কোথাও বেড়াতে যাওয়ার আগে বাজেট সবারই একটা বড় ভাবনার নাম। যদিও ব্যাগ গুছিয়ে বেড়িয়ে পড়ার পর তা অনেক জায়গায়ই ফেল করে। অনাকঙ্খিত সেই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই প্রথমবার ভারত ভ্রমনের সিদ্ধান্ত। কম বাজেটে দেখা আর অভিজ্ঞতা নিতে ঐতিহাসিক জায়গা খুঁজতে লাগলাম। ইন্টারনেটের কল্যানে আর বান্দরবানের থানচি-রুমা এলাকার পাহাড়ের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পছন্দ করলাম জল-পাথরের রাজ্য ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য মেঘালয় ঘুরবো। ২০১৫ সালের আগস্টের শেষ ক’দিন ভ্রমণের তারিখ নির্ধারন করে সেই মোতাবেক ভিসা লাগালাম পাসপোর্টে। এক্ষেত্রে বিচিত্র অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। এনিয়ে একটি লেখাও লিখেছিলাম সেসময় বিস্তারিত লিংকে : Click This Link
নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে ঢাকা থেকে রওয়ানা হলাম বাসযোগে আমাদের প্রাথমিক গন্তব্য সিলেট। ভোরে কদমতলী বাস টার্মিনালে নেমে সেখান থেকে গেলাম বন্দর বাজার তামাবিলের গাড়ির জন্য না পাওয়ায় শহরের মাঝখান থেকে একটি লেগুনা ধরে চলে গেলাম জৈন্তিয়া। পরের রাস্তাটুকু খুব খারাপ, ভাঙাচোড়া। তাই লোকাল বাসে ১২ কিলোমিটার গেলাম ২ ঘণ্টায়। এরমধ্যে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। এখন পর্যন্ত সবকিছু প্ল্যান মতই চলছে। বাজেটও ফেল করেনি কোথাও। তামাবিল নামলাম সকাল সাড়ে ৯ টায়। সরাসরি চলে গেলাম ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা সারতে। প্রথমে ইমিগ্রেশনে তিনজনের লাগলো ৩০ মিনিট। কাস্টমসে বাকি ১০ মিনিট। ট্রাভেল ট্যাক্স ঢাকার দিলকুশা সোনালী ব্যাংকে দেয়া ছিল আগেই। নয়তো আরেক ঝামেলা পেহাতে হতো। কেননা তামাবিলে ট্যাক্স স্টেশন না থাকায় ট্রাভেল ট্যাক্স দেয়ার কাছের ব্যাংক জৈন্তিয়া সোনালী ব্যাংক। অর্থাৎ যেতে আসতে আরও ৪ ঘণ্টার ধাক্কা। অবশেষে অনুমতি মিললো, সব ঠিকঠাক আছে। যেতে পারেন আপনারা। হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। মুহূর্তে বর্ডার পার। ভাবনায় তখন ৩ টি বিষয়, * আমি এখানে ট্যুরিস্ট, দেশটা আমার নয়। * ঘড়ির সময় বদলে নিতে হবে। * কতবার তামাবিল আর জাফলং থেকে উপরের ওই বাড়ি আর জায়গাগুলো দেখেছি। এবার সেখান থেকে বাংলাদেশটাকে দেখবো। ভাবতেই খুশিতে বরে গেল মন। ওপার গিয়ে ভারতের কাস্টমস আর ইমিগ্রেশনে এন্ট্রি পাস নিতে লাগলো মোটামুটি ১ ঘণ্টা। পাসপোর্টে কয়েকটা সিল আর ব্যাগ তল্লাসি ছাড়া আর কিছু না। বলে রাখা ভাল, প্রতিবেশি দুই দেশের রাজনৈতিক ও বিরাজমান পরিস্থিতির নির্ভর করে ইমিগ্রেশনের তল্লাসি ও জিজ্ঞাসাবাদ। অবস্থা খুব খারাপ হলে নিরাপত্তার কড়াকড়ি বাড়ে। এখানকার আনুষ্ঠানিকতা সেরে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেলাম। কাস্টমস অফিসার তপন দা বাংলায় স্বাগত জানালেন তাদের দেশে। আমাদের পরের গন্তব্য জানতে চাইলেন তিনি। বললাম, আগে শিলং যাবো। চাইলে কাস্টমসের সামনে দাড়িয়ে থাকা বেশ কিছু ট্যাক্সি থেকে রিজার্ভ সরাসরি শৈলশহর শিলং চলে যাওয়া যায়। ভাড়া চাইছিল ২২০০ রুপি। কিন্তু আমরা দেখতে চাইছিলাম কতটা খরচ কম করা যায়। সিদ্ধান্ত নিলাম হেঁটেই ডাউকি বাজার যাব। সেখানেই ট্যাক্সি আর জীপের স্ট্যান্ড। আমাদের তিনজনের কাছেই ডলার ছিল। বাধ্যতামূলক হওয়ায় সবাই ন্যুনতম ১৫০ ডলার নিয়েছিলাম। সাথে কিছু বাংলা টাকাও ছিল। ডাউকি বাজারের পথে হাটার পথে একটা দোকান থেকে ২ হাজার টাকা বদলে রুপি নিলাম। পেলাম ১৮০০ রুপি। ডলারের বিপরিতে টাকা শক্তিশালি সেই খবর আগেই ছিল আমাদের। অন্যদিকে রুপি কিছুটা দুর্বল হয়েছে। ডাউকি বাজারে নাস্তা সারলাম পাউ (পাউরুটি) আর মধু দিয়ে। চাউমিন, মোমো ছিল সেখানে। কিন্তু বাংলাদেশের এত কাছে থেকেই জিভের স্বাদটা বদলাতে মন চাইলো না। ডাউকি থেকে শেয়ার জীপে আমাদের সাথে সঙ্গী আরও ৪ বাংলাদেশি। তারা সবাই অবশ্য সিলেটের। ২ জন ব্যবসায়িক (পরে বুঝলাম কালোবাজারি) কাজে বাকিরা বেড়াতে গেছেন মেঘালয়। যাত্রীদের একেকজনের ভাগে পড়লো ২৫০ রুপি করে। ড্রাইভার গারো তরুণ মাইকেল। বাড়ি ওয়েস্ট খাসি হিলের কোন এক গ্রামে। গাড়ি ছাড়তেই দুপাশে চমৎকার দৃশ্য। আস্তে আস্তে উপরে উঠছি। আমরা চলেছি সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৫ হাজার ফিটেরও বেশি উচ্চতায়। প্রায় ৩ লাখ মানুষের জনবসতি শিলংয়ে। ইংরেজরা হিল স্টেশনটি তৈরি করেছিল এখানকার ঠাণ্ডা আবহাওয়াকে মাথায় রেখে। নাম দিয়েছিল প্রাচ্যের স্টটল্যান্ড। ওহ হ্যাঁ মেঘালয়ের রাজধানী শিলং ক্যান্টনমেন্ট থেকেই ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রথম ফ্রন্টিয়ার লাইন মুভ করেছিল মুক্তিবাহিনীর সহযোগিতায়। তাই এখানকার খাসি আর গারোদের বাংলাদেশ নিয়ে আলাদা ফ্যাসিনেশন আছে।
ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই (দুপুর ২টা) পৌঁছে গেলাম শিলং। পেছনে রেখে আসা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের তীব্র উষ্ণ অনুভূতি ভুলিয়ে দিল শিলংয়ের প্রকৃতি। বছরের শেষভাগে দিনে তাপমাত্রা ১৭, রাতে ১২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্থানীয়দের কথায়, শীতে কখনও কখনও শূণ্যে নামে তাপমাত্রা। কিন্তু বরফ পড়ে না। গাড়ি শহরের ভেতরে পৌঁছানোর অনুমতি নেই। পুলিশ বাজারের পেছনের অংশে নামিয়ে দিল। দেখলাম আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এখানকার মানুষ। ড্রাইভ করা অবস্থায় ধুমপান করে না বেশিরভাগ। পার্কিং সচেতনতাও টনটনে। আর পাহাড়ি রাস্তায় যেহেতু সাবধানতা বেশি থাকে তাই সচেতন আবশ্যক তাদের। অবশ্য খাড়া পথ খুবই কম শিলংয়ের পথে। কেননা পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরির তুলনা এখানে মনযোগ দেয়া হয়েছে দুই পাহাড়ের মাঝের জায়গাটা ব্যবহারের। তাই যতটা সম্ভব অ্যালটিটিউট এড়ানো গেছে। পথের এই আরামটাই বড় প্রাপ্তি ভ্রমণের ক্ষেত্রে। সাথে যদি থাকে আরামদায়ক বাহন। আমরা উঠেছিলাম গেস্ট হাউস টাইপের একটা আবাসিকে। ভাড়া ট্যুরিজম বোর্ড অফ মেঘালয়ের নির্ধারণ বলে দরদামের সুযোগ নেই। এখানে সব আবাসিকেই দুইজনের জন্য মোটামুটি ১২ থেকে ১৫শ রুপি ভাড়া। বাড়তি একজনের জন্য দিতে হবে বাড়তি ৩০০ রুপি। আমরা ১৮শ রুপিতে দারুন এক গেস্ট হাউসে উঠে গেলাম। ঠাণ্ডা-গরম পানি। পরিপাটি, ছিমছাম কক্ষ। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা সবখানেই চোখে লাগে। ব্যাতিক্রম, কোথাও সিলিং ফ্যান দেখলাম না। এই হিল স্টেশনে ফ্যানের বালাই নেই। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র আছে। খাবারের জন্য আমাদের পছন্দ সুরুচি আর দাদা হোটেল। দুপুর আর রাতে খেলাম সেখানে। ঘুরে দেখলাম শিলং ও আশপাশের সাইট সিয়িং পয়েন্ট। বিভিন্ন চার্চ আর স্থাপনা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় যতটুকু, ততটুকু নেয়ার চেষ্টা করলাম। সন্ধ্যায় সময় কাটলো আলো ঝলমলে পুলিশ বাজার পয়েন্টে। সাথে স্ট্রিট ফুড। রাস্তায় রাস্তায় রেস্তোরা, বার, লেট্টোর (জুয়া) অসংখ্য দোকান। হেটে হেটে পুলিশ বাজার চক্কর মারলাম গোটা ৩ বার। ৯ টার পর নিভে আসতে লাগলো শহরের কেন্দ্রের একেকটি আলো। আমরা ঘুরেফিরে ১২ টার দিকে রুমে গিয়ে শুয়ে পরলাম। পরের দিনের গন্তব্য মূল আকর্ষণ চেরাপুঞ্জি।
পরদিন সকালে উঠে নাস্তা সেরে। রবীন্দ্রনাথকে খুঁজতে বের হলাম। রবীবাবুর মামার সেই বাড়িটা পেলাম কিন্তু ভেতরে যাওয়ার অনুমতি নেই। প্রাইভেট প্রপার্টি। দূর থেকে দেখতে হবে। দেখলাম রবীর আলখেল্লা। ঘুরে ফিরে চিত্তে রবীন্দ্রনাথের একখানা ছাপ নিয়ে চললাম চেরাপুঞ্জি।
