somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সে খোঁপা বেঁধে বসুক ছন্নফুলী, হাওয়াবসতি নিয়ে আমি সঙ্গী

১৯ শে মে, ২০১০ রাত ৯:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


খরগোশ আর কুকুরের ভ্রাতৃত্ব নিয়ে এই শহর, ব্রোসার্ড, সারা সকাল সমগ্র দুপুর ভিজতেছিলো ঘ্যানঘ্যানে বৃষ্টি ও গুচ্ছ তুষারে। আর বিষাদপ্রত্ন নিয়ে সারি সারি ফিরছিলো মানুষদের গাড়ি চটক বাড়ি বাড়ি।
আমি চশমা খুলে রেখে-ও দৃশ্যায়নের আন্তরিকতায় চপল হয়ে উঠি। প্রগলভ কণ্ঠে ডাকে কাঁথা-লেপ-বিছানা, 'কালরাতের না ঘুমানো ঘুমটুকু বুঝে নাও।'
আবহাওয়া বার্তায় মোতাবেক জানতে পারি বিকেলে রোদের ক্ষমতায়ন হবে। ফলে উঠোনে আচার রোদে দেয়ার মতো সাময়িক উষ্ণতায় চঞ্চল হয়ে উঠবে বিমর্ষ দালান-রেস্তোরা-জাদুঘর।
এমন দিনে তোমাকে কাছে পেলে খুব ভাল্লাগে, সঙ্গে না থাকলে-ও দ্ব্যর্থহীন কিছু কথা বলে নেয়া যায় ভ্রাম্যফোনে।


ক্লান্তি নিয়ে দেখি ভুল চোখ। কান্না কান্না লাগে, হাঁসেরা কাঁদে না বলে পুকুরগুলো নদী হয়ে যায় না।
আমি অনেকটা কাল তার নাম ভুল জানতাম। তার নাম ছিল কমলা, আমি ভাবতাম কমল। তার রঙ ছিল বাদামী, শাড়ি পরত হলদে-খয়েরী। সে বাচাল ছিলো, তার হাতের কাঁকন পায়ের নূপুরে শব্দপ্রহার।
তবু-ও বিপ্রতীপ ছায়া দেখে প্রবোধ দিই। আলোর পরিলেখ মানে অন্ধকারের রেললাইনের বেঁকে যাওয়া। সে খোঁপা বেঁধে বসুক ছন্নফুলী, হাওয়াবসতি নিয়ে আমি সঙ্গী হতে পারি।
আমি আসলেই তার নাম ভুল জেনেছিলাম। সে আমার ভুলজনমের ছকখড়ির দাগ।


কতো অদ্ভুত মানুষের দেখা পাই। কেবল তোমার আর ঈশ্বরের টিকি দেখি না। তুমি ঈশ্বরী নও, আমি জানি। তোমাকে আমি বড়জোর দেবী বানাতে পারি। তা-ও হতে দিবো না।
একটা মানুষ- একজন নিরবিচ্ছিন্ন সঙ্গী হও তুমি। আমার অবুঝপনাকে দেখে দেখে রাখবে। সকালে উঠে তোমার সিঁথির পাশে নবান্নরোদ দেখে আমার কাজে যেতে ইচ্ছে না হলে কিছু না বলে আপেলসময় জন্ম দিবে। আমার কান্না-হাসি সর্বোপরি রিপুর সবটুকুকে মানুষীয় জাদুঘর হয়ে সংরক্ষণ করে যাবে। বিনিময়? আমি বিনিময়ে কিছু দিতে পারব না, হয়তো। কিন্তু বিশ্বাস করো, তোমাকে দেখে দেখে প্রশস্ত সময়গুলো কাটিয়ে দিতে পারব, মাইরি বলছি।


রাষ্ট্র ব্যক্তির নিরাপত্তা না দিতে পারলে বিপ্লবীর জন্ম হয়, অতিবিপ্লববাদ ভয়ানক।
সংসারকে একটি রাষ্ট্র ভেবে নাও না… আপামর জনতাকে শাসন করার মতো আমরা-ও কি জড় চেয়ার-পালঙ্ক, নতুন কেনা আসবাবপত্রকে নিয়ন্ত্রণে রাখছি না? কই এরা কেউ বলে না আমাদের শীতলবায়ুর কথা।
তুমি হয়তো ঘুম ভেঙে ফেলেআসাদিনের কথা ভেবে কাঁদবে; মশারির ফাঁক দিয়ে গলে পড়বে স্বপ্নবাতির আলো, সেইসব তোমার ছিলানোশশার মতো ঠোঁটকে স্পর্শ করবে না- তুমি তখন নতমুখে চুলকে মেলে ধরবে। আমি পাশ ফিরে শুতে গিয়ে টের পাব মেইলট্টেনের নির্জনতা নিয়ে বসে আছো তুমি। আমি নিঃশ্বাস গোপন করে হাত বাড়াতে গিয়ে ফিরিয়ে নেবো: তুমি কাঁদো, জীবনে অনেক কাঁদার সময় আছে বলে আমরা সংসার করতে পারি। আমি মিলিয়ে মিলিয়ে সাপের ঘরে লুডো নিয়ে গিয়ে-ও জিতে যেতে পারি।
তোমার সেইসব নিরব কান্না উৎসাহপ্রপাত। তুমি জানো না, জানো না স্খলিত হাত-ও লিখতে পারে মৃত্যুকাব্য কিংবা স্বর্গগান।


দূরবর্তীনৌকাডেকেডেকেজলেফিরেঢেউ
অলব্ধরোদেমহাবিশ্বআছেক্যানভাসেরঙ
বাঁধভেঙেখোকারাওইঁদুরবেড়ালখেলে
অপ্রস্তুতশীতেস্বপ্নেরবিনিময়েম্রিয়মানউষ্ণতা

স্বনিশ্বাসেরমাঝেলাবণ্যনিশ্বাসেরপুঁজি


শিল্প নিয়ে কথা বলতে মনে পড়ে সেই ববকাটের মেয়েটির কথা- শিল্পী। সে হাসির খই ফেলে রেখে হয়তো অনেক মেঠো ইঁদুরকে আকৃষ্ট করতে পারে নি, তবে কয়েকটি বালককে সাঁতার না জেনে-ও পুকুরে ঝাঁপ দেয়ার সাহস জুগিয়েছিলো।
সময় নিস্তেজ হয়ে গেলে মরা সাপের মতো লম্বাটে হয়ে যায়। আমরা একটি সাপ ও সময়ের মৃত্যু দেখি। মূলত যেকোন মৃত্যু আশাবাদ দৃষ্টিকোণ থেকে অপ্রত্যাশিত, তবুও মানুষ সময়ের মৃত্যু চায় অবচেতনে- পঞ্চাশ হাজার বছর ধরে এই হোমো স্যাপিয়েন্স দলটি সময়কে আয়ত্তে আনতে চাচ্ছে, প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। এরপরে অন্য সব বগলদাবা করা সহজ হয়ে যাবে।
কৌশলী ব্যক্তি মাত্রই সকল সমস্যার জন্য বিকল্প কর্মপরিকল্পনা রাখেন। সময়কে জয় করার জন্য আমরা মানুষরা দু'টি দিক থেকে উন্নতি করছি, হাজার সকালরাত্রী ধরে। একটি হলো দর্শন ও শিল্প কেন্দ্রিক; অন্যটি খাঁটি জ্ঞান-বিজ্ঞানের পথ। দর্শন কিংবা শিল্প ব্যক্তিকে ভাবায়, ঘাস দেখে জীবনের মূল্য খুঁজতে শেখায়; আর বিজ্ঞান সে ভাবনা থেকে যুক্তি ও মুক্তির নির্যাস আরোহনের উপায় দেখায়।


নিজেই ইচ্ছে করে কয়েকদিন নিজের চুল নিজে পুড়িয়েছিলাম। মাঝে মাঝে ঘ্রাণোৎসাহ জেগে উঠে। চুল পুড়িয়ে ফেলার মধ্যে এক ধরনের নস্টালজিক ঘ্রাণ আছে! কিছু কিছু ঘ্রাণ বেশ ভাল্লাগে। একটা হলো দেশলাই নিভানোর পরের গন্ধ, অন্যটা মোমবাতি জ্বলার।
না, আমি শুধু জ্বলাজ্বলির ঘ্রাণ ভালবাসি না, তোমার ঘ্রাণ অমৃত। আমি সুযোগ পেলে একটি ঘ্রাণ-জাদুঘর কিংবা ঘ্রাণ-ব্যাংক বানাবো!


