somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিজড়াদের অত্যাচার থেকে বাচাবে কে? "বখশিস" নামক ছিনতইয়ের নতুন পথ।

২৭ শে জুলাই, ২০১১ দুপুর ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকাল আমি একটা কাজে আশুলিয়া গিয়েছিলাম। ফেরার পথে মাগরিবের আজানের একটু পরে ৭.৩০ এর দিকে আমি মিরপুর বেড়ী বাধ হয়ে আশুলিয়া যাবার পথে ১ম ব্রিজ (ধৌর ব্রিজ, ব্রিজের সঠিক নাম জানি না) উপর দাড়িয়ে ছিলাম। নদীর পাড়ে বেশ কিছু পিকনিক পার্টি বড় বড় ট্রলার লাইটিং করে গান বাজনা বাজাচ্ছিল সেগুলো দেখছিলাম।

এমন সময় হটাৎ দেখি পেছন থেকে কারো হাত আমার পিঠে হাত বুলিয়ে বলছে "বাবু কেমন আছিস?" পেছনে ফিরে দেখি ৪টা হিজড়া দাড়িয়ে তাদের মধ্যে একটা একটু বেয়াড়া টাইপ সেটা আমার পিঠে হাত দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমার মেজাজ চড়ে গেল।

অনেক কষ্টে রাগ সংবরন করলাম। হিজড়াদের ইতি পূর্বে যাতবারই দেখেছি তাদের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির কখনই ভাল লাগেনি। তাই যথা সম্ভব কুল থেকে বললাম "গায়ে হাত দিয়ে কথা বলছ কেন? মুখে বললেই তো হয়, আমি তো কানে ভালই শুনতে পাই"।
সঙ্গে সঙ্গে সাথের একটা বলে উঠল "কেনা গায়ে হাত দিলে কি হয়? তোকে তো আদর করছি.... "X(
আমি বললাম, মুখে যা বলার বল আমি শুনতেছি। অন্য একটা বলে উঠল "তোকে তো দোয় করছি" আমি বললাম, আমি কি তোমাদের কাছে দোয়া চাইছি?



হিজড়া দলের লিডারটা তখন বলে উঠল "দে কিছু বখশিশ দে"

আমি আর কথা না বাড়িয়ে বললাম, "গায়ে হাত না দিয়ে বখশিশ মুখে চাইলেই তো হত। পকেট থেকে ২০ বাহির করে দিলাম।
দলের নেতা হিজড়া টা ২০ টাকা দেখে বলে এটা কি দিলি? ২০০ টাকা দে।
আমার মেজাজ তখন চড়ম খারপ হয়ে গেল। ২০০ টাকা তাকে বখশিশ দিত হবে এটা কেমন কথা? তাও আবার তার কথা মত? এটা তো চাদাবাজির থেকে ভয়াবহ।

বললাম "২০০ টাকা কি গাছে ধরে?" সামনে পুলিশ ফাড়ি আছে আমি কিন্তু পুলিশ ডাকব?"
তখন হিজড়ারা বলে "ওই সব রেব আর পুলিশ আমাদেরই লোক" ওরা কিছুই করবে না। দে দে টাকাটা দিয়ে দে...."

এই কথা বলেই একটা আমর পিঠে হাত দেয়, অন্যটা আমর প‌্যান্টের চেইনের উপরে হাত দিয়ে চাপ দেয়।.... :( :( :( :(
সাথের অন্যটা বলে উঠে তোকে আমরা খুশি করে দিব.....
তারপর সব গুলি মিলে হাত তালি দিতে থাকে।

সেই সময় আমার আশে পাশে প্রচুর লোক ছিল.... ব্রিজের উপর অনেক মানুষ নদীর বাতাস খেতে আসে ...প্রচুর ইয়াং ছেলে ছিল... সবাই বিষয়টা দেখছে অথচ কেউ এগিয়ে এল না.....

আমি বুঝলাম আমি অসহায়... আমার পক্ষে কেউ এগিয়ে আসবে না...

নিরুপায় হয়ে বলাম.. "১০০ টাকা দিতে পারি.... নিয়ে যাও...."

