আগেই বলেছিলাম এটি একটি খোলামেলা আলোচনা , সুতরা আপনি এই আলোচনায় অংশ নিতে পারেন । কমেন্টস করে । তবে হ্যাঁ দয়া করিয়া কেউ অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবেন না । প্রয়োজনে আপনি পোষ্ট এড়িয়ে যান । ধন্যবাদ ।
বুঝা এবং লেখার স্বার্থে আমরা একটা চরিত্রে কে নিয়ে আলোচনা করবো । আমি আবার ও বলছি এটি একটি মুক্ত আলোচনা । কাউকে হেয় করার নয় । কাহিনী যদি কারোর জীবনের সাথে মিলে যায় তাহলে লেখক কোন ভাবেই দায়ী নয় । আর ওহ আরেকটি কথা লেখার সময় হয়তো মাঝে মাঝে কোন একটি সাবজেক্ট এর উপর বিত্তি করে আমরা কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে যাবো । সেটাও দেখবেন । অন্যকিছু মনে করবেন না । তাহলে এবার আমদের মুল আলোচনায় আসা যাক ।
করিম একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকুরী করে । তার পরিচিত একবড় ভায় অনলাইনের মাধ্যমে ফ্যাশান পণ্য বিক্রয় করে । বিষয টি করিমের খুব ভালো লাগে । করিম মনে মনে চিন্তা করে সেও এই ব্যাবসা শূরু করবে । কারণ তার কাছে মনে হলো যে এটা একটা সহজ আয়ের উৎস । কারণ সে দেখেছে তার ওই ভাই ফেইসবুকে পণ্যের কিছু ছবি , আপলোড দেয় আর তারপর বেচাকেনা শুরু হয় । এই দেখে করিম এই ব্যবসার প্রতি আকৃষ্ট হলো ।
একটু বলে রাখি এই প্রেক্ষাপট টা বললাম কারণ , আমাদের অনেকেই এই ভাবে এই সেক্টর এ প্রবেশ করেছি ।
এখন করিম কি করবে । সেতো সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে যে সেই ই-কমার্স ব্যবসা করবে । তাই সে ই-কামর্স লিখে গুগোল সার্চ দিলো । অনেক গুলো লিংক আসলো আর করিম একটা একটা করে পড়তে লাগলো । করিম পড়ে যা দেখলো তা হলো সে যেমনটা ভেবেছে বিষয়টা তেমন সহজ না । এখন সে কিরবে ? ভেবে পাচ্ছে না , এই দিকে সে চাকুরীটা ছেড়ে দিবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে । কিন্তু ব্যঅপারটা যে এখন অনেকটা ভিন্ন মনে হচ্ছে । কিন্তু তার ভাই তো এমন কিছু ফলো করছে না । তাহলে ? যাই হোক করিম তার সিদ্ধান্ত ঠিক রাখলো । তবে কিছুটা পরিবর্তন আনলো তার সিদ্ধান্তে । পরিবর্তনটা হলো এমন , যে সে আগে এই সেক্টরটা সর্ম্পকে বালো ভাবে জ্ঞান নিবে । তার পর সে তার যাত্রা শুরু করবে । কারণ হারতে সে পারবে না ।
আমরা এখন পর্যন্ত যা বুঝলাম , তাহলো আমরা যদি এই সেক্টরে কাজ করতে চাই তবে , অনেক পড়ার অভ্যাস করতে হবে । যেকোন সেক্টর নিয়ে কাজ করিনা কেন , অবশ্যয়ই সেই সেক্টর এর উপর আমদের সঠিক জ্ঞান থাকতে হবে , না হয় একটা লসের মুখোমুখী পড়তে হবে ।
এইবার আসি ই-কমার্স :
ই-কামার্স , আলাদা কোন ব্যবসা নয় । এইটা ব্যঅবসার একটি নতুন ভার্সন । আমাদের অনেকেই এই ভুলটা করে থাকি , ই-কমার্সকে নতুন একটা ব্যবসা হিসেবে বিবেচনা করে ।ই-কামর্স হলো আপনি আপনার পণ্য / সেবা অনলাইনের মাধ্যমে আপনার টার্গেট কাস্টোমার এর কাছে পৌছে দেবেন । এইবার সেটা ওয়েব সাইট , ফেইসবুক , মোবাইল , কিংবা অন্য কোন মাধ্যেমে , কাস্টোমার তার অবস্থান থেকেই আপনার পণ্য দেখতে পাবে । এবং চাইলে কিনতে পারবে । এটাই ই-কমার্স । অফলাইনে আপনার একটা শো-রুম আছে আর এইখানে আপনার শো-রুম হিসেবে কাজ করবে , আপনার ওয়েব সাইট ।
বিশ্ব ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে বিশ্বে ই-কমার্স ব্যবসার প্রচলন শুরু হয়েছিল ১৯৭৯ সালে ব্রিটেনে। এরপর ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন সময়ে আরও কিছু প্রতিষ্ঠান এ ব্যবসায় আসলেও তেমন সাড়া জাগানো কিছু করতে পারেনি। তবে সব কিছু বদলে যায় ১৯৯৫ সালে আমাজন (Amazon.com) এবং ই-বে (ebay) যাত্রা শুরুর পর।
