টাকা হলে বিপাশা, মৌ
হতে পারে তোমারই বউ !
লাগিলে টাকার সুড়সুড়ি
জ্ঞানীরা হয় জড়সড় ।
যত পার টাকা ধর,
ও ক্যাবলারে, টাকা হল বাপেরও বড় ।- নকুল কুমার বিশ্বাস
আমার কাছে পুঁজিবাদের সহজ সংজ্ঞা হল, যার আছে তার আরও হবে, যার নাই সে দ্রুত নিঃস্ব হবে ! আভিধানিক অর্থে পুঁজিবাদের আরেক অর্থ ধনতন্ত্র । আক্ষরিক অর্থে যেখানের গরীবের কোন অংশই নেই !
যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ গবেষণা সংস্থা ওয়েলথ এক্সের হিসাবে, অতিধনীর সংখ্যা বাড়ার হারের দিক দিয়ে বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলোকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। ২০১২ সাল থেকে পরবর্তী পাঁচ বছরে দেশে ধনকুবেরের সংখ্যা বেড়েছে গড়ে ১৭ শতাংশ। এ হার যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, ভারতসহ ৭৫টি বড় অর্থনীতির দেশের চেয়ে বেশি। একই সংস্থার আরেক হিসাবে দেখা যায়, ধনীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এই পরিসংখ্যান অনেকের কাছে বা আপাত দৃষ্টিতে সকলের কাছে স্বস্তিদায়ক হলেও মুদ্রার আরেক পিঠের অবস্থা হতাশা ব্যঞ্জক ।
দেশে প্রতিনিয়ত দরিদ্র মানুষের আয় কমছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয়-ব্যয় জরিপ-২০১৬ অনুযায়ী ২০১০ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে দেশে সবচেয়ে ধনী ৫ শতাংশ পরিবারের আয় প্রায় ৫৭ শতাংশ বেড়েছে। একই সময় সবচেয়ে দরিদ্র ৫ শতাংশ পরিবারের আয় কমেছে ৫৯ শতাংশ।
টাকায় টাকা আনে একথা আজ হারে হারে সত্যি হল । আজ সকালে আমার এক কলিগ কথা প্রসঙ্গে বললেন, টাকা হল ম্যাগনেট ! সত্যিই তাই । কিন্তু প্রশ্ন হল, পুঁজিবাদের প্রভাবে পুঁজিপতিদের কাছে সারাজীবন কি এভাবেই মার খাবে দরিদ্র মানুষেরা ? দেশে দেশে কালে কালে প্রাচীন এই বৈষম্য দিন দিন প্রাচীন থেকে আরও প্রাচীনতর হয়ে উঠছে । এর কি কোনই বিহিত নেই ?
শিক্ষা জীবনে ওয়েস্টার্ন পলিটিক্যাল থট, ওরিয়েন্টাল পলিটিক্যাল থট, তুলনামুলক অর্থ ব্যবস্থা ইত্যাদি অধ্যয়নের সময় বদ্ধমূল হয়েছিল সকল ব্যবস্থাতেই আছে শোষণ আর বৈষম্য । একমাত্র ইসলামি অর্থব্যবস্থাই শোষণ মুক্ত । ইসলামি বিধান মত যদি যাকাত, উশর ইত্যাদি বাধ্যতামূলক করা হয় তাহলে একসময় নাগরিক জীবনে সাম্যবস্থা বিরাজ করবেই করবে । তবে যেকোনো রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় যদি সুশাসন নিশ্চিত করা যায় তাহলে বৈষম্য কমিয়ে আনা সম্ভব বলে আমার বিশ্বাস ।
রুদ্র আতিক, সিরাজগঞ্জ
৩ বৈশাখ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ
ছবিঃ ইন্টারনেট ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:২০