somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চট্টগ্রামে শটগান মাসুমকে না ধরতে এমপি-মন্ত্রীদের চাপ!

১০ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অস্ত্রের লাইসেন্স আছে। সেই অস্ত্র দিয়ে গুলি করায় বিষয়টি নিয়ে ভাবছে না পুলিশ। অন্যদিকে
তাকে না ধরতে আসছে একের পর এক ফোন। পরিস্থিতি এমন, রাজনৈতিক চাপে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে নারাজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাই বহাল তবিয়তেই ঘুরে বেড়াচ্ছে সরকারদলীয় যুবলীগ ক্যাডার দিদারুল আলম মাসুম। সে চট্টগ্রামে এখন শটগান মাসুম নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে।
গত সোমবার হেফাজতে ইসলামের হরতালে শটগান হাতে গুলি চালিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে এ নেতা। চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার ও ওয়াসা মোড়ে সেদিন সে একাই চালিয়েছে তাণ্ডব। তার গুলি চালানোর দৃশ্য দেখে হতভম্ব হয়ে যায় পুলিশের লোকজনও।
হরতালে সে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে ঘোরাফেরা করেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত। নির্দেশনা দিয়েছে কর্মীদের। এরপর পরিস্থিতি নমনীয় হলে শটগান উঁচিয়ে নিরাপদে চলে যায়। এ দৃশ্য তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আশপাশের লোকজনও দেখেছে।
চট্টগ্রাম পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, হেফাজতের হরতালে অস্ত্রহাতে দৌড়াদৌড়ি করার পর তার দিকে এখন নজর বেড়েছে আওয়ামী লীগ নেতাদের। গতকাল সকালে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও মিডিয়ায় ছবি ছাপা হওয়ায় টনক নড়ে পুলিশ প্রশাসনের। প্রশ্ন ওঠে দায়িত্ব নিয়ে। কিন্তু তাকে আটক না করতে চট্টগ্রামের বেশ কয়েকজন এমপি ও মন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বরত লোকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন কৌশলে। বুঝিয়ে দিয়েছেন আগামী দিনে দলের জন্য তার গুরুত্ব।
লালখান বাজারের স্থানীয় সূত্র জানায়, শটগান মাসুমের আসল পরিচয় সে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সক্রিয় সদস্য। চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার এলাকায় তার রয়েছে নিজস্ব প্রভাব। দলীয় পরিচয় দিয়ে সেখানে সে গড়ে তুলেছে ডিশ ব্যবসা। রয়েছে স্থানীয় মানুষকে ভয় দেখানোর নানা অভিযোগ। এক সময় রাজনৈতিক মহলে নিজ দলের ভেতর তার প্রতিপক্ষ ছিল আরেক যুবলীগ নেতা নগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদ মাহমুদ। নিজের অবস্থান সুসংহত করতে দলবল নিয়ে ফরিদকে হটিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখায়। একবার অস্ত্র উঁচিয়ে তাকে গুলি করার হুমকি দেয় মাসুম।
গত সোমবারের হরতালে নিজস্ব বাহিনী নিয়ে অস্ত্র হাতে পুলিশের সামনে রাস্তায় নেমে পড়ে যুবলীগ নেতা মাসুম। হেফাজত কর্মীদের ধাওয়ায় যখন আওয়ামী লীগের লোকজন পিছু হটে ঠিক তখনি একটি গলি থেকে বের হয়ে সে অস্ত্র উঁচিয়ে ফাঁকা গুলি করতে থাকে। পুলিশকে উদ্দেশে করে বলে, ‘এসব কাঠের জিনিস দিয়ে (পুলিশের অস্ত্র) কিচ্ছু হবে না। হুজুরদের ঠাণ্ডা করতে লাগবে গরম জিনিস।’
এ ঘটনার পর আলোচনায় থাকা মাসুম সবার কাছে পরিচিত হয়ে ওঠে ‘শটগান মাসুম’ হিসেবে। পুলিশ হরতালের সময় বিশৃঙ্খলকারীদের গ্রেপ্তারের কথা জানালেও অস্ত্রহাতে দৌড়ে বেড়ানো মাসুমকে আটক কিংবা ধরার বিষয়ে কোন কথা বলেনি।
সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকবার যুবলীগ নেতা মাসুমকে অস্ত্র হাতে দেখা গেছে। সকাল ১১টায় ওয়াসার মোড় থেকে লালখান বাজারের দিকে যখন হেফাজত কর্মীরা ধাওয়া দেয় তখন মাসুমকে দেখা যায় অ্যাকশনে। গায়ে একটি দাগ কাটা কালো গেঞ্জি, পরনে জিন্স প্যান্ট। কখনও মাটিতে শুয়ে, কখনও বা হাঁটু গেড়ে। এ সময় পাশেই ছিলেন নগর পুলিশের উপ-কমিশনার আবদুল্লাহ হেল বাকী।
মাসুমের প্রতিপক্ষ স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানান, তার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে রয়েছে নানা অভিযোগ। এছাড়া লালখান বাজার এলাকায় তার অনুসারীদের কাছে অনেকে শারীরিকভাবেও লাঞ্ছিত হয়েছেন। চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের দুই সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রী আফছারুল আমিনের সঙ্গে তার রয়েছে বেশ সখ্য। নির্বাচনের সময় এই দুই নেতার জন্য মাসুমকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পালন করতে দেখা গেছে। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করলেও অস্ত্র হাতে রাস্তায় নামার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেছে মাসুম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগ নেতা মাসুম গতকাল দুপুরে ফোনে মানবজমিনকে বলে, আমি আওয়ামী লীগকে ভালবাসি। তাই দলের বিপক্ষে কোন কিছু মেনে নিতে পারি না। হরতালের সময় আপনারা আমার হাতে যে অস্ত্রটি দেখেছেন তার একটা লাইসেন্স আছে। প্রয়োজনে আপনি বললে কাগজপত্র দেখাতে পারবো।
লাইসেন্স করা অস্ত্র হাতে গুলি চালানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি রাজনীতি করি। কখন কে আমাকে খরচ করে ফেলে তা বলা মুশকিল। হরতালের খবর শুনে রাস্তায় গিয়ে দেখি হেফাজত কর্মীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসেছে। তখন চিন্তা করলাম এসব লাঠিসোটা দিয়ে হবে না। তাই বাসায় গিয়ে আলমারি থেকে অস্ত্রটা নিয়ে এসে একটু ভয় দেখিয়েছি।
যুবলীগ নেতা মাসুমের বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, শুনেছি ওর অস্ত্রটা নাকি লাইসেন্স করা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে সে যদি আত্মরক্ষার্থে করে তাহলে তা ভিন্ন বিষয়। তবে অবশ্যই সব বিষয় তদন্ত হবে। লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নামার বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি



Click This Link



সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:৩৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×