ফটাশ করিয়া শব্দ হইলো।
মি: আগা খান সহসাই বুঝিল, তাহার পাজামার নেড় (রশি) ছিড়িয়াছে।
নেড় ছিড়িয়াছে ইহাতে তাহার দু:খ নাই। নেড়-ইতো ছিড়িবে, লিফট এর দড়িই ছিড়িয়া যায়, ইহাতো সামান্য নেড়।
কিন্তু সমস্যা হইলো 'স্থান'।
এমন স্থানে ফটাশ হইয়াছে যে আরেকটু হইলেই পাজামা ধুলায় ঝাপাইয়া পড়িত, সাথে তাহার মান ইজ্জতও।
টি.এস.সির মোড়ে দাড়াইয়া জীবনের প্রথম সে বিমুগ্ধ নয়নে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার (অপরাজেয় বাংলা) মুর্তি দেখিতেছিল এবং তাহার অনেক কষ্টে কেনা সিম্ফনি সেটটি দিয়া ফটাফট ফটো তুলিতেছিল।
ঘটনাটা তখনই ঘটিল।
পাশে দিয়া একটি দ্রুত ধাবমান গাড়ির গতি সংক্রান্ত কারনে তৈরী ধুলার কিয়দংশ যখনই মি: আগা খানের নাসিকায় প্রবেশ করিল ঠিক তখনই "হেইচ্চ"।
সেই হেইচ্চর ঠেলায় তাহার পাজামার দুর্বল রশি ছিড়িল।
যেই মুহুর্তে পাজামা নিম্নমুখি হইয়া ভুমি পানে ছুটিল ঠিক সেই মুহুর্তে মি: আগা খান তাহার সর্ব প্রকার প্রচেষ্টা প্রয়োগ করিল পাজামার নিম্নমুখি গতি রোধ করার।
আগা মিয়ার আগা বাহির হইবার আগেই "অপরাজেয় বাংলা"র সামনে তাহার সম্মানটুকু রক্ষা করিতে সক্ষম হইল।
কিন্তু বাংলার বিহার উরিষ্যার প্রধান অধিপতির সিংহাসন হারাইবার মতোই আগা মিয়া তাহার প্রাণ প্রিয় সিম্ফনিটাকে হারাইল।
কারন, যে সময় তিনি তাহার সম্ভ্রম বাঁচাইতে যুদ্ধে অবতীর্ণ ঠিক সেই মুহুর্তে তাহার হাতের সিম্ফনি হাত হইতে ছুটিয়া রাস্তায় ঝাপাইয়া পড়িল, আর গাড়ির চাকা উহাকে পিষ্ট করিতে কোন প্রকার কাল ক্ষেপন করিল না।
দু:খে মি: আগা খানের বুক ভাংগিল। কিন্তু তাহা শুধু কিছুটা মুহুর্তের জন্য মাত্র।
কারণ, ধাতস্থ হইয়া সে এই ভাবিবার প্রয়াশ পাইলো যে, সিম্ফনি গিয়াছে উহা আবার কিনিয়া লইতে পারা যাইবে, কিন্তু টি.এস.সির মোড়ে বসা সারি সারি সুন্দরি তরুনীদের সম্মুখে যদি আজ তাহার পাজামা ধুলায় লুটাইতে পারিত তবে তাহার বাঁচিবার জন্য আর কোন সম্মান বাকী থাকিতনা।
শেষ মেষ মি: আগা খান মোবাইলের ভাংগা টুকরাগুলো এক হাতে লইয়া অন্য হাতে পাজামা আগলাইয়া গন্তব্যে ছুটিল।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৭:৫১