ই-কামার্স এর প্রকার ভেদ :
ব্যবসা-থেকে-ব্যবসা (B2B):
ব্যবসা-থেকে-ব্যবসা ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে। ৮০ শতাংশের (৮০%) মত ইলেকট্রনিক কমার্স ব্যবসা-থেকে-ব্যবসা প্রকার এর অন্তর্ভুক্ত।
ব্যবসা-থেকে-গ্রাহক (B2C):
ব্যবসা-থেকে-গ্রাহক ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকের মধ্যে। এই প্রকারে দ্বিতীয় সর্বাপেক্ষা বেশি ইলেকট্রনিক বাণিজ্য সম্পাদন হয়ে থাকে।
ব্যবসা-থেকে-সরকার (B2G):
ব্যবসা-থেকে-সরকার ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রীয় খাতের মধ্যে। এটি সাধারনত ব্যবহৃত হয়ে থাকে রাষ্ট্রীয় কেনা/বেচা, লাইসেন্স সংক্রান্ত কার্যাবলী, কর প্রদান ইত্যাদি ক্ষেত্রে।
গ্রাহক-থেকে-গ্রাহক (C2C):
গ্রাহক-থেকে-গ্রাহক ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় একাধিক ব্যক্তি ও গ্রাহকের মধ্যে। ইলেকট্রনিক বাজার ও অনলাইন নিলাম এর মাধ্যমে সাধারণত এই ধরনের বাণিজ্য সম্পাদিত হয়।
মোবাইল কমার্স (m-commerce):
মোবাইল কমার্স ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় তারবিহীন প্রযুক্তি যেমন মোবাইল হ্যান্ডসেট বা পারসোনাল ডিজিটাল অ্যাসিস্টেন্ট (PDA) এর মাধ্যমে। তারবিহীন যন্ত্রের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদানের গতি ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির সাথে সাথে এই ধরনের বাণিজ্য জনপ্রিয়তা লাভ করছে।গ্রাহক থেকে সরকার (সি টু জি) কখনো সরসরি জনগনের কাছ থেকে সরকার বিভিন্ন সেবার বিনিময় ফি বা কর নিয়ে থাকে। যখন এর মাঝে কোন মাধ্যমৈ থাকেনা তখন এটা গ্রাহক থেকে সরকার পক্রিয়া বলে বিবেচিত হয়। ডিজিটাল গর্ভসসেমএর আওতার এ ধরনের সেবা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
করিম বিষয় গুলো সর্ম্পকে জানার পর এইবার সে চিন্তা করলো তার একটি ওয়েব সাইট থাকবে । এইবার তার নাম নিবার্চন নিয়ে সে পড়লো এক বেকায়দায় , যেটা আমাদের ও হয় ,
একটি ই-কমার্স কোম্পানীর নাম আর আমাদের ভাবনা সমূহ :
নাম নিয়ে আমাদের এই সমস্যটা অনেক । জেফ বেজোস যখন তার কোম্পানীর নাম অ্যামাজন রাখছিলেন তখন তিনিও হয়তো আপনার আমার মতো কিছুটা ভাবনার ভিতর পড়ে গেলেন । আমার মতে অ্যমাজন রাখার পিছনে একটা কারণ হলো , বিশ্বে অ্যামাজন একটি বড় বন । যে কারণে তিনি এই নাম করন করেন । অ্যামাজন ও ই-কমার্স এর একটি বড় কোম্পানী হবে বলে । জ্যাকমা তার কোম্পানীর নাম আলীবাবা রাখার সময় ও কিছুটা চিন্তা করেছেন । এখন দেখছি আমারা একটি নামের সাথে মিল রেখে নাম রাখার চেষ্টা করছি । আরে ভাই একটা সহজ উত্তর এক বাবার সব সন্তানই কি সফল হয় ? আপনি তখন বলবেন না । তাহলে আপনি কিভাবে ভাবছেন যে নামের সাথে নাম মিলিয়ে রাখলেই আপনির কোম্পানী অনেক পরিচিত হবে । সবটাই নির্ভর করবে । আপনার পণ্য/ সেবা এবং আপনার মার্কেটিং এর উপর , সার্ভিস এর উপর । তবে হ্যাঁ নাম একটা বিশাল ফ্যাক্ট , আপনি একটি নাম নির্বাচন করুন যে নামের সাথে আপনার পণ্য বা সেবার মিল থাকে ।
হয়ে গেলো একটি নাম , ডোমেইন , হোসটিং নেওয়া শেষ এইবার সাইট করা । কি ভাবে করবেন । সেটা কোন ভালো ডেভলপার এর মাধ্যমে করিয়ে নিতে পারেন । তবে সেটা হতে হবে ..
