১৯০০ শতকের শুরুর দিক।
সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশরা ভারতের রাজক্ষমতায়।
ভারতবর্ষের অন্তর্ভূক্ত বঙ্গভূমি(সমন্বিত পশ্চিম ও পূর্ব বাঙলা ) ও তাদের করতলগত। বঙ্গভূমি তথা বাঙলার প্রানকেন্দ্র তখন কলকাতা।
বৃটিশরাজ চাইলেন ঢাকাকে কেন্দ্র করে বাঙলাকে দুই প্রদেশে বিভক্ত করে ফেলতে যাতে উনাদের "ভাঙন ও শাসন" নীত বাস্তবায়িত হয় এবং বাঙলায় তাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থা সুদৃঢ় হয়। সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিম অধ্যুষিত পুর্ব বাঙলা(বর্তমান বাংলাদেশ)'র অবহেলিত জনগন বৃটিশরাজের উদ্যোগকে স্বাগত জানায়। কারণ এতে করে সাম্রাজ্যবাদী প্রভু বৃটিশরাজের দয়া-দাক্ষিন্য লাভ করে নিজেদের উন্নয়ন করা'র এক বিস্তৃত দরজা খুলে যাবে। কিন্তু বেঁকে পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ী, গুনী, শিল্পী, প্রভাবশালী ও সুশীল সমাজ। কারন এতে করে উনাদের ভাগের অংশ অনেক কমে যাবে। উনাদের ব্যবসা, মুনাফা, সুযোগ-সুবিধা, প্রভাব অনেক কমে যাবে। "বঙ্গভঙ্গ রদ আন্দোলন" নাম দিয়ে উনারা দীর্ঘদিন উনাদের পরম শ্রদ্ধেয় মান্যবর প্রভু সামাজ্যবাদী বৃটিশরাজের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যান। আন্দোলনের আগুনে লাকড়ির ইন্ধন দিতে ১৯০৫ সালে কবিগুরু তাঁর প্রতিভাকে ব্যবহার করে অসাধারন এক কবিতা লিখে ফেললেন। সুর করে তা ছড়িয়ে দিলেন পুর্ব বঙ্গ তথা বাংলাদেশ বিরুধী সংগ্রামী যোদ্ধাদের মুখে মুখে বুকে বুকে।
১৯০৫ সাল গেল। এক সময় বৃটিশরাজ পশ্চিমবাংলার সংগ্রামী যুদ্ধাদের কাছে নতি স্বীকার করলো।
তারো অনেক পরে এক সময় সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশরাজ লেজ প্রসারিত(গণতন্ত্রের শিকল ভারতবর্ষের উপর চাঁপিয়ে) করে রেখে তল্পি-তল্পা গুটিয়ে চলে গেলেন।
তারো অনেক পরে বাংলাদেশ স্বাধীন হল।
বিয়াল্লিশ বছর পরও জামায়াতীরা আজ যুদ্ধাপরাধী, বাংলাদেশের জন্য হুমকী কারণ ওরা ৭১ এ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো। কিন্তু ১০৮ বছর পর আজ ১৯০৫ সালে যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ছিল তারা যুদ্ধাপরাধী নয়, বাংলাদেশের জন্য হুমকী নয় বরং তারা বাংলাদেশের পরম বন্ধু।
৭১ এ বাংলাদেশের জন্মলগ্নে যারা বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের পক্ষে ছিল সেটা অমার্জনীয় অপরাধ কিন্তু যারা ৭১ বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুধীতার জন্য এবং বাংলাদেশ বিরুধী যোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য রচিত সংগীতকে "জাতীয় সংগীত" করলো তাদের কোন অপরাধ নেই!!! বরং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঠিকাদারী তাদেরই হাতে!!!