খোলা ডাস্টবিন , আর ময়লার র্দুগন্ধ , এখন কিছুটা অভ্যাস হয়ে গেছে , প্রথম প্রথম একটু মাথা ব্যাথা আর কিছুটা খারাপ লাগতো , এখন আর তেমন কোন সমস্যা হয় না , গাড়ির শব্দ , ট্রাপিক জ্যাম এই সব ও শয়ে গেছে ।
রাস্তার পাশের ফুটপাত দরে হাটছি , নগরীর মানুষ গুলো এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছে , কারো দিকে তাকানোর সময় নেই , সবাই যার যার কাজে ব্যাস্ত , আমিও হাটছি , কিন্তুু আমার তেমন তাড়া নেই , তাই আমি দেখছি ছুটে যাওয়া মানুষ গুলোকে , ছুটে যাওয়া গাড়ি গুলোকে । বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতে আর কিছু সময় বাকি , কর্ম ব্যস্ত মানুষ গুলো একটু পরেই ছুটবে তাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে । গাড়ির এই ছুটে চলায় রাস্তার ধুলো-বালি গুলো বাতাসের সাথে মিশে চারদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে , ধুলোর হাত থেকে বাচতে কেউ কেউ মুখে মুখোশ লাগিয়ে হাটছে , হাটছিতো হাটছিই , কি ধুলো আর কি বালি সব কিছুই সমান ।
আস্তে আস্তে সন্ধ্যা নেমে এলো রাস্তার উপরের লাল হলূদ বাতি গুলো জ্বলতে শূরু করলো সেই আলোর মাঝ দিয়ে হাটত বেশ ভালো লাগছে , অনেক দিন পর আবার রাতের ঢাকায় এই ভাবে হাটছি , শাহবাগ থেকে টিএসসির রাস্তা ধরে হাটছি , ছুটতে শুরু করলো ঘর মুখী মানুষ জন । আবার কেউ বা কোথাও ফুটপাতের চায়ের দোকানে বসে গল্প করছে সহপাটিদের সাথে , প্রেমিক যুগল রাস্তার দ্বারে , অনেকে কোন গাছের নিছে বসে বলে চলেছে তাদের অফুরন্ত কথা , মাঝে মাঝে দু একটা বিষয় চোখে পড়ছে , কেউ বা তার ভালোবাসার বহিপ্রকাশ হিসেবে , প্রেমিকার ঠোটে চুম্বন খাচ্ছে । তৃপ্তির চুম্বন । মানুষ কত রকমেই না তার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করে , তার মধ্যে একটি হলো চুম্বন , হেটে চলছি হলুদ বাতির নিচ দিয়ে , বাতির আলৌ গায়ে পড়ায় নিজের শরীর টাকেই নিজের কাছে অচেনা মনে হচ্ছে , হলুদ ধুসর আলো তার মাঝে নিকোটিনের সাদা ধোয়া , এক অন্য রকম মুহর্তের জন্ম দিলো , কিছুক্ষণ তা দেখলাম , আবার হাটতে শুরু করলাম , হাটতে হাটতে একটি গাছের নিচে থাকা বেন্ঝে বসে পড়লাম , অনেক হাটা হয়েছে , অনেক দিন পর হাটালাম বলে একটু ক্লান্তি লাগছে , রাস্তার গাড়িদের ছুটাছুটি কমে গেছে , গাছের ফাক দিয়ে ছোট ছোট আলো গুলো ছুটে যাচ্ছে একটু পর পর , এই গুলো বড় গাড়ির আলো নয় , সি এনজি অটো রিকশার , মাঝে মাঝে দু একটা প্রাইভেট কার ও দেখা যায় , হলুদ আলোর মাঝ দিয়ে সাদা আলোর ছুটে যাওয়া আরেকটি দৃশ্যের সৃষ্টি করলো , এই দৃশ্য বলে বুঝার নয়, এর কোন ছবিও আকা যায় না, কেবল দু চোখ ভরে দেখা যায়, একটু পরেই কিছু দুরের একটা ঝোপের আড়াল থেকে একটু একটু শব্দ বেসে আসলো কানে , না কোন সাপ কিংবা পশুর নয় , মানুষের নিশ্বাস এর শব্দ বাতাসের গতির সাথে তার মাত্রা বাড়ে আর কমে , একটি ক্লান্তির নিশ্বাস , একটা অদ্ভুদ নিশ্বাস , তার কিছু পরেই দু-জন লোক আড়াল থেকে বের হয়ে আসলেন, একটু অবাক হয়েছিলাম , কারণ এই রকম পরিস্থিতি তে এর আগে কখনো পড়ি নি , আজই প্রথম , না এই খানে আর বসা হবে না, উঠতে হবে , আবার হাটা শূরু করলাম , আবার সেই একই শব্দ গাছের আড়াল থেকে , নিষিদ্ধ নিশ্বাস এর ধ্বনি । চারিপাশেই সেই শব্দ , ওই মুহর্তের বাতাস কে ভারী করে তুলছে , হাটছি আগের তুলনায় কিছুটা দ্রুত , ধীরে ধীরে বাতাসের সাথে মিশে গেলো সেই শব্দ । বাতাসে তার আভা এখনও রয়েই গেলো ।
এই শহরে রাতের আধারে খুচরো পয়সায় নিষিদ্ধ সুখ বিক্রয় হয়, সেই সুখের শব্দে বাতাস ভারী হয়ে উঠে নগরী.....................এই ভাবেই একটি দিনের শূরু এবং শেষ টা ঘটে ........
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৫:৫৯