আজ প্রথম আলো অনলাইন জরিপের জন্য কে প্রশ্নটা রেখেছে তা হলো, দেশে আবার ওয়ান-ইলেভেনের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য দুই প্রধান রাজনৈতিক দল দায়ী বলে মনে করেন কি?। এখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে ওয়ান-ইলেভেনের মত পরিস্থিতির জন্য দুই দল সমানভাবে কিভাবে দায়ী হয়? বি এন পির এখানে ভূমিকা কি? আওয়ামীলীগ ক্ষমতা দখল করার জন্য অবৈধভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে, এমনকি আগামী দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক রাখার জন্য হাইকোর্টের দেয়া রায় ম্যানিপুলেট করেছে। ক্ষমতা দখলে রাখার জন্য যত ষড়যন্ত্র করা যায় তা সব করছে তারা। হাসিনা ভালো করেই জানেন যে খেলা তিনি এবং তার সরকার দেখিয়েছেন তাতে আবার নির্বাচিত হওয়ার আশা তার নেই বললেই চলে। এখন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলে রাখতে গিয়ে দেশে যদি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়, তার শতভাগ দায় আওয়ামীলীগের। বি এন পির এখানে দায় কোথায়? বি এন পি এখন পর্যন্ত কোন বিধ্বংসী হরতাল কিংবা রাস্তায় নৈরাজ্যকর একটা কর্মসূচি পর্যন্ত পালন করেনি। হাসিনার ক্ষমতায় থাকার খায়েশ পূরনের জন্য আওয়ামীলিগ যে স্বৈরতান্ত্রিক পদক্ষেপ নিয়েছে, সেখানে বি এন পির দায় কোথায়? কিন্তু প্রথম আলো সূক্ষ্ম কৌশলে আওয়ামী অপকর্মের ভার সমানভাবে বি এন পির ঘাড়ে চাপাতে চাইছে। যেখানে বি এন পির কোন ভূমিকাই নেই।
আওয়ামীপন্থীরা এটা দেখে খুশি হয়ে যাবেন না। প্রথম আলুর চাল অনেক মারাত্বক। তারা আবার সুকৌশলে এক-এগারো আনার জন্য এ ধরনের বিতর্কিত প্রশ্ন ছড়াচ্ছে। প্রথম আলো ভালোমতই জানে , নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বি এন পি আসবে ক্ষমতায়। আওয়ামীলিগ থাকবে বিরোধী দলে। তারা এটাও জানে বি এন পি কেন কোন দলই তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া নির্বাচন মেনে নেবে না। দেশে-বিদেশে কোথাও এই নির্বাচন গ্রহনযোগ্য হবে না। সুতরাং এই অস্থির পরিস্থিতিতে আওয়ামীলিগ এম্নেতেই বেকায়দায় পড়বে আর সামনের সম্ভাব্য ক্ষমতায় আসা দল বি এন পির ঘাড়েও যদি কিছু দোষ কায়দা করে চাপিয়ে দেশের মানুষকে আরেকবার গনতন্ত্র বিমুখ করে ভারতপন্থী মইন-ফখরুর মত কাউকে ক্ষমতায় আনা যায় তবেই লাভ। ভুলে যাবেন না, এই প্রথম আলুই মাইনাস টু ফর্মুলার প্রধান মিডিয়া পার্টনার ছিলো। মতি এই ফর্মূলা বাস্তবায়নের জন্য সব চেষ্টাই করেছে। আরেকবার শুরু হয়েছে সেই খেলা। গতবারের প্রধান টার্গেট ছিলো বিরোধীদলীয় নেত্রী থাকা হাসিনা। এবার খেলার প্রধান টার্গেট হবেন বি এন পি নেত্রী খালেদা জিয়া। কাজেই সামনে এখন প্রশ্ন চলে আসছে, কার উদোম পাছা বাঁচানোর জন্য আবার মাঠে নামছে মতি বাহিনী? ভারত থেকে আবার টাকা শুরু হয়ে গিয়েছে? এবার গনতন্ত্র হত্যার জন্য কত কিছু করার পরিকল্পনা আছে এদের?
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরনের উপায় একটাই। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার খোয়াব পরিত্যাগ করে হাসিনাকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। যদি তিনি তা না করে ক্ষমতার লোভে প্রথম আলুর পাতা ফাঁদে পা দেন, তবে তার অবস্থা কোনভাবেই গতবারের বি এন পির চেয়ে ভালো হবে না। কাজেই সাধু সাবধান।