জীবনে অনেক হারিয়েছি, হারানোর বেদনা কাঁদায় না- নিস্তব্ধতা আনে; নিস্তবতার সংগীত ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির ছন্দ। অনেক ছোটবেলায় হারাতাম টাকা, টাকা আমার পকেটে বেশ গরম অনুভব করে হাওয়া খেতে নিরুদ্দেশ হয়ে যেতো। সর্বহারাদের সাথে তাদের সম্পর্ক ছিলো বলে ধারণা করি। ঈদে-উৎসবে, বৃত্তিয় পাওয়া টাকা শৈশবের মতো খণ্ডকালীন স্থায়ী ছিলো। গ্রীষ্মিয় ঝড়ে ফল ঝরে অনেক সময় গাছ হালকা হয়ে যায়, যদি সেরকম ব্যাপার আমার ছিলো না, একসময় টাকা হারানোটাই গর্বের বিষয় হয়ে গেলো!

'আজ একশ টাকা হারিয়ে ফেললাম।' খরগোশমুখো কোন কিশোরদলকে হয়তো বলছি আমি শার্টের কলার উঁচু করে।

একটু বয়েস হলে মানুষ হারায় স্মৃতি, বস্তুত নিজেকে না হারানোর প্রয়োজনেই! নবীন লেখকদের মোড়কোন্মচনের মতো খেলাপী-উন্নাসিক স্মৃতিপুস্তক ধুলোহীন রাখতে গিয়ে মানুষ বারবার পৃষ্ঠাহীন হয়ে যায়; বোধ করি।
অনেক গোপন কথা জানি, একদিন বলে দিবো, যেদিন নিজেকে রক্ষা করার ইচ্ছে উবে যাবে। মানুষ তো স্মৃতি রক্ষা করে নিজেকে রক্ষা করতেই; রোবটদের স্মৃতি দাও, শৈশব দাও, দেখবে তারা-ও মানবিক স্পর্শানুভূতি ইত্যাদি শিখে যাবে ধীরে ধীরে, অংক কষে; প্রায়শ ভাবনায় আসে।

বয়েসকালে যে জিনিসটি বেশি হারাই তা হলো ছাতা।
আমরা মানুষেরা পরিচিত-অপরিচিত নিয়ে লিখতে জানি বলেই শিল্পের জন্ম- সভ্যতার বিকাশ। প্রাণীরা লিখতে জানে না- এটা বড় কথা নয়- তারা সমন্বয় করতে পারে না- এটাই ব্যর্থতা। একশ বিলিয়ন নিউরন নিয়ে আমি তাকে অনুভব করি, আমাদের কার্যকরী নিউরনগুলো একই ভঙ্গিতে ফায়ারিঙ করলে আমরা একই ফড়িঙের ডানায় বন্ধুরোদ হই।
বন্ধু হওয়া মানে আমাদের সম্পর্কের ছাতাগুলো পরষ্পরের উপর মেলে ধরা।

তাই অসংখ্য বস্তুবাদী ছাতা হারিয়ে ফেলি- ঝুমবৃষ্টিতে ছাতার জুম নিয়ে নাগরিকজীবন হামাগুড়ি দিক- আমি সেইসব দেখে দেখে কাটিয়ে দিতে চাই কয়েক জীবন- ইচ্ছে হলে মহাকালের সাথে স্বমন্বয় করবো।


নাড়ি কেটে তারা আমাকে সাময়িক মুক্তি দিয়েছিলো।
জালজীবন। আমাদের।
সেই শৈশববেলা থেকে প্রৌঢ়ত্ব পর্যন্ত সব্বাই জাল বিস্তারে ব্যস্ত থাকে। যার জাল যতো বিস্তৃত, যত সূক্ষ্ম অথচ উৎকর্ষ সে ততো বেশি সাফল্য ভাগিয়ে হাসে- অন্যদের মীনজীবন বন্দী করতে চায়।

বার্ধক্য মানে মসজিদে দৌড়ে গিয়ে যৌবনে নেয়া মদের স্বাদ ভোলা নয়- কোরিওগ্রাফীর দিকে তাকিয়ে জীবন ভুলে যাওয়া নয়: জাল গুটানোর সময়। যে বিস্তারিত জাল গুটিয়ে মৎস্য পরিবেশন করে যেতে পারে সেই মহাত্মা- নতুবা আস্তাকুঁড়ের ময়লা- জলো মাছের খাদ্য।

দুই শ্রেণীর মানুষ জাল গুটিয়ে নিতে পারে না- কদাচিৎ পারে। কবি ও ধর্মনেতা। কবিয়াল ও ধর্মবাজ। কারণ, অধিক বিস্তারে এই দু'ঘরনার মানুষের শয়তান হয়ে ওঠার সম্ভাবনা অনেক। সংখ্যামান স্বাভাবিক গড়ের চে' বড়।
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×