somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চলে গেলেন হকিং

১৭ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অপরাজিত বন্দ্যোপাধ্যায়

পদার্থবিদ্যা নক্ষত্র পতন হলো। চলে গেলেন স্টিফেন উইলিয়াম হকিং। ইল্যান্ডের কেমব্রিজে নিজের বাড়িতে বুধবার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন সাম্প্রতিক সময়ের পদার্থবিদ্যার জোতিষ্ক স্টিফেন হকিং। জ্ঞানের জগতের ইন্দ্রপতন ঘটলো। অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলোর সন্ধান দিয়ে কালের ইতিহাসে হারিয়ে গেলেন স্টিফেন হকিং। শারীরিক প্রতিবন্ধতাকে উপেক্ষা করে স্টিফেন হকিং যেভাবে সৃষ্টিরহস্য গবেষণা করে গেছেন তা মানবেতিহাসে কাছেই বিস্ময়কর।
স্টিফেন হকিং রেখে গেলেন তিন ছেলে লুসি, রবার্ট এবং টিম-কে। ১৪ই মার্চ সকাল আবারও হকিংয়ের মৃত্যু নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিলো। আগেও অনেকবার এমনটা হয়েছে। উড়ো খবর শুনে এদিন সকালে যখন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি থেকে অনুরাগীরা ভিড় করেছেন কেমব্রিজের বাড়িতে তখন তিন ছেলেই একসঙ্গে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসে জানালেন শোক সংবাদটি। স্টিফেন হকিংয়ের মৃত্যু সংবাদ দিতে গিয়ে বড় ছেলে লুসি জানিয়েছেন — ‘বাবার মৃত্যুতে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত। এক জন বিখ্যাত বিজ্ঞানী হওয়ার পাশাপাশি তিনি এক জন অসাধারণ মানুষও ছিলেন।
ঘটনাচক্রে হকিংয়ের জন্ম আর মৃত্যু দিন দুটি জুড়ে গেলো বিজ্ঞানের ইতিহাসে দুই কিংবদন্তি বিজ্ঞানীর জন্ম-মৃত্যুর সঙ্গে। হকিং জন্মেছিলেন ১৯৪২সালের ৮ই জানুয়ারি। ওই দিনটি গ্যালিলিও গ্যালিলি’র মৃত্যুদিন। আবার আজকের দিনে জন্মেছিলেন আপেক্ষিকতাবাদের জনক অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। এদিন হকিং প্রয়াত হলেন। আশ্চর্য এক সমাপতন। গ্যালিলিও আর আইনস্টাইনের মধ্যে যেন একটা গবেষণার সেতু তৈরি করে গেলেন হকিং। গ্যালিলিও বিশ্বকে দিয়েছিলেন মহাবিশ্বের তত্ত্ব। আর সেই তত্ত্বকে আইনস্টাইন যুক্তি নির্ভর করেছিলেন। জটিল অঙ্ক দিয়ে বেঁধে ফেলেছিলেন মহাবিশ্বের ধারণাকে।
আর সেই বিজ্ঞান ভাবনাকে আরো কয়েক যোজন এগিয়ে নিয়ে গেলেন স্টিফেন হকিং। ভাবাশ্রয়ী চিন্তা থেকে ক্রমশ বিজ্ঞানকে যুক্তির দিকে নিয়ে আসতে হকিংয়ের অবদান তাই চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। শারীরিক অক্ষমতার মাঝেও কয়েকজন সঙ্গীকে সঙ্গে নিয়ে স্টিফেন হকিং তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যায় গবেষণাকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছেন যা গোটা মানব ইতিহাসের কাছেই গৌরবের। সামান্য গবেষণাগারে বিজ্ঞান চর্চা করেও কী করে সুদূর ছায়াপথের গোপন রহস্যের সমাধান করা যায় তা দেখিয়ে দিয়েছেন হকিং।
