আমার বিড়ালটিকে প্রথম যখন ভেটের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম তখন ওরা বলছিলো বিড়ালটিকে নিউটার করিয়ে ফেলতে। কিন্তু আমি সেটা করতে চাইনি। কারণ আমি চেয়েছি আমার বিড়ালটি ন্যচারাল ভাবে বেড়ে উঠুক, প্রেগন্যান্ট হোক এবং অনেক গুলো বিড়ালের বাচ্চা আসুক। সেই সাথে আমার বাচ্চারা দেখুক এই ন্যচারাল প্রসেসটি। মা বিড়াল এবং বাচ্চাদের ভালোবাসাটি চোখের সামনে দেখুক। প্রথম বারের ভেট আমার ইচ্ছার প্রাধান্য দিয়েছে হয়তোবা, তাই আর তেমন কিছু বলেনি। কিন্তু বিড়ালটি যখন সাত কি আট মাস তখন আরেকজন ভেট বলল নিউটার করিয়ে নিতে এবং সে আমাকে জানালো যে, এখন আর ন্যাচারাল বলতে কিছুই নেই। কারন আমরা পৃথিবীকে এমন ভাবে আর্টিফিশিয়ালি প্রটেক্ট করে রেখেছি যে ন্যচারাল অপশন আমাদের জন্য খোলা নেই। ন্যচারাল পথে বিপদের সম্ভাবনা অনেক বেশী। তাই বিড়ালকে প্রেগন্যান্ট হতে দেয়া মানে বিপদ নিয়ে আসা।বেশ চিন্তায় পরে গিয়েছিলাম, অনেক ভাবলাম বিষয়টি নিয়ে। আমার নিজস্ব কিছু থিওরি আছে সেগুলোই আজ একটু বলতে চাচ্ছি। জানি এ বিষয়ে মানুষের আগ্রহ কম। তারপরও বলছি.
ধরুন একটি প্রকাণ্ড উল্কা পৃথিবীর দিকে সর্বচ্চ গতি নিয়ে এগিয়ে আসছে এবং আমাদের পৃথিবীতে রয়েছে মহা শক্তিধর বিজ্ঞানী যার অসাধারণ আবিষ্কার উল্কার গতিপথ পরিবর্তন করে অন্য দিকে সরিয়ে দিয়েছে। আমারা ভীষণ খুশী, আমাদের পৃথিবী এবারের মত বেঁচে গেলো, অনেক গুলো প্রাণ বেঁচে গেলো। কিন্তু দেখা গেল বেশ কিছু কাল পরে আমাদের মানব জগত অর্থাৎ আমাদের পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গিয়েছে। কারণ হিসেবে দেখা গেলো ঐ যে উল্কার পথ আমরা পরিবর্তন করে দিয়েছি সেটা সমগ্র ছায়াপথের নানান গ্রহ উপগ্রহের গতিপথ পরিবর্তন করে দিয়েছে যেটা প্রায় সব জায়গায় একটি লন্ঠভন্ঠ অবস্থা তৈরি করে শেষমেশ আমাদের পৃথিবী সহ অন্যান্য অনেক গ্রহ উপগ্রহ এমন কি নক্ষত্রকে দারুন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলেছে । আসলে আমি বলতে চাচ্ছি প্রকৃতির একটি নিজস্ব গতি রয়েছে এবং গতি পথ রয়েছে সেখান থেকে সেটাকে এক চুল এদিক সেদিক করলেই সমগ্র সাজানো গোছানো বিশ্বজগত চুরমার হয়ে যেতে পার। সমগ্র বিশ্বজগত এমন একটি ম্যাথম্যাটিকাল ইকুয়েশনের মধ্যে দাঁড়িয়ে আপন মনে ঘুরছে যে সামান্য কসমিক ডেসট্রাকশন এনে দিতে পারে ভয়ংকর ধ্বংস। কেউ কেউ রেফারেন্স চাইতে পারেন। আবার বলতে পারেন, এসব ফালতু কথা কৈ পাও? আমার কাছে কোন রেফারেন্স নেই, আমার চিন্তাশীল মানব মস্তিষ্ক এমন করেই ভাবে। এক