শুরতে একটা ছোট গল্প বলি, “শরীরটা কয়েকদিন ধরে খুব খারাপ। জ্বর, ঠাণ্ডা, মাথা ব্যাথা সেই সাথে চিকুনগুনিয়ার ব্যাথার মত শিরায় শিরায় ব্যাথা। শরীরের এই অবস্থা নিয়েও ভাবলাম অফিস করি, কাজের মধ্যে থাকলে ভালো লাগবে। খুব স্বাভাবিক আপনি যখন ব্যাস্ত থাকবেন তখন আপনার অন্যান্য ব্যাপারে চিন্তা চেতনা কম থাকবে। কিন্তু ভাই এটাতো শরীর ব্যাস্ততা বাড়লে জন্ত্রনাও বাড়ে।
সকাল থেকে টানা সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করলাম, তারপর সন্ধ্যায় বাসায় আসার জন্য বেড় হবার একটা প্লান চলছে, ঠিক সেই মুহূর্তে আপনার একটা একটা ম্যাসেজ আসলো যত রাতই হোক অফিস থেকে যেন তার পারমিশন না নিয়ে বেড় না হই। ক্লান্ত শরীর সারা দিন অফিস করে আরও ক্লান্ত, তখন আপনার মুড বা মেজাজ কেমন হবে যখন বাসায় ফিরবেন কিন্তু আপনাকে ফিরতে দেওয়া হবেনা এবং পড়ের দিন সরকারি ছুটির দিন, এমনকি ওইদিনও আপনাকে অফিস করতে হবে। এমতাবস্থায় বসকে বললাম, স্যার আমিতো অসুস্থ ঠিক মত বসেই থাকতে পারছিনা। উত্তর, আমি কি করবো।”
এর পরে উক্ত গল্পে যাই ঘটুক না কেন সেটা যে চাকরি করে তার পক্ষে যায়নাই সেটাই হয়ত আমরা বলে থাকব স্বাভাবিক। ব্যাপারটা আমাদের জন্য সত্যিকার অর্থেই স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আমরা যারা চাকরি করি আমাদের কোন ব্যাক্তিগত জীবন থাকতে পারেনা কারন আমাদের বসের ব্যাক্তিগত জীবনে সমস্যা হয়। আমাদের ব্যাক্তিগত কোন মানুষ থাকতে পারেনা কারন আমাদের বসের ব্যাক্তিগত জীবনে সমস্যা হবে। আমাদের ব্যাক্তিগত কোন ইচ্ছা থাকতে পারেনা, থাকলে বসের কাজে কম পড়ে যাবে। আমরা আমাদের ইচ্ছায় খাইনা, বসের ইচ্ছায় খাই। আমরা আমাদের ইচ্ছায় ঘুমাই না, বসের ইচ্ছায় ঘুমাই। আমরা আমাদের ইচ্ছায় অফিস থেকে বেড় হতে পারিনা, বসের ইচ্ছার উপর ভিত্তি করে বেড় হই। এমনকি একটু ওয়াশরুমে গেলেও বসের ইচ্ছায় যেতে হয়। কারন আমরা চাকরি করি। আর চাকরি এই কথার যদি সন্ধি বিচ্ছেদ করা হয় তাহলে চাকর কথাটা শুরুতে চলে আসে।
একটা প্রবাদ কথা আছে হয়ত অথবা আমিই কিছুটা পরিবর্তন করে আমার মত সাজিয়ে নিলাম, “বুদ্ধিমান বসেরা এমপ্লোয়িদের করে বন্ধু, কাজ করিয়ে নেয় বেশি তাদের ইচ্ছায় আর নিজে হয় লিডার উল্টাদিকে বলদ বসেরা এমপ্লোয়িদের বানায় চাকর আর কাজ করায় গাধার মত জোড় করে আর নিজে হয় গাধার বস।”
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪৭