ধরেন..
আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমি শুয়োর কিংবা কুকুরের সাথে তুলনা করলাম। তাকে নিয়ে অনলাইনে, এখানে-ওখানে নিন্দা রটালাম। গালিগালাজ করতেও ছাড়লাম না। তারপর কি হবে, বলেন তো?
.
চব্বিশ ঘন্টাও লাগবেনা। ধরে নিয়ে যাওয়া হবে আমাকে। রিমান্ডে নেয়ার নামে হাড়গোড় ভেঙ্গে দেয়া হবে আমার। যত রকমের কষ্ট আছে, সবই দেয়া হবে আমাকে।
.
জীবনের ৯৫% শুষে নেবে আমার। বাকি ৫ রেখে যদি ছেড়েও দেয়, তাও থাকবেনা.. বাংলার দামাল সোনার ছেলেদের দয়ায়।
তাদের নেত্রীর অপমানের প্রতিশোধ হিসেবে জবাই করবে আমাকে, নয়তো পেটে ছুড়ি ঢুকিয়ে ভুড়ি ফুঁটা করবে আমার। শুধুমাত্র কিছু গালিবাজি, কিংবা অপমানের বিনিময়ে জীবন ঝরবে আমার।
অস্বাভাবিক কিছুই না। খুব স্বাভাবিক..
.
সোনার ছেলেদের বিরুদ্ধে যদি আমার পরিবার পুলিশের কাছে ছোটে, তখন কি হবে... জানেন?
.
কোন অভিযোগ নেবেনা কোন পুলিশই। আর নিলেও, তা তুলে নেবার জন্য আমার পরিবারকে হুমকি দেবে সোনার ছেলেরাই।
অতঃপর পরিবার বাঁচাতে পিছু হটবেই আমার মা-বাবা। পরাজয়কে দুর্ভাগ্য ভেবে নতুন করে বাঁচতে চাইবে।
এটাও স্বাভাবিক। অস্বাভাবিক কিছুই না।
#
যাক ওসব....
আমার মত একজন আমজনতা মরলে সন্মানীয় শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়া, কারোরি কিছু যাবে আসবেনা। এবার কাজের কথায় আসি।
.
ব্লগার হত্যার দায়ে দুজনের ফাঁসির রায় দিলো কোর্ট। কয়েকজনকে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা। আগেই জানতাম, এ রায়ই শুনবো। শুনবে সারাদেশ। তাই আর অবাক হয়ে সময় খরচ করিনি।
বিরোধী দলের হাতের পান থেকে চুন খসলেই যেখানে প্যাদানি দেয়া হয় ধরে এনে! সেখানে মানুষ খুন!! কিছু না করে ছেড়ে দেবে, ভাবা যায়??!
.
ধরলাম, ফাসিঁর রায়টা পুরোটাই যথার্থ। কোন বিশ্লেষণে গেলাম না। দোষীকে তার প্রাপ্য শাস্তি দেয়া হয়েছে।
.
কিন্তু আমার কথা......
মুক্তমনা ব্লগাররা যখন আমাদের নবী রাসুলকে নিয়ে ব্যাঙ্গ করে, শুয়োর... কুকুরের সাথে তুলনা করে, আল্লাহ্ তাআলার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে... তখন কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কিছুই করার থাকেনা? শুনেছি, তিনি নাকি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। কোরআন পাঠেও তেমনই নিয়মিত।
তিনি এত আল্লাহ্ ভক্ত.. তাহলে আল্লাহ পাক এর এরূপ অপমানে তিনি কোন নিয়মে চুপ থাকেন?? জানতে ইচ্ছে করে।
.
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নামে মজা করে অনলাইনে কিছু লিখলেই ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, আল্লাহ্- নবীকে যে যা খুশি বলতে পারে। সে অধিকার সবার আছে। তাদের কোন শাস্তির বিধান রাখা হয়নি মে বি বাংলাদেশের সংবিধানে।
.
# কিছু কথাঃ
.
একটা প্রশ্ন আমার....
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কি নবী-রাসুল, কিংবা আল্লাহর চেয়ে বেশি সন্মানীয়? বেশি ক্ষমতাধর? তিনিই ভাল জানেন সেটা।
.
মুক্তমনা মানেই যে নাস্তিক, সেটা আমরা ভাবতে চাইনি। বাধ্য করা হয়েছে আমাদের । মুক্ত মানে এই না যে কোন ধর্মকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করতে হবে। সারা বিশ্বের সকল ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধারণা... মুসলিম মানেই জঙ্গী । ইসলাম মানেই জঙ্গী তৈরীর আস্তানা । বাংলাদেশেও তার ব্যতিক্রম নেই । সরকার মুক্তমনাদের জন্য বিশেষ আইনী নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। মুক্তমনা মানে যদি মুক্তভাবে নিজের মনের কথা প্রকাশ করাকে বোঝায়। আর যে কারোর ই যদি মুক্তমনা হবার অধিকার থাকে, তবে আমরাও মুক্তমনা। সরকার সহ বিরোধী দলের সকল ভুল ত্রুটি নিয়ে আলোচনা করার অধিকার আমাদেরও আছে।
.
কিন্তু আফসোস!! সেটা করার অধিকার আমাদের নেই। করতে গেলেই রিমান্ড।
.
খারাপ লাগে, চোখের সামনে কোরআন পোড়াতে দেখলে । নবী রাসুলকে নিয়ে কাউকে গালিগালাজ করতে দেখলে। -_-
.
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কিছু বললে যেমন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, পুলিশ কষ্ট পায়... তেমনি নবী রাসুলকে নিয়ে কিছু বললে ইসলামকে শ্রদ্ধা করে, এমন যে কারোরই বুকটা চিনচিনে ব্যাথায় ভরে উঠবে ।
.
তাই বলি, রাজনীতিতে প্লিজ ধর্মকে জড়াবেন না। সবাই নিজ নিজ ধর্মকে ভালবাসে।
ভাল থাকবেন...
সবাইকে হ্যাপি নিউ ইয়ার..