আজ থেকে শত বছর আগে ছোট্ট একটি গ্রামে একটি পরিবারের জন্ম হয় নাম যার খান পবিরার।
এক সময় এ পরিবার খন্ড-বিখন্ড হয়ে কয়েকটি ভাগ হয়ে যায়। এর এক অংশ প্রতিপত্তি ও ব্যপক ক্ষমতার বিস্তার করে। এ পরিবারের কর্তার নাম আরবাজ খান। আরবাজ খান ছিলেন একজন দারাজ কণ্ঠী ও এলাকার অন্যতম ক্ষমতাশালী লোক। তার প্রতাপ এতই ছিল যে নাম শুনলেই লোকজন ভয়ে কাঁপতো। ওওওও sorry এলাকার নামটাই তো বলা হয়নি,,,,,,,,,এলাকার নাম স্বপ্নগ্রাম। এ গ্রামটি টাংগাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার একটি গ্রাম। সৃষ্টিকর্তা তার আপন মহিমায় এ গ্রামটি অপরুপ করে সৃষ্টি করেছেন। গ্রামে ৮০% হিন্দু ধর্মের লোক ও ২০% মুসলিম ধর্মের লোক বসবাস করতো। আরবাজ খান এক সময় এতোটাই হিংস হয়ে ওঠে যে তার অত্যাচারে হিন্দুধর্মের লোকজন বাড়ি ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় এবং মুসলমান গন মুখবুজে অত্যাচার মেনে নিতে থাকে। যাহোক আরবাজ খান হিন্দুদের ফেলে যাওয়া ঘরবাড়ি দখল নিতে থাকে। এভাবে এক সময় প্রচুর সম্পদের মালিক হয় সে। আরবাজ খানের ছিল সাত ছেলে। ডারাজ খান,আফরোজ খান, লাল খান, জলিল খান, দিদার খান, হেলাল খান, বিশু খান। আরবাজ খানের এই সাত জন ছেলের মধ্যে ডারাজ খান ছিল অন্যতম। ১৯৭১ সালেমুক্তি যুদ্ধের সময় আরও বেপুরোয়া হয়ে ওঠে।আরবাজ খান তার পুরো পরিবার নিয়ে যোগ দেয় পাকিস্তানি সৈন্যদের সাথে। এবং চালাতে থাকে আসেপাশের সব এলাকায় তাদের তান্ডব লীলা। স্বাধীন হলে তারা কিছু দিন চুপচাপ অবস্থান করে। তারপর আবার চলতে থাকে যাত্রা। এর মধ্যে হঠাৎ করে আরবাজ খান অসুস্থ হয়ে পরে এবং একদিন নাক মুখ দিয়ে রক্ত এসে সে মারা যায়।
এতেকরে এলাকার লোকজন সুস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ও আর ভাবে হয়তো এবার সকল অত্যাচারের অবসান হলো। কিন্ত না পরিবারের হালধরলেন আরবাজ খানের বড় ছেলে ডারাজ খান। বাবার মতো একই রাস্তাই চলা শুরু করলো ডারাজ খান। সে এবং তা সব ভাইয়েরা মিলে মদ,জুয়া,নারী ব্যবসা, ডাকাতি ,জমি দখল প্রভৃতি ব্যপক অরাজকতা সৃষ্টি করে সমাজে। ফলে বিভিন্ন কর্মকান্ডের জন্য ডর্জন খানেক মামলা হয়ে যায় এবং পুলিশ প্রতিনিয়ত তাদের ধরার জন্য অভিযান পরিচালনা করতেন। জেলখানা তাদের জন্য শুশুর বাড়ির মত হয়ে যায়। ডারাজ খান এর হার্ডের সমস্যা ছিল।একদিন পুলিশের তাড়ায় দৌড়াতে গিয়ে হার্ডের সমস্যা দেখা দেয় এবং হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান ডারাজ খান। ডারাজ খান মারা যাবার সাথে সাথে শতবছরের শোষনকারী খান পরিবার থেকে মুক্তি পায় এলাকাবাসী।।
পরবর্তীতে আরবাজ খানের আরও যারা ছেলে ছিল তারা এবং নাতীরা মাঝে মাঝে সমাজে বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে চাইলেও তারা কখনো সফল হতে পারেনি।
বর্তমানে স্বপ্নগ্রাম সত্যিই স্বপ্নের গ্রাম,শান্তির গ্রাম হিসাবে পরিচিত।।
এখনো আছে সেই খান পরিবারের বংশধর, আছে আরবাজ খানের অন্যান্য ছেলেরা,নাতীরা কিন্ত নেই তাদের সেই প্রতাপ অহমিকা। এখন তাদের না করে কেউ ভয়, না করে কেউ মূল্যায়ন।
আজ সময়ের বিবর্তনের ফলে অতীত শুধুই ইতিহাস। স্বপ্নগ্রামের পরবর্তী প্রজন্ম হয়তো কেউ জানবে হয়তো কেউ জানবেনা এই জগন্যতম খান পরিবারের ইতিকথা।।।