ নারী ভোটার হাওয়া হয়ে গেলো? যেই রিপোর্ট প্রথম আলোতেই এসেছিলো। এ থেকে প্রমানিত হয় ইতিমধ্যেই সরকার নির্বাচন ম্যানুপলেশন শুরু করেছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য যে সরকার সব ধরনের প্রতারনা, অসৎ উপায় অবলম্বন করবে তার উপযুক্ত প্রমান হচ্ছে এটা। সুতরাং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না, বি এন পির এই অবস্থান আরো অনেক বেশি যৌক্তিকতা পেলো। আশা করা যায় বি এন পি দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষায় এই অবস্থানের জন্য সব শক্তি দিয়ে লড়বে।