১৯৬৩সালে হকিং যখন মাত্র ২১বছরে পড়েছেন, তখনই তিনি জটিল মোটর স্নায়বিয় রোগে আক্রান্ত হন। হকিংয়ের রোগের নাম অ্যামিয়োট্রপিক ল্যাটেরাল স্ক্লেরোসিস। সংক্ষেপে এ এল এস। ডান হাতের চারটি আঙুল বাদে হকিংয়ের গোটা শরীরটা ছিলো অকেজো। সেই সময় ব্রিটেনের তাবড় তাবড় চিকিৎসকরা হকিং’কে দেখে বলেছিলেন তিনি দুই বছরের বেশি বাঁচবেন না। কিন্তু জটিল রোগের সঙ্গে মোকাবিলাতেই তিনি অনন্য হয়ে থেকেছেন। কেননা কোন অজানা কারণে হকিংয়ের ক্ষেত্রেই যেন রোগটি খুব ধীরগতিতে এগিয়েছিলো। রোগ ধরা পড়ার পরেও তিনি ৫৫বছর কাটিয়ে দিয়েছেন। ভবিতব্যকে মানতেন না হকিং। তাই তিনি প্রযুক্তির আশ্রয় করেই ওই অবস্থাতেই ৭৬বছর পর্যন্ত জীবনযুদ্ধে লড়ে গেলেন।
জীবনের লড়াই শুধু নয়, আমৃত্যু করে গেলেন মহাজাগতিক অনন্য গবেষণা। তিনি না থাকলে হয়ত মহাবিশ্বের রহস্য গবেষণায় হকিংয়ের মতো তাত্ত্বিক পদার্থবিদকে এই বিশ্ব পেতো না। আমরা হারাতাম জীবদ্দশায় কিংবদন্তি হয়ে ওঠা এক বিজ্ঞানীকে। অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের পর কোনও বিজ্ঞানী এমন করে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা পাননি। কোথায় নেই হকিং ? সিনেমা, কমিকস, গান, কবিতা — কোথায় নেই তিনি! জীবতকালেই তাঁকে নিয়ে তৈরি হয়েছে হলিউডের সিনেমা।
২০০৪সালে তৈরি ওই ছবিতে অভিনয় করেছেন হলিউডখ্যাত বেনেডিক্ট কামবারব্যাচ। এই ছবিটি স্টিফেন হকিংয়ের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার সময়কারের কথা। সেই সঙ্গে স্টারগেট আটলান্টিস সিরিজে দেখানো হয়েছে হকিং’কে। পঞ্চম সিজনের ১৬তম পর্বেও নাম ছিল ব্রেন স্টর্ম। যেখানে ওয়ার্মহোল ব্যবহার করে দুই জগত সংসারের মধ্যে ‘কুলিং এফেক্ট’ তৈরি করা দেখিয়েছিলেন কিছু পদার্থবিদ। এখানে হকিং’কে মজা করতেও দেখা যায়। হকিংয়ের ১৯৬০-১৯৮০সালের জীবনকথা নিয়ে তৈরি হয়েছে বায়োপিক ‘দ্য থিওরি অব এভরিথিং’। এখানে তাঁর চরিত্রে অভিনয় করেছেন এডি রেডমেন।
এই ছবিতে হকিং-এর স্পিচ সিন্থেসাইজার ভয়েস আক্ষরিক অর্থে ব্যবহার করে দর্শকদের চমক দিয়েছিলেন পরিচালক। ‘দ্য সিম্পসনস’ নামে একটি কার্টুন শো-তে তাঁর অ্যানিমেটেড ভার্সনের দেখা মিলেছিল। হকিং’কে প্রায়শই টেলিভিশনের টকশো’তে দেখা যেতো। হকিং ১৯৬৫ সালে জেন ওয়াইল্ড’কে বিয়ে করেছিলেন হকিং। তাঁদের তিন সন্তান। ২৫বছর পর ওয়াইল্ডের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় হকিংয়ের। এরপর তিনি তাঁর সবসময়ের দেখাশোনা করতে থাকা নার্স এলাইন ম্যাসনকে বিয়ে করেন। যদিও এ সম্পর্কও বেশি দিন টেকেনি।