যেমনটা ভেবেছিলাম, তার তুলনায় বেশ গোছালো, ছিমছাম ঐতিহাসিক চেরাপুঞ্জি। ছোটবেলায় বইয়ের পাতায় পরিচয় যে জায়গার সাথে, সেখানকার উদ্দেশে ছুটছে আমাদের ওয়াগন আর। শিলংয়ে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা সেরেই বেরিয়ে পড়েছিলাম রিজার্ভ গাড়ির খোঁজে। মেঘালয় ট্যুরিজম বোর্ডের নির্ধারিত ভাড়ায় চলে এখানকার ট্যাক্সিগুলো। জানা ছিল আগেই। মোটামুটি ২ হাজার রুপির মধ্যে গাড়ি ঠিক করে চলেছি সোহরা বা চেরাপুঞ্জির পথে। এখানেও পাহাড়ের মাঝ দিয়ে না নিয়ে রাস্তা করা হয়েছে দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী এলাকা আর নিম্নতম খাদ ধরে। তাই পাহাড়ি হলেও খাড়া পথ নেই। দুপাশের পাইন, পাহাড়ি নদী আর ঝর্ণার সাথে যোগ দিয়েছে মেঘ। সে এক অসাধারণ দৃশ্য। আগস্টের শেষভাগে গা ভেজানো মেঘ ভেদ করে ক্রমশ এগিয়ে চলা। পথে মকট ভিউ, রিজার্ভ ফরেস্ট, আরুয়া পার্কের অসাধারণ ৩০০ মিটারের গুহা আর ওয়াহ কাবা ফলস। ঘণ্টা দুয়েক পর পৌঁছে গেলাম চেরাপুঞ্জি বাজারের কাছে রামকৃষ্ণ মিশনে। কিছু সময় মিশনের কার্যক্রম ঘুরে দেখা তারপর সেভেন সিস্টার্স আর অন্যান্য স্পটের উদ্দেশে ছুট। গাড়ি যায় প্রতিটি স্পটের দোরগোড়ায়। মাথাপিছু মূল্য চুকাতে হয় প্রতিটি জায়গায়। এমনকি ক্যামেরার জন্য আছে আলাদা টোল। অসাধারণ সেসব স্পটের তুলনায় অবশ্য ১০-১৫ রুপি কিছু্ট মনে হয়নি। তবে ভালো লেগেছে ২টি বিষয়। প্রথম: স্থানীয়দের সচেতনতা দ্বিতীয়: ওখানে টিকিট কেটে বাংলাদেশ দেখার বিষয়টি। সিলেট, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা প্রতিটি টপ ভিউ থেকে দেখা মেলে। স্মৃতির ভাড়ে বেশকিছু জমা-খরচের পর আমরা উঠলাম চেরাপুঞ্জি চৌরাস্তার মুখের একটি গেস্ট হাউসে। বিকেলে ভাত, মাছ। রাতে মোমো আর লোকাল সব ফুড দিয়ে খাবারের পর জম্পেস একটা ঘুম। ইংরেজি বলতে পারে এখানকার খুব কম মানুষ। ঠিক শিলংয়ের উল্টো। বেশিরভাগই খৃষ্টান ধর্মাবলম্বী। শুকরের মাংস আর মদ প্রিয় বেশিরভাগ খাসিয়া অধিবাসীর। তবে আপনি বললে আপনার মেনু সাধ্যমত করার চেষ্টা করবে।
পরের দিন রোববার। ছুটির দিন। খাসিয়ারা প্রার্থনা দিন হিসেবে মানে। তাই রাস্তায় কোন সাড়া শব্দ নেই সড়কে। হুড়মুড় করে বেরিয়ে গেস্ট হাউসের মালিকের গাড়িতে চললাম আমাদের মাস্ট সিয়িং স্পট নংরিয়াত গ্রামের দিকে। ডাবল ডেকার আর সিঙ্গেল ডেকার ব্রিজ দেখবো এখানে। প্রায় সাড়ে তিন হাজার স্টেপ বা সিড়ি বানানো আছে নংরিয়াত ভিলেজের পথে। এই পথ শেষ করে বামে ডাবল ডেকার আর ডানে সিঙ্গেল ডেকার ব্রিজ। আমরা চলেছি বায়ে ডাবল ডেকারের পথে। আমাদের ড্রাইভার কাম গাইড জানালো এখান থেকে ঘণ্টা খানেক লাগবে গ্রামটিতে পৌঁছাতে। সেখানেই মিলবে দুপুরের খাবার আর বিশ্রাম।
আরও ছবি : Click This Link
ব্রিজ আর পথে পাহাড়ি নদীর বুনো রূপে মুগ্ধতা থাকলো সন্ধ্যা পর্যন্ত। আমরা ফিরে এসেছি চেরাপুঞ্জি শহরে, আমাদের গেস্ট হাউসে। এখান থেকে পরদিন আমাদের গন্তব্য আরুয়া পার্ক, মওলিংনং (পরিচ্ছন্ন গ্রাম) আর বিকেলে বাংলাদেশ।
খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে গেস্ট হাউস ছেড়েছি। আগে থেকে ঠিক করে রাখা ট্যাক্সিতে চলেছি আরুয়া পার্কে। আধঘণ্টা লাগলো পৌঁছাতে। টিকিট কাটতে গিয়ে শুনলাম। এখানে ৩০০ ফুট দৈর্ঘের একটা গুহা পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে মাত্র কয়েকদিন আগে। ঝুম বৃষ্টিতে আমাদের সাথে চললেন গাইড কাম স্থানীয় স্কুল শিক্ষক (নামটা ভুলে গেছি)। কিছুদুর হেটে ঢুকে পড়লাম গুহায়। অসাধারণ। খুব আফসোস হচ্ছিল কেন ক্যামরাটা গাড়িতে রেখে এলাম। পুরো গুহা ঘুরে দেখতে ঘণ্টাখানেক লাগলো। পরিচিত হলাম স্টেলাটমাইটের সাথে। গুহায় ফসিলের অস্তিত্বও পাওয়া গেছে এখানে। গাইড দেখালেন গুহাটার শাখা প্রশাখাও বেড় হচ্ছে। কাজেই আগামীতে বড় হবে গুহার কলেবর। গাইডের সাথে সুন্দর একটা জার্নি শেষে তিনি আমাদের বাইরে রাখা আমাদের গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন। সুন্দর পরিস্কার ইংরেজি। পকেটে হাত দিয়ে ১০০ রুপি উঠে এলো। এগিয়ে দিলাম ভদ্রলোকের দিকে। ঠিক ততটাই ভদ্রতার সাথে রিফিউজ করে জানালেন বর্ষার এসময়ে স্কুল বন্ধ থাকে। তাই এখানে গাইডের দায়িত্ব পালন করেন। তাকে যে টাকা দিতে হবে সেটা আমি টিকিটের সাথেই দিয়েছি। তাই সে কোন অর্থ নেবে না! খুব ভালো লাগলো। খুব। স্থানীয় সচেতনতা, জ্ঞান আর এমন টনটনে মর্যাদাবোধ ট্যুরিজমের জন্য খুবই দরকার। এখান থেকে বেরিয়ে মওলিংনং পৌঁছাতে লাগলো ঘণ্টা দুয়েক। দুপুর দেড়টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত আমরা ঘুরে দেখলাম – গ্রামের সিঙ্গেল রুট ব্রিজ। মেঘালয়ে বেশ কটা সিঙ্গেল রুট ব্রিজ আছে। এছাড়া মওলিংনং গ্রামও দেখে পরিচ্ছনতার বড় একটা শিক্ষা নিলাম। এখানে বিশাল ট্রি হাউজে রাত কাটাতে পারলে ভালো হতো। ভাবতে ভাবতে রওয়ানা হলাম ডাউকি বর্ডারের দিকে। এখানে কাস্টম আর ইমিগ্রেশনের হ্যাপা সেরে নেয়ার আগে বাদবাকি রুপি ভাঙানোর চেষ্টা করলাম। হলো না। অগত্যা বিদায় মেঘালয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০২