জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ও সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের নতুন বিয়ের খবরের সত্যতা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল শনিবার একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত মমতাজ বেগমের নতুন বিয়ে সম্পর্কে মেয়র স্বামী রমজান আলীর মন্তব্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, দেখা দিয়েছে নতুন জটিলতার। মানিকগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান মেয়র মমতাজ বেগমের দ্বিতীয় স্বামী মোঃ রমজান আলী গতকাল শনিবার মানিকগঞ্জের সাংবাদিকদের বলেছেন, খবরের সত্যাসত্য সম্পর্কে পত্রিকাটিই ভালো বলতে পারবে । মমতাজ ও ডাক্তার মঈনের বিয়ে যদি হয়েই থাকে তাহলে 'আলহামদুলিল্লাহ' বলতে আমার কোনো বাধা নাই। আমি আলহামদুলিল্লাহ বলছিও। কিন্তু আমার হাতে মমতাজের পক্ষ থেকে ডিভোর্সের কোনো কাগজ কিংবা নোটিশ এখনো পেঁৗছেনি। আমি নিজেও তাকে ডিভোর্স দেইনি। ভবিষ্যতে মমতাজ যদি ডিভোর্স দেইই, তবে তার কাছে থাকা আমার মেয়েদের নিজের কাছে নিয়ে আসবো। প্রয়োজনে মেয়েদের জন্য আদালতের আশ্রয়ও নেবো। মেয়র মোঃ রমজান আলী শনিবার দুপুরে তার মানিকগঞ্জ শহরের বাসায় কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে মমতাজের বিয়ে প্রসঙ্গে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে এসব কথা বলেন। এসময় রমজান আলীর প্রথম স্ত্রী আফরোজা রমজানও উপস্থিত ছিলেন। রমজান আলী বলেন, ডা. মঈন হাসান চঞ্চলের সাথে মমতাজের মেলামেশার খবর আমি জানি। আমি এর মধ্যে মমতাজকে তালাকের প্রস্তাবও পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু আমার প্রথম স্ত্রী আফরোজার অনুরোধে এর বেশিদূর অগ্রসর হইনি। রমজান আলীর প্রথম স্ত্রী আফরোজা রমজান এ প্রসঙ্গে বলেন, মমতাজের সাথে আমার স্বামীর বেশ কিছুদিন ধরেই কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু মমতাজের গর্ভে জন্ম নেয়া তার দু'সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমি আমার স্বামীকে ডিভোর্স'র বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেইনি। এ ছাড়াও মমতাজ একজন সম্মানিত সংসদ সদস্য। তাকে ডিভোর্স দেয়াটাও শোভন হতো না। মমতাজের সাথে থাকা তার দু'মেয়ে প্রসঙ্গে রমজান জানান, মমতাজের সাথে তেমন কোনো যোগাযোগ না থাকলেও আমার মেয়েদের খোঁজখবর আমি সবসময়ই নেই। তাদের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের যোগানও দেই। পিতা হিসেবে এটি আমার কর্তব্য। গত দুমাস আগেও আমি আমার দু'মেয়েকে দু'টি ল্যাপটপ কিনে দিয়েছি। কয়েকদিন আগে বিদেশ সফরে গিয়ে ওদের জন্য মোবাইল সেটও নিয়ে এসেছি। রমজান আলীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে রমজান আলীর সঙ্গে মমতাজের বিয়ে হয়। তাদের প্রথম সন্তান রৌহানীর জন্ম ২০০১ সালের ৭ জানুয়ারি। দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট। উল্লেখ্য, বিয়ের পর মমতাজ বেগম তার দ্বিতীয় স্বামী মোঃ রমজান আলীর গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার নয়াকান্দিতে প্রায়ই যেতেন। সেখানে মাঝে মধ্যে থাকতেনও। কিন্তু বিয়ের পর একদিনের জন্যও মমতাজ বেগম রমজান আলীর মানিকগঞ্জ শহরের বাড়িতে উঠতে পারেননি। এ বাড়িতে রমজান আলী তার প্রথম স্ত্রী আফরোজা রমজানকে নিয়ে দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন। মমতাজের নতুন বিয়ের খবর ছাপা হওয়ার পর মানিকগঞ্জ জেলাজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। মমতাজ বেগমের সঙ্গে টেলিফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে সরাসরি পাওয়া যায়নি। তার দুটো মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করে একটি বন্ধ পাওয়া যায়। আরেকটিতে যোগাযোগ করলে রতন নামে তার এক ভাইয়ের ছেলে ফোন ধরেন। তিনি জানান, মমতাজ ঢাকায় নেই। চট্টগ্রামে গেছেন। তিনি নতুন আরেকটি নাম্বার দেন। ওই নতুন নাম্বারে ফোন করলে ধরেন মমতাজে বেগমের দীর্ঘদিনের একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী ফরিদ আহমেদ। তিনি বিয়ের ঘটনাটিকে রটনা বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এর কোনো সত্যতা নেই। আমি জানি মেয়র সাহেবের সঙ্গে তার ডিভোর্স হয়নি। আপনি কি নিশ্চিত মমতাজ নতুন বিয়ে করেননি- এই প্রশ্নের জবাবে ফরিদ বলেন, আমি দীর্ঘদিন মমতাজ ম্যাডামের সঙ্গে আছি। কিন্ত তার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আমি কিভাবে বলি? তিনি মমতাজের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে বলেন। পিএস ফরিদ জানান, মমতাজ বেগম চট্টগ্রাম থেকে বিমানে ঢাকায় আসবেন। তারপর তার ফোনে যোগাযোগ করলে আসল তথ্য জানা যাবে। ফরিদ আরো জানান, যে ডাক্তারের সঙ্গে মমতাজের বিয়ের কথা উঠেছে সেই ডা. চঞ্চল ঢাকার শ্যামলীতে থাকেন। তিনি এখনো মানিকগঞ্জে মমতাজ চক্ষু হাসপাতালে কাজ করছেন। খবর রেরিয়েছে, মমতাজের নিজের হাসপাতালের ডাক্তার চঞ্চলের সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেমের পর তাদের বিয়ে হয়। পাত্রের পুরো নাম ডা. মো. মঈন হাসান চঞ্চল। তিনি মানিকগঞ্জ সদরের মমতাজ চক্ষু হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক। চঞ্চলের বাবা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ও মা ডা. জাহানারা বেগম যশোর শহরে লালদিঘীর পাড়ে অবস্থিত সালেহা ক্লিনিকের মালিক। চঞ্চলের বাবা-মা'র সম্মতিতে আয়োজন করেই এ বিয়ে হয়েছে।
সরাসরি পত্রিকা থেকে। লিংক নিচেঃ
Click This Link