নিজেদের স্ট্যাটাস নিয়ে মধ্যবিত্তদের খুব হেজিটেশনে থাকতে হয়।। অর্থভিত্তিক এই সমাজে, যথেষ্ট সম্মান নিয়েও এরা মানুষের মত বাচতে পারে না।।
ঢাকা ভার্সিটিতে পড়া প্রতাপশালী ভাইটিও বাড়িতে গিয়ে নিজের বোনের সাথে সেলফি ফেসবুকে দিতে পারে না, বাড়ির চালাটা যে ভাঙা !
ইডেনের সবচেয়ে মিশুক আর আড্ডাবাজ আপুটাও কখনো তার বান্ধবিদের বলতে পারে না, দোস্ত আমাদের বাড়ি চলিস। নিজের খরচ চালাতেই হিমশিম খেতে হয়, সেখানে বাবার ঘাড়ে এতগুলা বান্ধবির চাপ কিভাবে দেই।
সবাই যখন নিজের প্রোফাইল পিকে আইফোন লোগোটা দেখিয়ে ছবি আপলোডাতে ব্যাস্ত সেখানে এই মধ্যবিত্তের দল , দুই চোখে বিতৃষ্ণা নিয়ে সেগুলুতে লাইক দেয়।।
সবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভর্তি হওয়া ভাইটা আর দুবছর পর ডাক্তার হবে, এখনো তার ফেসবুকে বাঘ,ভাল্লুক আর খেলার ছবি দিয়ে ভরা।তিনি আশায় বুক বেধে আছেন ২ বছর পর ডাক্তার হয়ে , ভাল মোবাইল দিয়ে তবেই প্রোফাইল পিকে নিজের ছবি দেবেন।।
কেন এই বৈষম্য?? কেন আমরা যার যা আছে, সেটাকেই সুন্দর ভাবতে পারি না??
কেন, কৃষক বাবার বুয়েটে পড়া ছেলের যোগ্যতা কি কম?? তবু কেন তাকে তার বাবার পরিচয়, বাড়ির অবকাঠামো নিয়ে চিন্তা করা লাগে??
যার সৌন্দর্য যেমন তাকে সেই অবস্থাতেই উপভোগ করা কি শ্রেয় নয়??
সমাজ ধনতান্ত্রিক তাই বলে, নৈতিকতা সেটাও কি ধনের সাথে সাথে বিলুপ্ত হচ্ছে???
চায়ের দোকানদারের ছেলের আচরণেও সবাই তার প্রশংশা করে আবার জজ বাবারও মদ্যপ ছেলে থাকে,
নৈতিকতা বিষয়টা আসলে বই থেকে শেখা যায় না , এটি আদিম যুগ থেকেই একজন মানুষ তার বংশধরকে ছোটবেলাতেই শিখিয়ে দেয়, আর তার সার্থক প্রয়োগ করতে হয় বড় হয়ে।।
এখন সময় এসেছে বদলাবার। উন্নত দেশগুলু স্রেফ টাকার জোরেই উন্নত হয় নি বরং এদের সমাজ ব্যবস্থা উন্নত ছিল বলে, যুগে যুগে সংকটময় অবস্থাও এরা পাড়ি দিয়ে এসেছে।।
তাই সবার প্রতি সবসময়ই আহ্বান থাকবে, আমরা কখনোই যেন, ধন-সম্পদকে মানুষের চেয়ে বেশি মুল্য না দেই, নতুবা ধন কমুক এমন এক সমাজের সৃষ্টি হবে যা রোধ করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে।।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৩