৬২২ খ্রিস্টাব্দ, হিজরি প্রথম সন। মক্কার
ঘরে ঘরে পৌছতে শুরু করেছে ইসলামের
আলো। পথভ্রষ্ট মানুষ খুজে পাচ্ছে
আলোর পথ। ইসলামের শ্বাশত কল্যাণের
বাণী প্রচার করছে নবী মুহাম্মদ। শুরু হয়
নবী মুহাম্মদের উপড় কাফেরদের
অত্যাচার। ইসলাম রক্ষার্থে মদীনায়
হিজরত করেন নবী মুহাম্মদ। তখনো ইসলাম
পরিপূর্ণতা পায়নি। মদীনায় অনেকেই
তখন নওমুসলিম। নবী মুহাম্মদ দেখতে
পেলেন মদীনাবাসি দু'টি উৎসব করে।
নওরোজ এবং মেহেরজান। উৎসব দুটির
ধরণ ছিল পুরোপুরি জাহেলী যুগের। হযরত
মুহাম্মদ (সা) তাদেরকে এই উৎসব
পালনে বারণ করেন। তখন মুসলমানরা
নবীর কাছে জানতে চান মুসলমানদের
জন্য কোন উৎসব আছে কিনা। মহান
আল্লাহর নির্দেশে মুহাম্মদ (সা)
ঘোষণা দেন, নওরোজ ও মেহেরজানের
পরিবর্তে মুসলমানদের জন্য দুটি উৎসব
আছে। একটি ঈদ-উল-ফিতর আরেকটি ঈদ-
উল-আযহা। হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি
ওয়াসাল্লাম মদীনায় তাশরীফ আনেন,
আর তখন তাদের এমন দুটি দিবস ছিল যার
মধ্যে তারা আনন্দ করতো। রাসূল (সাঃ)
জিজ্ঞেস করলেন, এ দুটি দিবস কি?
তারা বলল, জাহেলী যুগে আমরা তার
মধ্যে আনন্দ করতাম। রাসূল (সাঃ)
বললেন, আল্লাহ তা'আলা সে দুদিনের
পরিবর্তে সে দুদিন অপেক্ষা উত্তম দুটি
দিন তোমাদেরকে দান করেছেন
অর্থাৎ আযহার দিন এবং ফিতরের দিন।
নওরোজ এবং মেহেরজান: জাহেলী
যুগের দুটি উৎসব। নওরোজ পালন করা হত
সৌরবছরের প্রথম দিন। মেহেরজান পালন
করা হত এমন একটা দিনে যেদিন দিন
রাত্রি সমান থাকত। জানা যায় উৎসব
দুটি যথাক্রমে বসন্ত ও শরৎকালে পালন করা হত।
এই উৎসবে তারা বিশেষ ধরণের
খেলাধুলা করত। মদ, জুয়া, গান-বাজনা,
অশ্লীলতায় পরিপূর্ণ ছিল এই উৎসব। যা
ইসলামের সাথে সম্পূর্ণ অসামঞ্জস্য পূর্ণ।
ঈদ : আমরা জানি ঈদ মানে খুশি, ঈদ
মানে আনন্দ। ঈদের আভিধানিক অর্থ
পুনরায় ফিরে আসা। প্রতি বছর ঈদ আসে
বলে এর ঈদ নামকরণ হয়েছে।
ঈদ-উল-ফিতর: নবী মুহাম্মদের মদীনায়
হিযরতের পূর্ব পর্যন্ত মুসলমানদের কোন ঈদ
ছিল না। মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব
এটি। ফিতরের অর্থ ভঙ্গ করা। অর্থাৎ
রোযা ভঙ্গের পর আমরা যে উৎসব পালন
করি তাই ঈদুল ফিতর। ঐতিহাসিকদের
সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মত অনুযায়ী প্রথম ঈদ
উদযাপন হয় ৬২৩ খ্রিস্টাব্দে, দ্বিতীয়
হিজরিতে। কারণ মুহাম্মদী উম্মতের
উপড় ৩০রোজা ফরজ হয় দ্বিতীয় হিজরি
তে। স্বাভাবিকভাবে রমজানের পর ঈদ
পালন করা হয়। ত্রিশ রমজানের রোজা
শেষে আল্লাহর আনুগত্যের শুকরিয়া
হিসেবে ঈদুল ফিতর পালন করা হয়।
ঈদ-উল-আযহা : মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম
উৎসব। আযহা মানে ত্যাগ করা। ঈদুল
আযহায় পশু কোরবানির পটভূমি প্রত্যেক
মুসলমানের কম বেশি জানা। পশু
কোরবানি দিয়ে ধর্মীয় ইবাদতের
মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুুষ্টি অর্জনের
দিনটিতে ঈদুল আযহা উদযাপন করা হয়।
এই উৎসব হজ্জের সাথেও সম্পর্কিত।
যিলহজ্জ মাসের ৮-১২ তারিখ হজ্জ
অনুষ্ঠিত হয়। যিলহজ্জ মাসের ১০
তারিখে হাজীরা কোরবানি দিয়ে
থাকেন। সেই হিসাবে সারা বিশ্বে
যিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে ঈদ সম্পন্ন
হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:০৫