পুলিশ যাকে পিটুনি দিতে বাগে পেয়ে যায় সে হতভাগা আহ্ করলেও পেটায়, উহ্ করলেও পেটায়, পড়ে গেলেও পিটায়, জ্ঞান হারালেও পিটায়।তা দেখে প্রতিবাদ যে করে তাকেও সমান পেটায়। পুলিশের পেশা এখন পাবলিক পিটানো। পাবলিককে পুলিশের যত ভয়।
গণতন্ত্রের ধারণাটা সেকেলে হয়ে গেছে। তাই এই মরার দেশে গণতন্ত্র নির্বাসনে; এখন চলছে শাসকতন্ত্র; এখানে জনগণ নয়, শাসকদলই সকল ক্ষমতার উৎস । এদেশে জনগণ সরকার বদলায় না বরং সরকারই জনগণ বদলায় । সেলুকাস এই দেশ। জনগনের টাকায় কেনা অস্ত্র, জনগণের গোলাম; সেই জনগণের উপরই চলে নির্যাতনের স্টীম রোলার! ধন্য এই দেশ। ধন্য এই দেশে জনম নেয়া ।
দেশে যা-ই ঘটুক, প্রতিবাদ করা যাবে না। কৃতদাসের মত দাঁতে দাঁত চেপে হলেও ধৈর্য ধরে সহ্য করতে হবে। অথচ এদেশের জন্ম হয়েছিল প্রতিবাদের মাধ্যমে। এদেশের ভালো যা কিছু তা এসেছে প্রতিবাদের মাধ্যমে। তাহলে এখন প্রতিবাদ নয় কেন? জাতীয় কোন ইস্যুতে প্রতিবাদ করতে গেলেও কেন সরকার নিরস্ত্র জনতার প্রতি মারমুখো হয়ে উঠে? কীসের এত ভয়?
যখন প্রতিবাদকারীদের পিটিয়ে প্রতিবাদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিল তখন চুপ থেকেছেন, এমন কি তা সর্মথনও দিয়েছেন, এখন আর প্রতিবাদ করার কেউ নেই, তাই কথ বললেই পিটুনি খেতেই হবে, এটাই স্বাভাবিক।
শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ যখন পুলিশ দ্বারা আক্রান্ত হয় তখনই সরকার পতন ঘনিয়ে আসে। সামনের দরজা - নির্বাচন অথবা পিছনের দরজা দিয়েও তা হয়। কিন্তু যে কোন উপায়ে পরিবর্তন হলেও পুলিশের কোন ক্ষতি নেই। যারা ক্ষমতায় ক্ষতিটি তাদের। তাই ক্ষমতায় ঠিকে থাকার জন্য ভাল পথটি ক্ষমতায় থাকতেই বিবেচনা করে দেখা দরকার।
রাজনৈতিক দল, সরকার ও রাষ্ট্র এই তিনটা প্রতিষ্ঠানকে ক্ষমতাসীনরা সঠিকভাবে উপলদব্ধি করে পরিচালনা করতে না পারলে ব্যর্থতা আসে। নীতি, আদর্শ, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, কর্মসুচী, প্রোগ্রাম; বিশেষ করে ক্ষমতায় গেলে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কি করবেন ইত্যাদি বক্তব্য প্রচার করে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করে এবং নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে সরকার গঠন করে। কিন্তু অঙ্গীকারকৃত সকল প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করতে হয় রাষ্ট্র ব্যবস্থার মাধ্যমে। রাষ্ট্র ব্যবস্থা মোটামুটিভাবে স্থায়ী একটা সামাজিক প্রতিষ্ঠান। রাজনৈতিক প্রোগ্রাম ও অঙ্গীকার নিয়ে সরকার আসে এবং সরকার রাষ্ট্র ব্যবস্থার তুলনায় ক্ষণস্থায়ী ও পরিবর্তনশীল। রাজনৈতিক প্রোগ্রাম ও অঙ্গীকার বাস্তবায়নে রাষ্ট্র ব্যবস্থার কাঠামো অনুকূল না হলে সরকার ব্যর্থ হয়।
প্রতিবাদ করছেন তো মরছেন । সুতরাং কোন প্রকার প্রতিবাদ করা চলবে না, শুধু মুখ বুজে, দাঁত খিঁচে সহ্য করে যেতে হবে । মুখে গণতন্ত্র বলতে বলতে শাসকগোষ্ঠী অজ্ঞান। প্রকৃত গণতন্ত্র সম্ভবত এমনই-শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদীর বুকে পুলিশের বুটের লাথি!
শালার রক্ত দিয়ে কিনেছিলাম এমন স্বাধীনতা?
বাঙালি তুমি জন্মেছ কেবল মার খেতে, স্বাধীনতার পূর্বে নিরস্র জনতা কে কারণে অকারনে পাকিস্থানিরা মারত। আজ স্বাধীন দেশে নিজ দেশের র্যাব পুলিশ ও মারে। শাসক বদলেছে মারের ধরন বদলায়নি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:১৩