somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৌরসভা নির্বাচন : আ.লীগের প্রার্থীর দাপটে প্রশাসন অসহায় :শুধু দেশের প্রশাসন নয় । সারা দেশ অসহায় ....!!!!

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জামালপুর সদর পৌরসভায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী আমানউল্লাহ আকাশের দাপটের মুখে মাঠে নামতে পারছেন না প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মীদের মারধর, নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, রাতের বেলায় ২০-২৫টি মোটরসাইকেলে মহড়া দিয়ে পুরো নির্বাচনী এলাকায় আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী ওয়ারেস আলী মামুনের অভিযোগ, সরকারি দলের প্রার্থীর কাছে স্থানীয় প্রশাসনও অসহায়। তাঁর নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুরের সময় বাধা দিতে গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কর্মকর্তারা ধাওয়া খেয়েও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি।

শুধু তা-ই নয়, শহরের পুলিশ বক্স দখল করে নির্বাচনী কার্যালয় বানিয়েছেন আমানউল্লাহ। আর এতে সহযোগিতা করেছেন আমানউল্লাহর বড় ভাই সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. শফি উল্লাহ। তিনি ময়মনসিংহের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এএসপি। ভাইয়ের নির্বাচনী কার্যক্রম তদারক করতে তিনি জামালপুরে তৎপরতা চালাচ্ছেন। ৮ জানুয়ারি রাতে বিএনপির প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র ওয়ারেস আলী মামুনের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলার ঘটনায়ও তিনি তদারকিতে ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

অবশ্য আমানউল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছোট ভাইয়ের নির্বাচনে বড় ভাই আসতেই পারেন।’ ৮ জানুয়ারিও তাঁর ভাই বেশ কিছু এলাকায় তাঁর পক্ষে কাজ করেছেন বলে তিনি জানান।

পুলিশ কর্মকর্তার এ তৎপরতা নিয়ে সংবাদপত্রে খবর প্রকাশের পর গত দুই দিন অবশ্য তাঁকে শহরে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। তবে শহরে ওই পুলিশ কর্মকর্তার একটি বড় বিপণিবিতান ও একটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। সেখানে বসে তিনি প্রতি রাতেই নির্বাচনী কাজের তদারক করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর: স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, ৮ জানুয়ারি আমানউল্লাহর সমর্থকেরা শহরের দেওয়ানপাড়া মোড়ে বিএনপির প্রার্থী ওয়ারেস আলীর নির্বাচনী কার্যালয় ভেঙে দেয়। খবর পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লিয়াকত আলীর নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল মতিনসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের উপস্থিতিতেই আমানউল্লাহর কর্মীরা ওয়ারেস আলীর কর্মীদের মারধর করতে থাকে। পুলিশ বাধা দিলে আক্রমণকারীরা পুলিশকে ধাওয়া করে এবং তাদের গাড়িতে ইটপাটকেল ছোড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।

জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘কোথাও বিশৃঙ্খলা থামাতে গেলে এমন হতেই পারে।’ ওই ঘটনায় পুলিশের কেউ আহত হননি বলে তিনি দাবি করেন।

ওই হামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে আমানউল্লাহ প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, বিএনপির প্রার্থীর ওপর ক্ষুব্ধ লোকজন ওই কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। এতে আওয়ামী লীগের কেউ জড়িত ছিল না।

নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন: সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শহরের রেলগেট এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্স দখল করে তার সামনে শামিয়ানা টানিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় বানানো হয়েছে। পুলিশ বক্সে ঢোকার মুখে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যালয়’ লেখা ব্যানার। চারদিকে নির্বাচনী পোস্টার দিয়ে ছেয়ে দেওয়া হয়েছে।
অবশ্য আমানউল্লাহ দাবি করেন, তিনি পুলিশ বক্স দখল করেননি। বক্সের সামনে শামিয়ানা টানিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন মাত্র।
নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, পাঁচটির বেশি নির্বাচনী কার্যালয় খোলার সুযোগ নেই। কিন্তু আমানউল্লাহ ২০টির বেশি কার্যালয় খুলেছেন।

এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচটির বেশি কার্যালয় এবং সরকারি স্থাপনায় কার্যালয় করার সুযোগ নেই। কিন্তু এমনটা জামালপুরে ঘটেছে, তাঁর কাছে এমন অভিযোগ নেই। তার পরও তিনি বিষয়টি আজ রোববার তদন্ত করে দেখবেন বলে জানান।

সেনা দাবি: এমন পরিস্থিতিতে জামালপুরে ১৭ জানুয়ারি সুষ্ঠু ভোট হবে কি না, তা নিয়ে পৌরবাসীর মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। নাগরিক সমাজের অনেকে অভিযোগ করেন, এখানে সরকারি দলের লোকজন আর স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন অনেকটা একাকার হয়ে গেছে। আমানউল্লাহ ক্ষমতাসীন দলের জেলা কমিটির সহসভাপতি। দলীয় প্রার্থী হিসেবে সমর্থন পাওয়ার পর গত ১৬ ডিসেম্বর আমানউল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় সাংসদ ও ভূমি প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা জামালপুর শহরে মিছিল করেন। এর পরই প্রশাসন আমানউল্লাহর দিকে ঝুঁকে পড়ে।

বিএনপির প্রার্থী ওয়ারেস আলী অভিযোগ করেন, ‘সরকারদলীয় প্রার্থীর বড় ভাই পুলিশ কর্মকর্তা হয়েও আমার নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্রে হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। জামালপুরে প্রশাসনের কর্মকর্তারাও এখন আর নিরাপদ নন। তাই এখন তাঁদের কাছেও বিচার প্রত্যাশা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’ তিনি দ্রুত জামালপুরে সেনা মোতায়েনের দাবি জানান। এ ব্যাপারে তিনি নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন।
স্থানীয় লোকজন এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে ভয় পান। অনেকেই বলেছেন, সেনাবাহিনী মোতায়েন করা না হলে এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান কঠিন হবে।

শহরের তিরোধা সত্যপীর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরকারি দল পেশিশক্তি ও প্রশাসনের প্রভাব খাটিয়ে ভোটের ফল পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করছে। সাধারণ ভোটারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় নিশ্চিত। পৌরসভায় ক্ষমতার হাতবদল সময়ের ব্যাপার মাত্র।

জামালপুর পৌরসভায় মেয়র পদে চারজন প্রার্থী, তবে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন আওয়ামী লীগের আমানউল্লাহ ও বিএনপির ওয়ারেস আলী মামুন।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×