* কালার স্কিম যাতে প্রোডাক্টের সামঞ্জস্য রেখে হয়, কঞ্জিউমার টার্গেটেড কালার স্কিমও জরুরি।
* প্রোডাক্ট সাজানোর ক্ষেত্রে ক্যাটেগরির দিকে খেয়াল রাখা, একই ক্যাটাগরির সাব-ক্যাটাগরি করে প্রোডাক্ট সঠিক ক্যাটাগরিতে সাজানোর ব্যবস্থা রাখা
* সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে ঠিকভাবে সিংক করা।
* রিলেটেড প্রোডাক্ট গুলো অটো অ্যারেঞ্জ হওয়ার ব্যবস্থা রাখা। নেভিগেশন সিম্পল রাখা।
* প্রোডাক্ট আপ্লোডের ক্ষেত্রে হাই রেজুলেশনের ইমেজ আপ্লোড করা
* ডিটেইল্ড প্রোডাক্ট ইনফো দেয়া, তবে হ-য-ব-র-ল না করা, যাতে সহজে কঞ্জিউমার পড়তে পারে।
*সার্চ অপশনের ক্ষেত্রে এডভান্সড সার্চ অপশন রাখা খুব জরুরি।
* যথাসম্ভব সাইট হাল্কা রাখা, সিম্পল রাখা।
* চেক-আউট পেইজে প্রমোশনাল কিছু না রাখা।
* অনেক জরুরি একটা বিষয়, কন্ট্যাক্ট ইনফোটা স্বচ্ছভাবে রাখা, যাতে কঞ্জিউমার কনফিউজড না হয়।
* স্পেশাল ডিস্কাউন্ট ক্লিয়ারলি যাতে দেখা যায়, তবে কোন কাজের মাঝখানে পপ-আপ টাইপের নাহ।
* সাইটে এনালিটিক্যাল সিস্ট্যাম রাখা, যাতে ট্রাফিক, সেলস ইত্যাদি ট্র্যাক করা যায়, কোথা থেকে আসছে
একটা সাইট হয়ে গেলো । আপনার টার্গেট প্রোডাক্ট এইবার আপনার সাইটে তুলুন । অবশ্যই আপনাকে সব কিছুই আগে থেকেই করতে হবে । টোটাল একটা বিজনেজ প্লান সাজিয়ে মাঠে নামতে হবে । তবেই নিজেকে তুলে ধরতে পারবেন । আপনার কাস্টোমার দের কাছে । করিম বিভিন্ন সাইট থেকে এই বিষয় গুলো জেনেছে । এবং একটি প্লান সাজিয়েছে । এখন তার একটি ই-কমার্স ওয়েব সাইট আছে । যেখানে সে তার পণ্য গুলো বিক্রয় করবে বলে পণ্যের ফটো আপলোড করেছে । তার বিক্রয় শুরু হয়েছে ।
করিম এর পরের দিন গুলো নিয়ে পরবতী পোষ্টে আলোচনা করা হবে , সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন ।
ওহ হ্যাঁ... একটি কথা দিন শেষে অনেকর কাছ থেকে আনা একটি পণ্য বির্কয় করবেন আর বুক উচিয়ে বলবেন , আহ আমার তো আজ সেই বিক্রয় হয়েছে । এই চিন্তা থেকে বের হয়ে আসুন । কারণ ব্যবসা কখনই ইনভেস্ট এবং প।লান ছাড়া হয় না । সুতরাং .. আগে নিজেকে গুছিয়ে নিন, তারপর মাঠে নামুন ।
ধন্যবাদ
তথ্য সুত্র : ইন্টারনেট .......
চাইলে ফেইসবুকে আমি আমার ফেইসবুক প্রোফাইল