সময় এতো ডকিউমেন্টারি দেখেছি বিশ্বজগত নিয়ে যে, ছোট মস্তিষ্ক আর ধারণ করতে পারছিলো না বলে দেখা বন্ধ করে দিয়েছি। যখনই পৃথিবীতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে, আমার কাছে মনে হয় নিশ্চয়ই আমাদের কোন ভুলের কারনেই এই দুর্যোগ, দুর্ভোগ। জী, অস্ট্রেলিয়ার মহা প্রলয়ংকারি অগ্নিকাণ্ডের কথাই ভাবছিলাম। প্রাণী গুলোর জন্য খুব খারাপ লাগছে।
হয়তো সেই ভেট ঠিকি বলেছে, আমাদের হাতে ন্যচারাল অপশন খোলা নেই। আগে ছিল natural selection অথবা survival of fittest. আরেকটু খোলা করে বললে বলা যায়, you have to be naturally fit to live in a particular environment. কিন্তু বিজ্ঞান এতো এগিয়ে গিয়েছে যে আপনাকে আর্টিফিশিয়ালি ফিট বানাতে পারবে। বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে নানান রকম ভ্যাক্সসিনের কারনে শিশু মৃত্যুর হাড় কমে গিয়েছে, কিন্তু অটিজমের সংখ্যা বেড়েছে। যদিও অনেক বিজ্ঞানীরাই এ বিষয়ে একমত নয়। কেউ বলে GMF( Genetically Modified Food) এর জন্য দায়ী। কিন্তু আমি বলি, যেটাই হোক অপ্রাকৃতিক উপায়ে কোন কিছুই ভালো হবার কথা নয়। মানুষ বৃদ্ধি পেয়েছে জগতে, প্রকৃতিকে চেপেচুপে খাদ্যের পরিমাণও তো বাড়াতে হবে, তাই না। যে কোন সমস্যাই এভাবে চক্রবৃদ্ধি হারেই বাড়ে। তবে হ্যাঁ, ভ্যাক্সিন কখনোই বন্ধ করা উচিৎ নয়, কারন আমাদের কাছে আর ন্যচারাল আপশন খোলা নেই। বন্ধ করলে ইনস্ট্যান্ট বিপদ ডেকে আনবেন। যদিও এক বিপদ উতরে গেলেও অন্য আরেকটি অজানা বিপদ এসে হাজির হয় । আবার ভাববেন না যে আমি অবৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার মানুষ। আমি মোটেও তা নই। বিজ্ঞানীদের নব নব উদ্ভাবনে মাঝে মাঝে অতি খুশীতে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই, আহা কি দারুন সব উদ্ভাবন! কিন্তু অসাধু বিজ্ঞানীদের ব্লাইন্ড ফোল্ডেট অসাধু বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে আমি সাপোর্ট করি না।
এতো কথা লেখার কারণ হচ্ছে এই আধুনিক জীবন যাপন আমাদের ইকোসিস্টেম নষ্ট করে ফেলেছে। তাই আমাদের এই সুন্দর প্রকৃতির সাথে আমাদের আর সখ্যতা নেই। এজন্যই সে বৈরী রূপ ধারণ করে আমাদের ভয় দেখায়। খুব তারাতারি হয়তো আমাদের মানব সভ্যতা ধুয়ে মুছে নিঃশেষ করে দেবে।সবই বুঝি কিন্তু সেই ছোট মেয়ে Greta Thunberg এর মত low emission নৌকায় করে দেশ বিদেশ যাত্রা করা আর পৃথিবীর জন্য তার মত করে চিন্তা করার সাহস কি আমাদের আছে!
ছবি সূত্রঃ ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৪