সম্পর্কের টানা পোড়েন হকিংয়ে সারাজীবন ভুগিয়েছে। ২০১৪ সালে তাঁকে নিয়ে তৈরি হয় সিনেমা ‘দ্য থিওরি অব এভরিথিং’। ছবিটি অস্কারে পাঁচটি বিভাগে নমিনেশন পেয়েছিল। তবে যতই সিনেমা হোক কিংবা কমিক্স, যে বইটি হকিং’কে জনপ্রিয়তার শিখরে তুলেছিলো তা অবশ্যই ‘এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম : ফ্রম বিগ ব্যাং টু ব্ল্যাকহোল’। একথা হকিংও মানতেন। দশম শ্রেণির সামান্য অঙ্ক জানা যেকোন ছাত্র-ছাত্রীই এই বই পড়ে আধুনিক মহাকাশবিজ্ঞান সম্পর্কে সহজেই জানতে পারবে।
জগতসংসারের কত অজ্ঞাত বিষয় রয়েছে তার একটা প্রাক ধারণা নিজের মতো করে তৈরি করে নিতে পারবে। মহাকাশ পদার্থবিদ্যা যতটা গণিত নির্ভর, ততটাই সাধারণ মানুষের কাছে আগ্রহের। কিন্তু এযাবতকালে কোন তাত্ত্বিক পদার্থবিদ নিজের ধ্যান ধারনাকে ছাত্র-ছাত্রীদের গ্রহণযোগ্য অবস্থায় নিয়ে যেতে পারেন নি। এক্ষেত্রে সর্বকালের সেরা শিরোপা অনায়াসেই হকিং পেতে পারেন।
হকিংয়ের আগেও বহু বিজ্ঞানী এমনকি বিজ্ঞানলেখক কঠিন্য বর্জিত তাত্ত্বিক বিজ্ঞান লেখার প্রয়াস করেছেন। খোদ আইনস্টাইন নিজের অপেক্ষিকতাবাদ নিয়েও নানা সময়ে জনপ্রিয় লেখার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আইনস্টাইন সফল হতে পারেন নি। বই বিক্রিকে এখনো জনপ্রিয়তার অন্যতম শর্ত বলে বিবেচিত হয়। সেই হিসাবে ১৯৮৮সালে প্রকাশিত হকিংয়ের ‘এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ শুধু ইংরেজিতেই বিক্রি হয়েছে কোটির উপর। টানা পাঁচ বছরে বেশি সময় ধরে লন্ডন সানডে টাইমসের বেস্টসেলার তালিকায় থেকেছে বইটি। বাংলাসহ ১৪টি ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে সময়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসকে। ২০০১সালের মধ্যে ৩৫টি ভাষায় অনূদিত হয়েছিল ‘এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’। ২০০১সালে আবার প্রকাশ পায় হকিংয়ের পরবর্তী বই ‘দ্য ইউনিভার্স ইন আ নাটশেল’।
শুধু বিজ্ঞানের গূঢ় তত্ত্বের বাইরে মানুষ হিসাবে স্টিফেন হকিং’কে নানা সময় সাড়া দিতে দেখা গেছিলো। রাজনীতি নিয়েও সরব হতে দেখা গেছিলো ওই বিজ্ঞানীকে। তাৎপর্যপূর্ণ ছিলো তাঁর সব মন্তব্য। মার্কিন নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘বুদ্ধিমত্তা’ নিয়ে তিনি প্রকাশ্যেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। সরব হয়েছিলেন ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধেও। হকিং আপাদমস্তক বাস্তববাদী ছিলেন। ‘ঈশ্বর’—এর অস্তিত্বকে কোনও দিনই তিনি মানেন নি। ‘ঈশ্বর’ সম্পর্কে হকিং বলেছিলেন, ‘দুনিয়া বিজ্ঞানের নিয়ম মেনেই চলে। হতে পারে সেই নিয়মগুলো ‘ঈশ্বর’ সৃষ্টি করেছেন।’
