গানের ধরন ও সুর দিয়ে বিচার করলে অনেক অনেক ভাবে ভাগ করা যায়। আর স্বাভাবিক ভাবে আমর মতো সাধারণ মানুষ উপলব্ধি করি প্রেমের গানে পৃথিবীর আকাশ বাতাস ও মানুষের মন ভরে গেছে। প্রেমের গানের তুলনায় প্রেমের সার্থকতা ও সফলতার হার নিতান্তই সামান্য। আজকের পোস্টটি কতগুলো গানের লিরিক (কথা) নিয়ে। কার জন্য কোন গানটি প্রয়োজন তার একটি ভাগ দেখানো গেলো।
১. এ্যডভোকেট ও ব্যারিস্টারদের জন্য যুক্তি প্রধান গান-
“ভালোবাসা হয় যদি অপরাধ,
তবে দু’জনেই সম অপরাধী।
কাঁদবে তুমিও যদি আমি কাঁদি।”
২. মনে করুন বাবা বিদেশে থাকেন, দশ বছর পর দেশে এসে দেখলেন সন্তান অনেক বড় হয়ে গেছে। তখন বাবা এই গানটি সন্তানের উদ্দেশ্যে গাইতে পারেন-
“আমি যে কে তোমার,
তুমি তা বুঝে নাও।।”
৩. মা তার বদের হাড্ডি দুষ্টু সন্তানের উদ্দেশ্যে এই গানটি গাইতে পারেন-
“উত্তরে ভয়ঙ্কর জঙ্গল,
দক্ষিনে না যাওয়াই মঙ্গল।
পূর্ব পশ্চিম দুই দিকেই নদী।।”
৪. কোনো লুচ্চা যদি কাউকে কুপ্রস্তাব দিতে সাহস না পায় তাহলে। এই গানটি গাইতে পারেন-
“ভ্রমর যখন ফুলের সাথে করে আলিঙ্গন,
চাইয়া দেখি তখন আমার কেমন করে মন।।”
৫. বিয়ে করার জন্য মনের মধ্যে উস-ফুস, কচ-মচ করছে। ফ্যামিলির এদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। তখন ঘরের দরজা বন্ধ করে এই গানটি গাওয়া যেতে পারে-
“দরজা খুইল্যা দেখুম যারে,
করুম তারে বিয়া”
(যদি দরজা খুলে দেখা যায় কাজের বেটি সকিনা কিংবা সকিনার মা হাজির, সাথে সাথে তার হাত ধরুন, ফ্যামিলি আপনার বিবাহের ব্যবস্থা করবেই)
৬. আপনার আত্মবিশ্বাস যদি কম হয় তাহলে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবার গান-
“আমার ভালোবাসা সত্যি যদি হয়,
তোমাকে ফিরে আসতে হবে।”
৭. আপনি যদি জায়গা-জমি বেশী ভোগ দখল করে থাকেন। আর জমি ভাগ বাটারা হবার ইংগিত পান তখন ভাই বা ওয়ারিশদের উদ্দেশ্যে এই গানটি গাইতে পারেন-
“আমাকে দুঃখ দিয়ে তুমি (তোমরা) কাঁদবে
সেই তো বড় বেশী দুঃখ আমার।।”
৮. আপনি যদি মিউজিক ডিরেক্টর হন আর আপনার পছন্দের গীতিকার আপনাকে গান লিখে দিতে অসম্মতি প্রকাশ করে তাহলে এই গানটি গাইতে পারেন-
“একটা গান লিখো আমার জন্য,
সে গান যেনো আমায় পাগল করে দেয়।।”
৯. শেয়ান পাগলের উদ্দেশ্যে এই গানটি গাওয়া যেতে পারে-
“আমায় পাগল বানাইয়া গেলো,
নিজে পাগল হইলো না।
শুধু নিজের কথাই কইয়া গেলো,
আমার কথা শুনলো না।।”
১০. স্বামী যদি স্ত্রীকে রেখে আর একটি বিয়ে করে। আর যদি তা আশেপাশের মানুষ জেনে ফেলে তাহলে প্রতিবেশীদের উদ্দেশ্যে এই গানটি গাওয়া যেতে পারে-
“বন্ধুয়া মোর বানিজ্যে গেছে,
উজানিয়ার দেশে।।
সেইনা দেশে পুরুষ বান্ধা পরে নারীর প্যাচে রে...।।”
১১. কোনো জায়গা না চিনলে এই গানটি গাওয়া যেতে পারে-
“কোন বা পথে নিতাইগঞ্জে যাই”
