ভাল আছ মা। কত মাস পেরিয়েছে !
দেখতে দেখতে গোটা দশেক বছরও
গেল । আজকাল বেশি অভিমানি হয়ে
গেছ। এত মানুষ স্বপ্নে ঘুরঘুর করে আর
তোমার পাত্তা নেই । একা থাকতে
তোমার এত ভাল লাগে ! লাগবেই তো ।
আমিও থাকতে পারি । দেখ, রাত কত
গভীর। আমি ভয় পায় না। দুঃস্বপ্নে ঘুমে
চিৎকার দিয়ে উঠি না। বাবার সাথে
কি কথা হয়? নাকি মুখ ফুলিয়ে বসে আছ।
জানি ভেবেছিলে বাবা আরেকটা
বউ আনবে। তোমাকে কিন্তুু বুড়ো আঙুল
দেখিয়েছে । বিয়ে কিন্তুু করেনি ।
তোমার প্রতি বাবার খুব অভিমান।
ধারে কাছে এখন যেও না। বকাঝকা
করবে। তোমার পুচ্চিটাকে দেখছ । এখন
আর পুচ্চি নেই । অনেকটা বড় হয়ে গেছে।
থাকলে বুঝতে কতটা জ্বালাত
তোমায় । ভারী দুষ্ট। মনে আছে, ছোট
বেলায় যখন বলতে আমাকে পরীর মত
একটা বউ এনে দিবে। আমি লজ্জায় লাল
হয়ে তোমার আচলে মুখ লুকাতাম। ও
ঘুমোচ্ছে । দেখতো পরীর মত লাগে কিনা।
আমি খুজে বের করেছি। তুমি হয়ত
ভেবেছিলে আমি বউ পাগল হয়ে যাব।
তোমার কোন খোজ খবরই রাখব না । তা
নাহলে কি আর চলে যাও। বাবাকে কিন্তুু
ওকে খুব পছন্দ করে। বিয়ের পর আমাকে
পাত্তাই দেয় না। বাবার রসাল আলাপ
আমার কাছ থেকে ভাগিয়ে নিয়ছে।
তোমার আর বাবার খুনসুটির কত কথা।
আসলে ও বাবার অনেক যত্ন নেয়তো।
তুমি কিন্তুু দুর্ভাগা । এসব কিছুই পেলে
না। রাগ করো না মা। আমিতো জানি,
অভাব অনটের এই সংসারে যুদ্ধ করতে
করতে তোমার ক্ষয়ে গেছে হাড়। জীবন
যুদ্ধের কঠিন বাস্তবতায় আমি কখনই
তোমার মত সৈনিক হতে পারব না। ভাল
থেকো মা। আর আজ একটু স্বপ্নে এসো।
অনেক কথা আছে.....
মায়ের ছবিটা মুছতে মুছতে আবার
দেয়ালে জুড়ে দেয় অমিত ।' রাত অনেক।
ঘুমোতে হবে। অনেক কথা আছে....