somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নিসঃঙ্গ গ্রহচারী
আমি একজন শুদ্ধচারী হতে চাই।টুকটাক লিখি আর বিজ্ঞানের ভক্ত।তাই আমি মানুষের আবেগ ও অনুভূতি সম্পর্কিত পোস্ট দিতে বেশি পছন্দ করি।আমি বিশ্বাস করি কোন লেখাই দুনিয়া পরিবর্তন করতে পারে না যদি না আপনি সেটার মূলমন্ত্র ধরতে ও নিজের উপর এপ্লাই করতে না পারেন।

মার্জারীয় ভাষা গবেষণা ও অসম ভালবাসা !!

০৩ রা জুন, ২০১৬ রাত ৮:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অতি কষ্ট করিয়া কিছুটা বিড়ালের ভাষা শিখিতে সক্ষম হইয়াছি ।
যদ্যপি তাহা সার্বজনীন নহে তথাপি আমাদের বাটিতে আশ্রিতা বৃদ্ধা মার্জারি মহাশয়ার জন্য খাটে ।তাহার দীর্ঘদিনের সংস্পর্শেরই , ইষ্ট ফল :P

যাহার কাছ হইতে এ শিক্ষা লাভ , প্রথমেই তাহার কিছুটা বর্ণনা দেওয়া আবশ্যক বটেন ।

একদা ইদুঁরের জ্বালায় , আমার মাতাশ্রি বিড়াল পালিতে উপক্রম করিলেন । অগ্যতা , আমাদিগর এক প্রতিবেশিনীর বাসা হইতে এক বাচ্চা আনয়ন হইল ।
যদ্যপি বাচ্চা প্রথমে আদর যত্নেই থাকিত তথাপি তাহার বয়োবৃদ্ধির পর , মূত্র-মলত্যাগ জনিত সমস্যায় থাকাতে ত্যাগ করিতে আমরা বাধ্য হলুম । কারন এই নব্য সমস্যা হইতে পুরাতন ইদুঁরদিগের জ্বালাতনই মাতার কাছে উত্তম মনে হইল ।

এহপর , দিবা যায় রাত্রি আসে ,
মাস খানেক পর হঠাৎ একদিন এক বিড়ালনি আমাদের বাসায় আগমন করিল ।
তাহাকে দেখিয়াই বোধগম্য হল , এনা একদা বিবিধ সুন্দরী ছিলেন । আজ হয়ত খাদ্য সমস্যায় তাহার এহ অবস্থা ।।
সে আসিয়াই খাবারের জন্য উৎপাত করিল না অথচ খাবারের সময় ঠিকই খাবার চায় ।
আমরা এমনিতে বিড়ালকে তত সদয় করিতুম না কিন্তু এনার মুখের মায়াবী চেহারা আর খাবার চাহিবার অভিজাত ভঙ্গী দেখিয়া আমরা তাহাকে খাবার না দিয়া পারিলাম না। সে অপরিচিতা ঠিকই , অথচ খাবারের সময় এত মায়াবী চোখে তাকায় এবং আপনার পেছনে এমনভাবে ঘুরিবে যেন আপনার অনেক দিনের পরিচিতা । অতি লজ্জার কথা সে সময় বিশেষ গাত্র মর্দন ও করিয়া থাকে !!

এমন রত্নকে তো অবহেলার কোন অবকাশই থাকে না !

এরপর আমাদিগর উপলব্ধি হইল আমরা যে বিড়ালকে অন্ন দেই না , তাহা আমরা নির্দয় বলে নয় বরন্চ বিড়ালদিগের অসহ্য আচরন ও গুন্ডা গুন্ডা চেহারার জন্যই !!

যাক সে কথা ,
একদিন লক্ষ করিলাম সে খাইয়া কোথায় যেন চলিয়া যায় ।
খোঁজ নিলুম , ছোট ভাই বলিল সে নাকি , আমাদের ওই প্রতিবেশিনীর বিড়ালা , যাহার বাচ্চা আমরা আনয়ন করিয়াছিলুম । এখন বোধহয় মার্জারি-সুন্দরী ওইখানে খাদ্যাভাবে পড়িয়াছে , যাহা উনাকে আমাদিগের বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছে , তথাপি সে এখনো রাত্তিরি পুরনো মালকিনের বাটিতেই কাটায় !
এভাবেই তাহার সাথে পরিচয় ।
আস্তে আস্তে আমাদের বাসার খানা খাইয়া তাহার , পুরাতন যৌবন ফিরিয়া না পাইলেও , বৃদ্ধা হওয়া রোধিল , লোম্বা পড়া কমিল সাথে পুরাতন বাটিতে ফিরিয়া যাইবার প্রবনতাও !!

আর তাহার থাকাতে ইদুঁরের উপদ্রব স্বয়ংক্রিয় কমিয়া গেল বলিয়া , মাতাজিও তাহাকে মানিয়া লইল !

ইবার আচরন অতি সুমিষ্ট , তাহার চুরির মত বদাভ্যাস নেই । অনেকটা সাধুরমত নির্লিপ্ত নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করে ।অবশ্য আমি ধারনা করি , তাহার উশকো-খুশকো লোমে উকুঁনের ডরেই , তাহার সহিত কেউ মিশে না !
আমি প্রতিদিন ক্লিয়ার দ্বারা চুল পরিচর্যা করি অতএব উকুঁনের ভয় আমাকে তাহার ভালবাসা হইতে বিরত রাখিতে পারিল না ! মাঝে মাঝে বাহিরে হাওয়া খাইতে যায় , একদিন কুকুর দেখিয়া এমন বুড্ডা বিড়ালনীও হরিনের মত পালাইয়া আসিয়াছিল । বিকালে অতি আদরের ঘুম দেয় , মাঝে মাঝে ঘরের কোনায় কি যেন খোজে !
সুন্দরীর সাথে আমি বহুদিন আলাপচারিতার চেষ্টা করিয়াছি , কিন্তু মার্জারী নিতান্তাই বেরসিক ও আনকলচরড্ !!


সে আমার প্রশ্নের জবাবে , দাঁত খেচানে মিউ ছাড়া কোন জবাব দিতে পারে নাই । এমন অশিক্ষতকে বাংলা শেখাইবার প্রচেষ্টাও ব্যার্থ । অগ্যতা নিঃসঙ্গ আমি নিঃসঙ্গ মার্জারিরসাথে কথা বলিবার জন্য তাহার ভাষায় রপ্ত করিলুম !!

একই সাথে তাহাকে ভালও বাসিয়া ফেল্লুম !!

দীর্ঘদিন তাহার সাথে বসাবাস করিয়া তাহার কিছু স্পেশাল গুণ এবং কিছুটা ভাষাও শিখিলুম !

মূল রচনা !

মার্জাররা প্রথমত আমিষভোজি , আমাদের সুন্দরীও তাহার ব্যাতিক্রম নহে ,
যখন তাহাদের স্বাভাবিক ক্ষুদানুভব হয় , তাহারা তখন মিউ মিউ ডাকবে তবে কিছুটা উচ্চস্বরে , আপনি আশা করি বুঝিয়া লইবেন !
কিন্তু !
যদি ঘরে আমিষ না থাকে এবং বাঘের মাসি
রা অধিকতর পেট পীড়া অনুভব করেন , তখন মিউ মিউই করবে তবে , কিছুটা রুক্ষ স্বরে এবং আপনার পেছনে ছুটাছুটি লাগাইবে !
এখন আপনি নিরামিষ দিলে তাহাই সে খাম খাম করিয়া খাইবে !

খাওয় শেষ হইলেও মিউ মিউ করিবে তবে কিছুটা নিম্ন স্বরে এর মানে সে পরিতৃপ্ত হইয়াছে ।।
আর অত্যাধিক ভোজন করে তবে অতি আদরের মিউ মিউ করে অনেকটা মিইইইউ এরসাথে আপনার মর্জি থাকলে , আপনার কাছে আসিয়া গাত্রও মর্দন করিতে পারে !!
অতপর সে ঘুমাইবে , তবে তাহার কান খাড়া থাকিবে , বিপদের আভাস মাত্র চম্পিটিবে !!
মাঝে মাঝে চাপা স্বরে মিউ মিউ করিবে , ইহার মর্মার্থ , সে কিছু খুজিতেসে অথবা বিপদের আভাস পাইতেসে ।।
কতিপয় সময় , গর গরের মত মিউ মিউ করিবে এর মানে সে পালাইতে চাহিতেছে / শিকার পাইয়াছে ।।

যদি কখনো জাত ভাইয়ের সাথে দেখা হয় , উভয়েই বাচ্চার মত লম্বা ও উচ্চ স্বরে কাঁদিবে এর মানে আমি ঠিক জানি নে , আমার বোধহয় হয় ঝগড়া করিবার অভিপ্রায় হইলে অথবা অচেনা বিড়াল দেখিলে , এই কান্না বা বিপদসূচক আওয়াজ করে ।।

পরিশেষে , এই হল মোটামুটি বর্ণনা তবে স্মরন রাখিবেন , বিড়ালেরও আপন মর্জি আছে , অসময়ে তাহাকে আদর করিতে গেলে চুমোর বদলে , নখের আচড়ও খাইতে পারেন !!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১৬ রাত ১১:৩১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×