somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিন্তা-ভাবনাঃ সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট ও সংলাপ

২১ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশের মানুষ এখন দল বলতে বুঝে দুইটি। একটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, আর অন্যটি জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। একটি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে, স্বাধীনতার স্বপক্ষে; আর অন্যটি বিপক্ষে। এর বাইরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, জাতীয় পার্টি, হেফাজতে ইসলাম সহ আরো অসংখ্য দল নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত বা অনিবন্ধিত অবস্থায় থাকলেও সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট ও কর্মকাণ্ড বিবেচনায় জনগণ এবং মিডিয়া এই দুইটি দলের অবস্থানই খুঁজে পায়।

বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোটে অবস্থানকারী অন্য তেরটি দলের একটি সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি। বর্তমানের আলোচিত ইস্যুগুলোতে এ দলটির অবস্থান ‘নীরব’ বলেই ধরে নেয়া যায়। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ গত নির্বাচনে বিএনপি’র নেতৃত্বে চারদলীয় জোটে থেকে নির্বাচন করলেও বর্তমানে সম্প্রসারিত ১৮ দলের এই জোটে তারাই নেতৃস্থানীয়। তাদের দাবি, এজেণ্ডা গুলোই এখন কোনোরকম লুকোচাপা ব্যতিরেকে ১৮দলীয় জোটের দাবি, এজেণ্ডা হিসেবে ঘোষিত হয়। যদিও জোটপ্রধান হিসেবে এখনো বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া’ই বহাল আছেন।

এমতাবস্থায় বিএনপি নামক দলটি যখন প্রায় বিলুপ্তির পথে বা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এ ‘ডিসল্ভড’ হতে যাচ্ছে, তখন দেশের সুশীল সমাজ ব্যানারধারী কতিপয় ব্যক্তিবর্গ উদ্যোগী হয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ ও বিগত নির্বাচনের ফলে এখনো সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে বহাল থাকা বেগম খালেদা জিয়া কে এক টেবিলে বসাতে। কিন্তু তা কি আদৌ যোক্তিক? চলুন এবার ঘুরে আসি সেই আলোচনা থেকে।

অতি সম্প্রতি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে সিঙ্গাপুর যান বেগম খালেদা জিয়া। এর ফলে তিনি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসেও উপস্থিত থাকতে পারেন নি। এ থেকে সফরটি অনিবার্য ছিলে বলেই সিদ্ধান্তে আসা যায়। কিন্তু এর কিছুদিনের মধ্যেই তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং খুব সম্ভবত চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখেই। আপোষহীন ও স্বল্পভাষী নেত্রী হিসেবে এতদিন দেশব্যাপী পরিচিত বেগম খালেদা জিয়া এরপর থেকে বেশ কিছু স্বভাব বিরুদ্ধ আচরণ শুরু করেন। দপ্তর সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর এতদিন তার হয়ে অধিকাংশ বিবৃতি পাঠ করে এলেও এখন তিনি নিজেই ঘন ঘন বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। এ সময় রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জামাত-শিবির নিষিদ্ধের দাবীতে প্রজন্ম চত্বরে গণজাগরণ মঞ্চের ব্যানারে আন্দোলনরত তরুণদের উদ্দেশ্য বেশকিছু বিরূপ মন্তব্য করেন তিনি। যদিও এই তরুণেরা ধর্ম ও বিএনপি বিরোধী বক্তব্য থেকে সবসময় সতর্ক ও বিরত থেকেছে, তবু জোটের নেত্রী হিসেবে জোটের নেতৃস্থানীয় দল জামাতের নেতাদের স্বার্থে তিনি জামাত-শিবিরের এজেণ্ডানুযায়ী বক্তব্য রাখেন। এসময় তিনি আন্দোলনরত তরুণদেরকে ‘ফেসিবাদী’, ‘বিধর্মী-নাস্তিক’, ‘নষ্ট’ শব্দসমূহে অভিহিত করেন। সর্বশেষ গত ১৮ই মার্চ ২০১৩ তিনি এই তরুণদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘কি ছেলেরা, লাগবে? আরো লাগবে? দেব, আরো হরতাল দেব?’ এসময় তাঁর মুখে মিটিমিটি হাসি দেখা যায়, যা অনেকের চোখেই বিসদৃশ ঠেকেছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদসহ তাঁর দলের নেতারা শুরু থেকেই আন্দোলনের সুরে সুর মিলিয়ে এসেছেন। তবে দাবি বাস্তবায়নে তাদের বিরুদ্ধেও রয়েছে গড়িমসির অভিযোগ। আর আন্দোলনের ধাঁচে এটা ‘সরকারবিরোধী আন্দোলন’ হলেও ‘সরকার বা ট্রাইব্যুনাল পতন’ এর উদ্দেশ্য নয় বলে বা এটি ‘আরব বসন্ত’ ধরণের কিছু নয় বলে শুরু থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছে আন্দোলনের সংগঠক তরুণেরা।

এমতাবস্থায় বৃহত্তর জামাত জোটের কথিত ‘একদফা’ আদতে কতটুকু তাদের আন্তরিক ও সময়োপযোগী চাওয়া সে ব্যাপারেও প্রশ্ন উঠছে। আর সেই সাথে বর্তমানের রাজনৈতিক মেরুকরণে যখন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ নামক দলটি নিষেধাজ্ঞার মুখে এবং বিএনপি নামক দলটি বিলুপ্তির পথে, তখন এই ‘সংলাপ’ আহবান কতটুকু যৌক্তিক? বরং কোনো সম্ভাব্য তৃতীয় শক্তি যেমন- জাতীয় পার্টি, বিকল্পধারা, কল্যাণপার্টি, পিডিবি, এমনকি ডঃ মুহম্মদ ইউনূস এর নাগরিক শক্তি বা তারও বাইরে নতুন কোনো দল সহ উদীয়মান সংগঠনগুলোর সাথেই সংলাপ বা আলোচনা করা বেশি প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী নয় কি?
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:৪১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×