হকিংয়ের গবেষণার বেশিরভাগটাই জুড়ে আছে আপেক্ষিকতাবাদ, কোয়ান্টাম তত্ত্ব আর মহাবিশ্ব। বর্হিজগতের বিপুলাকার বস্তু থেকে ক্ষুদ্র কণা ও তাদের চরিত্র নিয়ে তিনি সারাজীবন গবেষণা করে গেছেন। এর মধ্যে অবশ্য সবচেয়ে আলোড়ন তুলেছিলো কৃষ্ণ গহ্বর, পরিভাষায় ব্ল্যাক হোল। ১৯৭৪সালে কৃষ্ণগহ্বরের ওপর তাঁর বিখ্যাত থিওরি ‘হকিং রেডিয়েশন’ গোটা দুনিয়াকে নাড়িয়ে দিয়েছিলো। এই খোঁজ তাঁকে মাত্র ৩২বছর বয়সে রয়্যাল সোসাইটির ফেলো করে দেয়। ১৯৭৯সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের লুকেসিয়ান প্রফেসর হন। এই পদে ছিলেন আইজ্যাক নিউটনও।
একটি যন্ত্রচালিত হুইলচেয়ার ছিলো হকিংয়ের একমাত্র অবলম্বন। ডান দিকে নিজের ঘাড়কে সব সবসময় হেলিয়ে রাখতে হতো। ওই হুইলচেয়ার হাতলের কন্ট্রোলের তাঁর সবসময় হাত থাকতো। পক্ষাঘাতের জন্য কথা বলতে হতো কম্পিউটার স্পিচ সিন্থেসাইজারের মাধ্যমে কথা বলতেন তিনি। গোটা বিশ্ব তাঁকে এই অবস্থাতেই দেখতে বেশি অভ্যস্ত। বছরের বছরের তিনি ওই অবস্থায় শুধু বেঁচে থাকা নয়, অত্যাধুনিক গবেষণা চালিয়ে আসছেন।
জীবন-মৃত্যুর সীমানা দাঁড়িয়ে কী করে একজন মানুষ জীবনের আস্বাদ নিতে পারেন তা পৃথিবীর মানুষকে দেখিয়ে গেছেন স্টিফেন হকিং। হকিং দেখিয়েছিলেন হুইল চেয়ারে বসেও মস্তিষ্ক শক্তি বলে কী ভাবে মহাবিশ্বে ঘুরে বেড়ানো যায়। মানসিক জোর যে ঠিক কতটা ছিল, তার প্রমাণ মেলে এ এল এস নিয়ে হকিংয়ের করা এক মন্তব্যে। বিখ্যাত ওই বিজ্ঞানীকে তাঁর অসুখ নিয়ে বারংবার প্রশ্ন করা হতো। একবার ওইরকম প্রশ্নের একটি উত্তরে তিনি বলেছিলেন — ‘আমার এই রকম কোনও রোগ আছে তা অনুভবই করি না। চেষ্টা করি যতটা সম্ভব স্বাভাবিক জীবন কাটাতে। আমার কাজে ব্যাঘাত ঘটায়, এমন কোনও কিছুই আমি পাত্তা দিই না।’
জটিল গাণিতিক সমীকরণকে সম্বল করে কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল নিয়ে সারাজীবন গবেষণা করে গেছেন স্টিফেন হকিং। বন্ধু স্যার রোজার পেনরোজ’কে নিয়ে হকিং আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদকে মহাকাশ গবেষণায় সাফল্যের সঙ্গে প্রয়োগ করেছিলেন। মহাবিশ্বের উৎপত্তি যে মহাপ্রলয় বা বিগ ব্যাং ফলে ঘটেছে তা ব্যাখা দিয়েছেন ওই দুই বিজ্ঞানী। অনেকেই জানেন — ১৯৯৭সালে কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে একটি বাজি ধরেছিলেন হকিং। তিনি জানিয়েছিলেন — কৃষ্ণগহ্বর বলে মহাবিশ্বে কিছু হয় না। পরবর্তী সময়ে সেই তথ্যকে সংশোধন করতে হয়। তিনিই পরে কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্ব যে রয়েছে যে বিষয়ে বিশদ ব্যাখ্যা দেন। হকিং যুগের আগে মানুষের ধারণা ছিল, মহাকর্ষের ভিতর মহাকর্ষীয় বল এতটাই বেশি যে এটি মহাবিশ্বের অন্য সকল বলকে অতিক্রম করতে পারে।
অসীম শক্তির ওই বলের নাগাল থেকে কিছুই পালাতে পারে না। এমনকী তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণও নয়। হকিং প্রথম কোয়ান্টাম মেকানিক্সের তথ্য দিয়ে দেখিয়েছিলেন, মহাবিশ্বে এমন বস্তুও রয়েছে যা কৃষ্ণ গহ্বরের মহাকর্ষীয় বল অতিক্রম করতে পারে। নিজের আবিষ্কার ‘হকিং রেডিয়েশন’ দিয়ে বিজ্ঞানী প্রমাণ করা চেষ্টা করেছিলেন কৃষ্ণগহ্বর’কে ধ্বংস করা সম্ভব। কোনও শক্তিশালী বিকিরণ কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে এলে তা শক্তি হারায়। ধীরে ধীরে তার ভর কমতে কমতে মহাশূন্যে বিলিন হয়ে যায়।
ইদানিং কৃষ্ণগহ্বরের ভিতরে কী রয়েছে তা নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন হকিং। কৃষ্ণগহ্বরে কোনও কিছু প্রবেশ করলে তার পরিণতি কী হয় সে বিষয়ে তিনি অনেকদূর গবেষণা করেছিলেন। এই গবেষণা আগামী দিনে মহাবিশ্বের অনেক অজানাকে আমাদের হাতে নিয়ে আসবে। সেই সঙ্গে কৃষ্ণগহ্বরের তত্ত্বকে কাজে লাগিয়ে কী ভাবে ‘টাইম টেবল’ করা যায়, তা নিয়েও হকিংয়ের তস্য জটিল গবেষণা রয়েছে। সব কিছু প্রকাশ্যে থাকলেও তা নিয়ে গবেষণার সাহস কতজন দেখাতে পারবে তা সন্দেহের। কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে গবেষণার জন্যই হকিংয়ের খ্যাতি বিশ্বজোড়া হলেও তিনি একবারের জন্য নোবেলের জন্য কখনও মনোনীত হননি। এটা সত্যিই আশ্চর্যের।
২০০৭সালে মার্ধ্যাকর্ষণ শূণ্য পরিবেশ বা জিরো গ্রাভিটি ফ্লাইটে শামিল হয়েছিলেন হকিং। তিনি বিশ্বাস করতেন — এ পৃথিবী একদিন মানুষের বসবাসের উপযোগী থাকবে না। তাই জিরো গ্রাভিটিতে বসবাসের জন্য মানুষকে তৈরি হতে হবে। অন্য কোনও দুনিয়ায় মানুষকে একদিন চলে যেতেই হবে। হকিং জীবনের শেষদিকে বারংবার বহির্জগতের প্রাণ নিয়ে কথা বলে এসেছেন। নানা সময়ে কথা বলেছেন মানুষে থেকে উন্নত ভিনগ্রহের প্রাণী নিয়ে। আধুনিক বিজ্ঞান এখনো বর্হিজগের প্রাণের সন্ধান পায় নি। কিন্তু হকিং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তা বিশ্বাস করে এসেছেন।











[

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৭
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×