স্টাফ রিপোর্টার : নির্বাচন বানচালের ক্ষমতা কারো নেই- প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে ‘জনগণের শক্তিকে অবজ্ঞার শামিল’ বলে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া জনগণের সংকল্প দ্বারা সরকারের একগুঁয়েমি নির্বাচন প্রতিহত করবেন। নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেই আগামী নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, হযরত নূহ’র (আ.) নৌকার সঙ্গে আ’লীগের প্রতীক নৌকার তুলনা করা হাসিনার ধৃষ্টতা ছাড়া কিছুই নয়। নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ওপর প্রতিক্রিয়া জানাতে এই ব্রিফিং হয়।
গত মঙ্গলবার বিকালে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার এমসি একাডেমি মাঠে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যে কোন মূল্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি নেত্রীর সাধ্য নাই এ নির্বাচন বানচাল করার।
১৯৯৫-৯৬ সালের আন্দোলনে জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে ত্রয়োদশ সংশোধনীর কথা উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ওই সময়ে জনগণের আন্দোলনে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানে সংযোজন করা হয়েছিলো। ওই ব্যবস্থা বাতিল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অঙ্গীকারও ছিলো না। অথচ তারা এই গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা বাতিল করে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
আওয়ামী নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকাকে হযরত নূহ (আ.) এর নৌকার সঙ্গে তুলনা করে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন রিজভী। তিনি বলেন, হযরত নূহ’র (আ.) নৌকার সঙ্গে তুলনা ধৃষ্টতা ছাড়া কিছুই নয়। ওই সময়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের গবজ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য হযরত নূহ (আ.) নৌকায় সব ঈমানদাররা উঠে রক্ষা পেয়েছিলেন। তখন অন্যান্য অভিশপ্ত নৌকাগুলো ডুবে গিয়েছিলো।
সরকারের ব্যর্থতা ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, গত সাড়ে চার বছরে সরকার জনগণের ওপর অন্যায়-নির্যাতন-অবিচার চালিয়েছে। সেজন্য জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের নৌকা অভিশপ্ত নৌকা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। সরকারকে বলব, দম্ভ পরিহার করে যেসব অপকর্ম ও অন্যায় করেছেন, তার হিসাব তৈরি করুন। কিয়ামতের দিন আপনাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর ‘কুৎসা’ রটনার প্রতিবাদ জানান রিজভী।
নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বর্তমান ইসি’র আচরণের কারণে তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সরকারি দলের সংসদ সদস্যদের কেউ কেউ এই কমিশনের কার্যক্রমের সমালোচনা করছেন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনও নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করেছেন। কেবল তাই নয়, কুড়িগ্রামের একজন সংসদ সদস্য অভিযোগ করেছেন, একজন কমিশনার তার জামাতা ও ছেলেকে সুবিধা পাইয়ে দেয়ার জন্য একটি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছেন। এভাবে বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিতর্কিত হয়ে পড়েছে।
বিএনপি ক্ষমতায় আসলে জঙ্গিবাদ ও বোমাবাজি বাড়বে- সরকার প্রধান ও তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের এই প্রচারণাকে ‘অপপ্রচার’ অভিহিত করে যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, জঙ্গিবাদ ও বোমাবাজির ঘটনা আওয়ামী লীগের আমলেই ঘটেছে, জনগণ তা ভালোভাবে জানে। এভাবে মিথ্যাচার ও কুৎসা রটনা করে কোনো লাভ হবে না। প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে মহানগর সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, সহ-দফতর সম্পাদক আসাদুল করীম শাহিন, যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম আজাদ, জাসাস সভাপতি এমএ মালেক, নির্বাহী সদস্য বেলাল আহমেদ, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। - See more at: Click This Link