somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টিভি সিরিয়াল রিভিউ ( Messiah)

০৩ রা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গত বছর শেষ হলো ঘোরাঘুরি, আনন্দ ফুর্তি আর খাওয়া দাওয়া করে করে ।সে আনন্দের ঠেউ এ বছরের প্রথম দিনকে ছাপিয়ে গিয়ে গড়িয়ে গিয়েছিলো মধ্য রাত অব্দি। আনন্দের রেষ ঘুমিয়ে পড়েছিলো ভোর ৪টায়। তারপর নতুন বছরের আলো দেখতে পাই সকাল ১০টায়। বছরের প্রথম দিন কেটেছে আলসেমিতে। বিকেল ৫টায় নেটফ্লিক্স অন করে দেখি নতুন সিরিয়াল এসেছে Messiah, সেটা অন করে দেখতে শুরু করলাম। শুরুটাই আমার মনযোগ আকর্ষণ করেছে। প্রথমেই সিরিয়ার যুদ্ধ, প্যালেস্টাইন এবং ইজরাইল ক্রাইসিস দিয়ে শুরু হয়েছে ।পরে যতই এগিয়ে যাচ্ছে ততই বুঝতে পারছিলাম ব্যপারটি আসলে শুধুমাত্র যুদ্ধ, ক্রাইসিস এসব নয়। এটা তার থেকেও অনেক বড় যুদ্ধ, একেবারেই অভিনব আধুনিক যুদ্ধ- ওয়ার অফ আইডিয়া। অনেক কিছুই বলার চেষ্টা চলেছে তবে আমার কাছে মনে হলো ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু কিছু ব্যপার দুর্বোধ্য করে রাখা হয়েছে বিতর্ক এড়ানোর জন্য।

আল- মাসিয়ার ভূমিকায় যে ছিলো তার চেহারা যীশু ক্রাইস্ট এর সাথে অনেক মিল।তাকে প্রথম দেখা যায় সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাস এর এক যুদ্ধে প্রিচারের ভূমিকায় । কেউ জানে না সে কোথা থেকে এসেছে। তার নাম পরিচয় কোন কিছুই জানা নেই কারো । কিন্তু তার রয়েছে গভীর ভাবে সম্মোহন করার ক্ষমতা।তার কোন নাম আছে কি নেই তাও কেউ জানে না, সে তাকে পরিচয় দেয় মাসিয়া অর্থাৎ মেসেঞ্জার অথবা নবী হিসেবে। তাকে এখানে জঙ্গি হিসেবে দেখানো হয়নি, এমনকি শান্তির দূত হিসেবেও দেখানো হয়নি। বরং দেখা যাচ্ছিল একদল মানুষ সম্মোহিত হয়ে দলে দলে ঝাঁকে ঝাঁকে কীভাবে তাকে ঘিরে রেখেছে। আদি যুগে মানুষের অনেক কিছুই ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা ছিল না তাই যে কোন con artist এর ট্রিক ধরার ক্ষমতা ছিলো না, যে কোন যাদু ইলুশনে সহজেই কনভিন্স হয়ে যেত। কিন্তু এই একুশ শতকের আধুনিক মানুষেরা কীভাবে সম্মোহনের শিকার হয় সেটা নিয়েই ভাবছিলাম সিরিজ গুলো দেখতে দেখতে।

তবে মানুষ চিরকালই অসহায় ছিল, আছে এবং থাকবে।এই পৃথিবী, বিশ্বজগত এবং আমাদের জীবন এবং পরবর্তী জীবন সবসময়ই ধাঁধাময়, রহস্যের এবং অব্যাখ্যেয়। যার ফলে একটি সুশৃঙ্খল স্ট্রাকচার না থাকলে এই অসহায়ত্ব কঠিন থেকে কঠিনতর হতে থাকে। সে জন্যই হয়তো চলার পাথেয় হিসেবে এসেছে নানান বিধান যেটা কিছু কিছু মানুষের মাঝেই predispose করা আছে এই বিশ্বজগত সৃষ্টির প্রারম্ভেই। আমারা হয়তো এটাকেই আধুনিক যুগে Messiah syndrome বলছি।

প্রথমে কয়েকটি সিরিজ দেখে আল- মাসিয়াকে মনে হয়েছে ইন্টারন্যশনাল পলিটিক্স এর অংশ, কারন CIA এর এক অফিসারের ইনভেস্টিগেশনে অনেক অজানা তথ্য উঠে এসেছে মাসিয়ার ব্যপারে। কিন্তু পরে হোয়াইট হাউজের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তার ষড়যন্ত্র এবং দুর্নীতির কারনে অফিসার ইভার ইনভেস্টিগেশন বিঘ্নিত হয় । হয়তোবা পরের সিজনে আরও পরিষ্কার হবে। তবে শেষ সিরিজে এসে সত্যিই কনফিউশনে পরে গিয়েছি মাসিয়া আসলে কে?

আমি এক নিঃশ্বাসে ১০টি সিরিজ এক বসায় দেখেছি, পরের দিন সকালে ওঠার তারা ছিল না বলে। এরকম এক বসায় ১০ ঘণ্টা টিভি দেখা সত্যিই পাগলামির পর্যায়ে পরে। কিন্তু সিরিসগুলো এতোটাই টানছিল যে কিছুতেই না শেষ দেখে উঠতে পারছিলাম না। তবে মাঝে মাঝে পাগলামি কিছু না করলে জীবনটাকে রবোটিক মনে হয়, সে দিক থেকে ঠিকি আছে।

আর সিরিজ ভালো লেগেছে কিনা ঠিক বুঝতে পারছি না। সেক্ষেত্রে ভালো লাগার ডেফিনেশন সম্পর্কে আরও একটু ভাবার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে আমাকে ধরে রেখেছে শেষ অব্ধি এবং পরের সিজনের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছে বলে মনে হচ্ছে আমিও সম্মোহনের শিকার হয়তোবা।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৫৮
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×