অবচেতন মন নিয়ে আপনি ভুরি ভুরি আর্টিকেল পাবেন internet এ। এই সামুতেই অনেক অনেক লিখা পাবেন। মন নিয়ে গবেষনার যেন অন্ত নাই। ঠিক কিভাবে কাজ করে আমাদের মন। বিশেষ করে আমাদের অবচেতন মন। অবচেতন মন নিয়ে অনেক কোটেশন দেয়া যেতে পারে । এসব দিয়ে আসলে আমি লেখাকে দীর্ঘ করতে চাচ্ছি না । অবচেতন মনের রহস্য ব্যাক্ষ্যা করা এই মুহুর্তে আমার উদ্দেশ্য নয় ।
অবচেতন মন নিয়ে শুধু ছোট্ট দু একটা information দেই
১।নিউরোসায়েন্সের মতে, অবচেতন মনই আমাদের জীবনের ৯৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। অবচেতন মন আসলে একটি গুদামঘরের মতো, যেখানে সঞ্চিত হয়ে থাকে বছরের পর বছরে ধরে জমে ওঠা অনুভূতি, স্মৃতি এবং চিন্তা।
২। আমরা যত কাজ করছি, যা কিছু দেখছি, যা বোঝার বা শেখার চেষ্টা করছি সব কিছু ব্যকআপ হয়ে থাকছে আমাদের মস্তিষ্কে এবং এ কাজটা করে আমাদের অবচেতন মন।
৩। প্রতি মুহুর্তে আপনাকে কিছু না কিছু মনে করিয়ে দিবে তার জমাকৃত information থেকে।
তার কাছে ভালো খারাপ বলে কিছু নাই। সে এই পার্থক্য করতে পারে না। সে শুধু জমা করতে থাকে ।
৪। একটা নেগেটিভ কথা “না” শব্দ দিয়ে যে পজিটিভ করা যায় এটা সে ধরতে পারে না ।
(যেমনঃ আমি হতাশাগ্রস্ত নই) সে এটা বুজবেই না যে এটা পজিটিভ কিছু mean করে।
৫। তার কাছে সবকিছুর সমাধান আছে বা খুজে বের করার চেষ্টা করে
এখন বিষয় হলো, আমরা কি এই অবচেতন মন কে নিয়ন্ত্রন করতে পারি???
অবচেতন মন কে নিয়ন্ত্রন করার powerful tool মনে করা হয় Affirmation tool কে । নেগেটিভ শব্দ কে পজিটিভে শব্দ দিয়ে প্রতিস্থাপন করা ।
অবচেতন মন যদি তার অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আপনাকে মনে করিয়ে দেয় যে
“ আমাকে কেউ পছন্দ করে না “
তাহলে তাকে বলতে হবে “ আমাকে সবাই পছন্দ করে”
সে বিদ্রোহ করতে থাকবে । না তোমাকে কেউ পছন্দ করে না । তোমার মনে নাই সেদিন ওই মানুষটা তোমার সাথে কি আচরন করেছিল।
যখন আপনি তাকে এটা বার বার বলতে থাকবেন। সে আপানার সাথে যুদ্ধ করতে থাকবে। আপনি একটা কথা তাকে চাপিয়ে দিচ্ছেন সেটা সে কিছুতেই মেনে নিতে চাইবে না।
যখন ক্লান্ত হবে তখন বলবে, আচ্ছা ঠিক আছে তোমার কথাই ঠিক। এই কথাটা আমি reprogram করে নিচ্ছি ।
পরবর্তিতে যখন কোন প্রসংগে পছন্দ করার বিষয়টা আসবে, তখন বলবে আমি তোমাকে বলেছিলাম তোমাকে কেউ পছন্দ করে না, তুমি বলেছিলে তোমাকে সবাই পছন্দ করে। আমি তোমার কথায় মেনে নিয়েছি।
এবার অবচেতন মনকে নিয়ে খেললে কেমন হয়???
ধরুন আপনি বাইক চালাচ্ছেন। আপনার হঠাত একটা কথা মনে পড়ে গেল। অথচ আপনি এটা নিয়ে ভাবতেছিলেনই না।
আসলে আপনি তার কাছে কোন এক সময় এই কথাটা জানতে চেয়েছিলেন। সেই মুহুর্তে সে সেটার উত্তর জানত না। সে তখন সেই প্রশ্নের উত্তর খুজতে শুরু করে দিয়েছে তার store করা information এর মধ্যে। যখনই সে তার উত্তর বের করতে পেরেছে সেই মুহুর্তেই সে এটা আপনার সামনে হাজির করেছে।
ঠিক যেন “ আমার মা সব জানে” টাইপ। সে সবকিছুই জানে বা খুজে বের করে ।
এখন এই জিনিষটাই কাজে লাগানো যেতে পারে।
যখন আপনাকে সে বলবে, “তোমাকে কেউ পছন্দ করে না”
তখন তাকে বলুন, আচ্ছা ঠিক আছে। এখন আমাকে সবাই পছন্দ করবে এই জন্যে আমি কি করতে পারি বলো আমাকে।
ব্যস হয়ে গেল। সে এখন এই প্রশ্নের উত্তর খোজা শুরু করে দিয়েছে। আপনাকে আর উত্তক্ত না করে সে উত্তর খুজতে থাকবে। উত্তর এক সময় না এক সময় সে দিবেই। তার আবার self esteem একটু বেশি
উত্তর পেলে সেটা শুধু আপনাকে জানাবে তা না, সে conscious mind কে তাগাদা দিবে। যা করা দরকার তা করতে বলবে। রিতিমতো force করবে যাতে আপনার সামনে মাথা নত করে তাকে দাড়াতে না হয় ।
উত্তর পেলে ভালো। না পেলেও ক্ষতি নেই। সেই নেগেটিভ কথা নিয়ে আর দ্বিতীয় বার দাঁড়াবে না।
যখনই সে কোন নেগেটিভ বিষয় সামনে নিয়ে আসবে তখন শুধু উলটো তাকে ব্যস্ত করে দিতে হবে।
এক কথা বার বার মনে করিয়ে সে আপানার মন আর জীবনকে দুঃসহ করার সুযোগ পাবে না।
থ্রি ইডিওটের এক ডায়ালগের মতো, " আমাদের মন খুব ভীতু, তাকে বোকা বানিয়ে রাখো"। (বাংলায় অনুবাদ করে দিলাম)
প্রথম প্রথম তাকে বলে দিতে হবে যে আমি এটা কিভাবে করতে পারি। দু চার দিন পর দেখবেন সে নিজে নিজে খোজা শুরু করে দিয়েছে। আপনাকে কিছু বলতে হচ্ছে না।
এ প্রক্রিয়ার প্রধান সুবিধা হচ্ছে আপনাকে জোর করে চাপাতে হচ্ছে না,তার সাথে যুদ্ধও করতে হচ্ছে না । সে নিজে নিজে খুজে নিচ্ছে।
ইচ্ছে ছিল আমাদের মধ্যে কি কি নেগেটিভ চিন্তা আসতে পারে সেটার মোটামুটি একটা লিষ্ট এবং তার জন্য কি কমান্ড দিতে হবে,সেটার বিস্তারিত বর্ননা দেয়া। কিন্তু আসলে আমাদের নেগেটিভ চিন্তার তো অভাব নাই। একেক জনের একেক রকম। শুধু একটু সচেতন হবেন আর মোড় ঘুরিয়ে দিবেন।
প্রক্রিয়াটি হয়ত আরো জটিল, আমি সহজ ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করলাম।
ভালো থাকবেন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