তখন হিজড়ার লিডারটা বলে উঠল... "২০০ টাকাই দিবি...আমি যা বলব তাই তোকে দিতে হবে.... আমরা ৫ লাখ টাকা চাইলেও তোকে ৫ লাখই দিতে হবে...."

এ তো দেখি পুরাপুরি ছিনতাই.... তার কথা মত টাকা নাকি দিতে হবে....

এর মধ্যেই তারা নানা রকম অঙ্গভঙ্গি শুরু করে দিল...
দেখলাম নিজের মানসম্মান আর বাচানো যাবে না.... অগ্যতা নিরপায় হয়ে ২০০ টাকাই তাদের হাতে তুলে দিলাম... :( :( :( :(

টাকাটা নিয়ে হাসতে হাসতে চলে গেলে...

পেছন থেকে তাকিয়ে দেখলাম আরো বেশ কিছু ভদ্রলোক যারা আশুলিয়ার রাস্তায় ফুচকা-চটপটি খাচ্ছিলেন তাদের কে টার্গেট করে ধরে ধরে টাকা আদায় করছে....

এটা হল তাদের একটা কৌশল। ভদ্রলোক দেখে ধরবে আর শরীরের লজ্জাজনক স্থানে হাত দিয়ে মানুষকে এমন একটা বিব্রত কর পরিস্তিতিতে ফেলবে যে, তাদের দাবি মত টাকা দিতে বাধ্য করা হবে... এটা হল এক ধরনের ছিনতাইয়ের একটা কৌশল মাত্র।

সৃষ্টি কতৃক শারীরিক বিকলাঙ্গ থাকা মানে এটা না যে, তাদের চাদাবাজি আর ছিনতাই করে চলতে হবে।

হিজড়া গুলো চলে যাবার পর ভাবতে থাকলাম এটা থেকে সমাজকে মুক্ত করা উচিত।
সেটা চিন্তা করে সাথে সাথে " তিন রাস্তা ধৌড় মোড়ে" পুলিশ ফাড়িতে গিয়ে দেখলাম একটা ডিউটি টহল পুলিশের গাড়ি দাড়িয়ে আছে। সেখানে ডিউটি অফিসারের কাছে বিষয়টা বললাম।

উনি শুনে বললেন, এই হিজড়া দের নিয়ে আমরাও অনেক সমস্যায় থাকি।
এদের কিছুতেই কন্ট্রল করা যায় না। এদের থানায় ধরে নিয়ে গেলে, খবর পেয়ে দলে দলে হিজড়া থানায় উপস্থিত হবে। তারপর সারা রাত থানায় হই চই করে মাথায় তুলে রাখবে।
আর এদের ধরে নিয়ে যেতেও অনেক হাঙ্গামা পোহাতে হয়। এদের গায়ে প্রচন্ড শক্তি। সহজেই পুলিশের গাড়িতে উঠতে চাইবে না। ধস্থাধস্তি করে গাড়িতে তুলতে হয়।

তার পরেও লাভ হয় না, কোর্টে চালান করলেই সেখানে থেকে জামিনে পরদিন বের হয়ে আসবে। ও একই কাজ করতে থাকবে।

যাই হোক আমার অনুরোধে পুলিশকে দেখলাম টহল গাড়ি নিয়ে আশুলিয়া ব্রিজের দিকে যেতে....

পরে কি হয়েছিল সেটা আর দেখার মত মনের অবস্থা রইল না। চলে এলাম।

আমার মনে হয়েছে আমাদের সচতন হওয়া উচিত। হিজড়া বলে তারা কোন কাজ কর্ম করবে না। আর এই ধরনের "বখশিশের" নাম করে চাদাবাজি ও ছিনতাই করা কতদিন চলবে? এগুলো এখনই বন্ধ করা উচিত।[/sb


অন্য এক ব্লগারের অভিজ্ঞতা দেখুনঃ

হিজড়া হইতে সাবধান (ঢাকার ট্রাফিক সিগনালসমূহে)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১১ দুপুর ১:৫৬
১৫টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×