somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভাস্কর্য প্রসঙ্গে

১৩ ই অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ১১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্থাপত্যশিল্প একটি জাতির ইতিহাস ঐতিহ্যকে সমুন্নত শিরে বহন করে চলে যুগ-যুগ ধরে। একটি দেশের দালান-কোঠা, অফিস-আদালত, বাড়ি-ঘর, মস্জিদ, মন্দির, ভাস্কর্য ইত্যাদি স্থাপত্যশিল্পের সৃষ্টি। স্থাপত্যশিল্প একটি জাতির আয়না বলা চলে। কেননা স্থাপত্যশিল্পের মাঝে উদ্ভাসিত হয় একটি দেশের সমাজ-সংস্কৃতি, রুচিবোধ, বিলাসিতা, সভ্যতা, উৎকর্ষতা এবং সে দেশের সামগ্রিক সংস্কৃতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ। আর তাই আমাদের উচিত দেশের স্থাপত্যের মাঝে সমাজ-সংস্কৃতিকে উদ্ভাসিত করা, সভ্যতাকে ফুটিয়ে তোলা স্থাপত্য শিল্পের কঠিন স্পর্শে। আমাদের অতীত ঐতিহ্য আর বর্তমান উন্নত ব্যবস্থা; এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাকেও আমরা ভাস্কর্যের মাঝে ফুটিয়ে তুলতে পারি। এতে করে জনমন জেগে উঠবে আগামীর নতুনত্বের দিকে, দেশ ও সমাজ এগিয়ে চলবে সভ্যতা ও সুস্থতার দিকে। আমরা ধর্মীয় সৌন্দার্য্যতাও ফুটিয়ে তুলতে পারি ভাস্কর্যের মাঝে, সুন্দর স্থাপত্য শিল্পের মাঝে।

সেদিক বিবেচনা করলে বাংলাদেশ স্থাপত্যশিল্পে বেশ এগিয়ে আছে। বিশেষ করে ধর্মীয় ব্যাপারগুলোই বেশি স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের স্থাপত্যশিল্পে। নয়নাভিরাম বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির এরই প্রমাণ বহন করে চলেছে। মূলত আজকের এই লেখায় ভাস্কর্য নিয়ে আলোচনা করার কোন ইচ্ছাই আমার নেই তবে, নেহায়েত একটি অপরিকল্পিত, কিংবা অযৌক্তিক অথবা অরুচিকর বিনির্মাণ নিয়েই আমার আজকের প্রতিবেদন -

বাংলাদেশের স্থাপত্য শিল্প নিয়ে লেখার জন্য অনেক নামি সম্মানিত লেখক রয়েছেন। জনপ্রচার মাধ্যমগুলোও প্রামাণ্য অনুষ্ঠাণমালার মাধ্যমে জন সম্মূখে তুলে ধরছে এ দেশেরই শিল্প-সংস্কৃতিকে প্রতিনিয়তই। অনেক ভাল লেখক তাদের লেখনী শক্তি দিয়ে স্থাপত্য শিল্পকে আরো গ্রহণ যোগ্য হৃদয় স্পর্শী ভাষায় বর্ণনা করেছেন। তাই আমি এত ছোট লেখক হয়ে তাদের মত ভাষার উন্নত ব্যবহার পাবো কোথায়। আর সে কারণেই আমি একটি সমালোচনা পাঠকদের দরবারে পেশ করতে চাই।

বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম স্ব-মহিমায় স্বীয় মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়ে বর্তমান। কিন্তু এ জাতীয় মসজিদটির মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখার পেছনে জাতীয় মসজিদ কমিটি কি ভূমিকা রাখছে, কিংবা কতটুকু সময় ব্যয় করছে সেটাও আমার আলোচনার বিষয় নয়। আমার আলোচনার বিষয় হলো বায়তুল মোকাররমের মত একটা জাতীয় মসজিদের সামনে বাংলাদেশের স্থাপত্যশিল্পকে সমুজ্জ্বল করার জন্য ‘পরিবার পরিকল্পনার’ ভাস্কর্য ছাড়া কি অন্য কিছুই এ জাতির পিতাদের মগজে স্থান পায়নি? সত্যি বলতে কি, আমি খুব ছোট মানুষ; এত বড় ব্যাপারে আমার কথা বলার সাহস থাকার কথা নয়। কিন্তু কি করব, যখন থেকে ঐ ভাস্কর্যটি উন্মোচন করা হয়েছে তার পর থেকে যত বার বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে যাই, তত বারই আমার মন চায় ঐ ‘পরিবার পরিকল্পনা’ ভাস্কর্যটির প্রতি ঘৃণার সর্বোচ্চ ইচ্ছা প্রকাশ করি। এ ভাস্কর্যটির কারণে যত না পরিকল্পিত জীবনের প্রতি মানুষ উদ্ভুদ্ধ হবে তার চেয়ে বেশি ঘৃণা প্রকাশ পাবে, এটাই আমার বিশ্বাস। কেননা উক্ত ভাস্কর্যটি জাতীয় মসজিদের সমুন্নত উজ্জ্বল সৌন্দার্য্যকে দাবিয়ে রেখেছে। যেখানে ঘোষণা করার কথা ছিল শ্রেষ্ঠ, মহিমান্বিত পরাক্রমশালীর কথা সেখানে দাড়িয়ে আছে বিতর্কিত একটি বিষয়, এ কেমন সভ্যতা। এটা সত্যিইকি প্রশ্নবোধক নয়?

আমি বিশ্বাস করি আমার প্রস্তাবিত (আরিফুর রহমানের একটি ভাস্কর্য, যাহার ছবি উক্ত লেখার সাথে সংযুক্ত করা আছে) ভাস্কর্যটি যদি উক্ত স্থানে স্থাপন করা হতো, তাহলে কতই না সুন্দর হতো। কিংবা উক্ত স্থানে একটি সু-উচ্চ মিনারও স্থান পেতে পারত। কিংবা ধর্মীয় আরো কতো কিছুই না হতে পারতো। যদি এ স্থানে কোন সু-উচ্চ মিনার কিংবা কোন কোরআনের বানী সু-উচ্চে বির্নিমাণ করা হতো তা হলে এ দেশের, এ জাতীর ধর্মীয় আচরণ আরো একধাপ উন্নয়ণের দিকে অগ্রসর হওয়ার অনুপ্রেরণা পেতো। বিশ্ব-সভ্যতার মাঝে আরো সুন্দর করে উপস্থাপিত হতে পারত আমার এ দেশ, আমার-ই বাংলাদেশ।

বায়তুল মোকাররম মসজিদ যেমনি করে “আল্লাহু আকবার” লেখাটিকে জীবন্ত করে সু-উচ্চে উজ্জ্বল করে ঘোষণা দিচ্ছে ‘সৃষ্টি কর্তার চেয়ে মহান আর কেউ নেই’ ঠিক তেমনি করে দক্ষিণ গেটের সামনের ভাস্কর্যটিও কোন ধর্মীয় শ্লোগানের আওয়াজে মুখরিত করুক গোটা ঢাকাকে, গোটা বাংলাদেশকে। - আর এ প্রত্যাশাই হোক আমাদের সকল বাংলাদেশীর।

লেখক পরিচিতিঃ এস.এম. হাসান, -তরুন কবি, লেখক। বি.এ (অনার্স) ইসলামের ইতিহাস ও সাংস্কৃতি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
email: [email protected]
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১০ রাত ১:৫১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×