যাদের কারনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়নি
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
ইদানিং বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধী ইস্যুতে অনেক লেখালেখি, আলোচনা, পর্যালোচনা চলছে। পক্ষে-বিপক্ষে নানা গোলটেবিল-বক্তব্য চলছে হরদম। বুদ্ধিজীবী ও আইনবিদদের বিভিন্ন যুক্তি-তর্ক চলছে সমান তালে। রাজনৈতিক কর্মসূচী এবং বক্তব্য এখন নির্বাচন ভাবনা থেকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়েই ঘুরপাক খাচ্ছে। আর এই আলোচনা যিনি শুরু করেছেন তিনি কাদের সিদ্দিকী এখন পরিপূর্ণ চুপ করে আছেন। কাদের সিদ্দিকী বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত প্রিয় লোক ছিলেন এবং দীর্ঘদিন তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের এক নম্বর সদস্য ছিলেন। কাদের সিদ্দিকী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং কাদেরিয়া বাহিনী নামে একটি স্বতন্ত্র বাহিনী সেসময় মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিল।
কিন্তু তার এই বিরত্বপূর্ণ ভূমিকা একটি ঘটনাতেই মাটি হয়ে যায় বিজয় দিবসের দু'দিন পরেই। সারা বিশ্বের নিন্দা ও ধিক্কার কুড়াতে থাকে তার একটি ভুমিকায়। আর সেটা হলো ঢাকার পল্টন ময়দানে প্রকাশ্যে বিহারীদের হাত পা বেধে বেয়নেট দিয়ে হত্যা করা। দেখুন- ১৩ নভেম্বর ২০০৭ এর প্রথম আলোয় প্রকাশিত সৈয়দ আবুল মকসুদের লিখিত সহজিয়া কড়চায়। এছাড়াও কোন এক নিবন্ধে আমাদের সময় পত্রিকাতেও তার এই ভূমিকাকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করা হয়েছিল। এছাড়াও পৃথিবী বিখ্যাত মহিলা সাংবাদিক ওরিয়ানী ফালাচি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর তার এক সাক্ষাতকারে পোষাক পড়ে আত্মসমর্পিত পরাজিত বাহিনীর সদস্যদের হত্যাকান্ডকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করেন (আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আইন অনুযায়ী)। হত্যাকান্ডের এই ছবি তখন নিউইয়র্ক টাইমসসহ বিশ্বের বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপা হয়। ইন্টারন্যাশনাল রিফিউজি অর্গানাইজেশন এঘটনা নিয়ে আর্টিকেল প্রকাশ করে যা অক্সফোর্ড জার্ণালেও প্রকাশিত হয়েছে। এছবিটি পিআইবি কর্তৃক বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ছবির একটি সংকলনেও প্রকাশিত হয়েছে।
সৈয়দ আবুল মকসুদ তার সহজিয়া কড়চায় লিখেছিলেন যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী যখন তুঙ্গে তখন যাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তখন ছিল তাদের কেউ কেউ তখনকার মন্ত্রী, এমপিদের আত্মীয়-স্বজন, ভাই-ভাতিজাও ছিলেন। মুলতঃ এসব বিষয় সামনে চলে আসায় তখন তাদের ক্ষমা করার বিষয়টি সামনে চলে আসে।
আবার আমেরিকা-চীন সরাসরি পাকিস্তানের পক্ষে সমর্থন দিয়েছে। ভারতও চেয়েছিল পকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমার বিনিময়ে পাকিস্তানে আটক ভারতীয় সৈন্যের মুক্তির প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করতে।
শান্তি কমিটির যেসব সদস্যদের বিরুদ্ধে এখন যুদ্ধাপরাধের দাবী তোলা হচ্ছে তারাও সেসময় বহাল তবিয়তে ছিলেন। যেমন বিচারপতি নুরুল আমিন শান্তি কমিটির প্রধান ছিলেন। কিন্তু তিনি ২০০১ সালে আওয়ামীলীগের মনোনয়নে এমপি প্রার্থী ছিলেন। ফরিদপুরে শান্তি কমিটির প্রভাবশালী সদস্য খন্দকার নুরুল ইসলাম ছিলেন বঙ্গবন্ধুর মামাতো বা ফুফাতো ভাই যার নাতির সাথে বঙ্গ্ন্ধুর নাতনির বিয়ে হয়।
এরকম বহু জটিল সমীকরণে তখন যুদ্ধাপরাধ বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা হয় সিমলা চুক্তির মাধ্যমে। বর্তমানে এ বিষয়টি নিয়ে তাই আবারো কোন জটিল সমীকরণ শুরু হয় কিনা তা এখন দেখার অপক্ষোয়।
৩০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
=হিংসা যে পুষো মনে=

হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।
কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন
গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন
রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি
রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি
সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।
রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।