somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভিন্ন রকম এক মুক্তিযোদ্ধা

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এর পূর্বের বা পরের অনেক ঘটনাবলীই এ জনপদের ইতিহাসে অবিস্মরণীয়। তবে একটি জাতিরাষ্ট্র উদ্ভবে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ বিশ্ব ইতিহাসে একটি অনন্য ঘটনা হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। আর এই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর যোদ্ধারা আজীবন এদেশের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা পাচ্ছেন এবং পেয়ে যাবেন।

আমার আজকের আলোচনা এরকম কিছু ব্যতিক্রম ঘটনা নিয়ে।

মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্নভাবে অংশ নিয়েছিলেন এদেশের সাধারণ মানুষ। কেউ সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন যুদ্ধে। কেউ ট্রেনিং নিয়েছিলেন। কেউ সাহায্য করেছিলেন। কেউ ময়দানে যুদ্ধরতদের মুক্তিযোদ্ধাদের সরবরাহ করেছিলেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। আর তাদের খাদ্য-পানীয় বা আশ্রয় দিয়ে সাধারণ জনগণের সহযোগিতার কথাতো কিংবদন্তী হয়ে আছে। শুধুমাত্র রাজাকাররা ছাড়া বাকী সকলেই মনে-প্রাণে মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয় কামনা করেছিলেন।

তারিখটা আমার নির্দিস্ট মনে নেই। তবে দৈনিক জনকণ্ঠে ১৯৯৮ সালের দিকে কোন এক লেখায় মুক্তিযুদ্ধে গোয়েন্দা কার্যক্রম বা সহযোগিতা নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশ হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল যে এ বিষয়ে খুব বেশী গবেষণা বা কোন বই প্রকাশ করা হয়নি। যাই হোক আজ আমি জানাব এ ধরনের একজনের কথা। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের এক অধিবাসী (আমার অফিসের কলিগ)-র মুখ থেকে শোনা।

তিনি সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া খান মজলিশ। বাড়ী সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর। তিনি ছিলেন শাহজাদপুর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল। এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তান আর্মি বিভিন্ন স্থানে রাজাকার বাহিনী গঠন করে। তারা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম বাছাই করে তাদের নাম শান্তিকমিটি গঠন করে। ইয়াহিয়া খান মজলিশের কাছে না শুনেই তাকে শান্তিকমিটির সদস্য (সম্ভবত প্রধান) করে নেয়। ঐ সময় তিনি এর প্রতিবাদ করতে পারেননি।

কিন্তু তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক সহযোগিতা করেন। শান্তি কমিটির সদস্য থাকার কারনে পাক বাহিনীর তথ্য তিনি সরবরাহ করতেন মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে। সিরাজগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযান যখন সফল হয় তখন পাক বাহিনী আশে পাশের অনেক অঞ্চলে নির্যাতন চালায়। কিন্তু তার এলাকায় তিনি তা করতে দেননি। তার কাছে মক্তিযোদ্ধাদের তথ্য জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন তার এলাকায় কোন মুক্তিযোদ্ধা নেই। অথচ তারই মাদ্রাসায় রাতে প্রায় ৭০০-৮০০ মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান করতেন। দিনে তারা অপারেশন করে রাতে এসে তারা মজলিশের বাড়ী বা মাদ্রাসায় খাওয়া-দাওয়া ও রাত্রি যাপন করতেন। এভাবে তিনি যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তে সহযোগিতা করেন।

যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আবার নিজ নিজ অঞ্চলে ফিরে আসেন। এসময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের এক গ্রুপ যারা ইয়াহিয়া খান মজলিশের ভূমিকা জানতো না তারা শান্তিকমিটিতে তার নাম থাকার অপরাধে তাকে হত্যা করে। পরে মুক্তিযোদ্ধাদের আরেকটি গ্রুপ যারা সরাসরি তার সহযোগিতা পেয়েছেন তারা এসে হায় হায় করে উঠে।
পরে তাদের উদ্যোগে শাহজাদপুরে ইয়াহিয়া খান মজলিশের নামে
একটি কলেজ নির্মিত হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১১:১৯
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×