(এখানে নিতাইগঞ্জের জায়গায় আপনার গন্তব্য যেমন পাবনা, হেমায়েতপুর উল্লেখ করলেও দোষ নাই।)
১২. পাওনা না আদায় হওয়ার দুঃখে এই গানটি গাওয়া যেতে পারে-
“বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িতে গেলাম,
দেখা পাইলাম না, বন্ধু তিনদিন”
১৩. নিজের স্ত্রী’র কু-চরিত্র সম্বন্ধে কোনো সত্যি তথ্য পেলে এই গানটি গাওয়া যেতে পারে-
“সবাই তো সুখি হতে চায়,
তবু কেউ সুখি হয়।।
কেউ হয় না।।।”
১৪. আপনি কৃষিবিদ হলে বসের মন জয় করার জন্য এবং আপনার কেরামতি সম্বন্ধে সবাইকে জানাতে এই গানটি গাওয়া যেতে পারে।
“আমি পাথরে ফুল ফোটাবো,
শুধু ভালো বাসা দিয়ে।”
১৫. আপনার যদি সখের কোনো ফুলের বাগান থাকে তাহলে মহান একুশে ফেব্রুয়ারীর আগের রাতে ফুলের বাগানে বসে এই গানটি গাওয়া যেতে পারে-
“চারা গাছে ফুল ফুইটাছে,
ডাল ভাইঙ্গো না-রে মালি।।
ডাল ছিরো না”
(এখানে মালির জায়গায় বান্দর পোলাপান লাগাতেও পারেন। গান শুনে পোলাপান যদি গেয়ে ওঠে “নিশিথে যাইও ফুলো বনে” তাহলে কি করণীয় নিজে ভেবে নিন)
১৬. প্রেমিকার সাথে বন-জঙ্গলে ডেটিং করে ধরা খেয়েছেন। পুরো মহল্লা জেনে গেছে। তখন মহল্লার মানুষদের উদ্দেশ্যে খোলা গলায় গাইতে পারেন-
“নিন্দার কাঁটা যদি না বিধিলো পায়ে
প্রেমের কি স্বাদ আছে বলো।।”
১৭. আপনি যদি চাপাবাজি করতে চান তাহলে এই গানটি গাইতে পারেন-
“আর যাবো না আমিরিকা,
যখন পেলাম তোমার দেখা।।
তোমার বাড়ির কাছে বাড়ি ভাড়া করে,
থেকে যাবো ঢাকা (নোয়াখালী, বরিশাল, কুমিল্লা ইত্যাদি)”
১৮. বুড়ো ছাত্রিকে নতুন করে নামতা শিখাতে এই গানটি গাইতে পারেন-
“এক অক্ষে এক,
দেখনা চেয়ে দেখ।
দুই অক্ষে দুই,
সাথী আমার তুই।
তিন অক্ষে তিন
মনে রাখিস চিরদিন।।”
১৯. আপনার যদি ওপেন হার্ট সার্জারি হয় তাহলে মন হালকা রাখতে অপরেশনের আগে এই গানটি গাইতে পারেন-
“এই হৃদয় খুলে যদি দেখানো যেতো,
তুমি যে আমার তা মানতে”
২০. সঞ্চয়ে উৎসাহিত করতে গেষ্ট গোপাল দাসের এই গানটি গাইতে পারেন-
“গরিব চাষী দিন মজুরী,
স্বল্প সঞ্চয় কিছু করি।।
দিনে দিনে করে সঞ্চয়,
কিনবো জমি সেই টাকায়”
২১. এই গানটি সবার জন্য বিব্রত পরিস্থিতি এড়াতে রবীন্দ্রনাথ লিখে গেছেন। মনে করুন একটি অনুষ্ঠানে কিংবা আপনার প্রিয় কেউ আপনাকে একটি গাওয়ার জন্য অনূরোধ করেছেন। আপনি গান জানেন না। তখন পরিস্থিতি সামনলানোর জন্য এই গানটি গাইতে পারেন। বেসুরো হলে কোনো সমস্যা নেই-
“আমার কন্ঠ হতে গান কে নিলো,
নিলো ভুলায়ে.......”
যাই হোক, আপনার মনে কোনো গান এলে কমেন্টে দিয়ে দিন। পোস্টে এ্যাড করে দেবো।
জানেন আজ আমার গানের কলি খেলতে ইচ্ছে হচ্ছে যারা পোস্টটি পড়েছেন তাদে প্রতি অনুরোধ আপনি কমেন্টে যে কোনো একটি গানের লাইন লিখুন তার শেষ শব্দ দিয়ে আমি একটি গান লিখে দেবো অথবা যে কেউ শেষের অক্ষর দিয়ে গান দিয়ে দিতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৩৮