somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে ভাবে মুঘল বাহিনী বিক্রমপুর দখল করে নেয়

২৩ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ইতিহাসে আমরা সকলেই জানি ইসলাম খান কর্তৃক মুঘল বাহিনী ঢাকা জয় করে। আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা ঢাকা জয়ের আগেই ইসলাম খান বিক্রমপুর জয় করেন। সেই সময়ে বিক্রমপুরের রাজধানী শহর ছিল "শ্রীপুর"। আমাদের মনে রাখতে হবে চাঁদ রায় এবং কেদার রায়ের মৃত্যুর পর বিক্রমপুর মুঘল শাসনে চলে আসে। তখন বিক্রমপুর, সোনারগাঁ ও ঢাকার বার ভুঁইয়া প্রধান ছিলেন মূসা খান। মূসা খান দুই দুইবার মুঘলদের সাথে পরাজিত হলে বিক্রমপুর সহ ঢাকা ইসলাম খানের নিয়ন্ত্রনে চলে আসে। মূসা খানকে পরাজিত করে ইসলাম খান, ইতিমাম খান, এবং মির্জা নাথান বর্তমানে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার 'পাথরঘাটা' নামক স্থানে শিবির স্থাপন করে। এখানে মুঘল শাহী বাহিনী বেশ কয়েকদিন অবস্থান করে। তারপর পাথরঘাটা থেকে মুঘল বাহিনী পরে ঢাকায় গমন করেন।

ইতিমাম খানের নেতৃত্বাধীন নৌ এবং গোলন্দাজ বাহিনী ইছামতী নদী ধরে বিক্রমপুর ও শ্রীপুর আক্রমণ করে। বিক্রমপুর আক্রমনে মুঘল বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন ইসলাম খানের ভাই শেখ ইউসুফ মক্কী।

আর যে সকল সেনাপতি বিক্রমপুর আক্রমনে অংশগ্রহণ করেন তাঁদের নাম হলো- মুবারিজ খা, মিরাক বাহাদুর জালাইর, শেরখা তারিন, বায়াজিদ খান পানি, জাহান খা এবং রাজা রঘুনাথ। এর আগে ইসলাম খান আদেশ জারী করেন যে, মুঘল বাহিনীর সকল নৌ, গোলন্দাজ পদাতিক, হস্তী ও অশ্বারোহী কমান্ডারগন নিজ নিজ ব্রিগেড নিয়ে বিক্রমপুরের পাথরঘাটায় শিবির স্থাপন করবে। মুঘল বাহিনীর প্রধান সেনানায়ক ইতিমাম খানকে পাথরঘাটায় আসার নির্দেশ প্রদান করেন ইসলাম খান। ইতিমাম খান পাথরঘাটা পৌঁছা মাত্র যেন মুঘল সশস্ত্র বাহিনী বিক্রমপুর, শ্রীপুর, ঢাকা, সুবুর্ণগ্রাম করাভূত করে কদম রাসুল রিপোর্ট পাঠাবেন ইসলাম খানের নিকট। পাথরঘাটা হতে কোন এক শুভ সময় ইসলাম খান ঢাকা পৌঁছে। পাথরঘাটা হতে ঢাকার দুরুত্ব মাত্র ৬ মাইল। নৌকা যোগে ইসলাম খান মুঘল বাহিনীর একটি বিশাল অংশ ঢাকায় আগমন করে। মুঘল বাহিনীর আরেকটি বিশাল অংশ বিক্রমপুরে গমন করেছিলেন। ঢাকা পৌঁছে ইসলাম খান পাথরঘাটায় বার্তা প্রেরণ করেন। মিরাক বাহাদুর জালাইর ও শেরখা তারিনকে শ্রীপুর সাজাতে অন্যদিকে মুবারিজ খা, বায়াজিদ খা পানি ও জাহান খানকে বিক্রমপুরের ভিতরে রওনা হওয়ার নির্দেশ দেন। ইসলাম খান আরো আদেশ দেন যে মুঘল নৌ ও স্থল বাহিনীর প্রধান ইতিমাম খা ও ওয়াহিদ খান যেন ঢাকায় চলে আসেন।


পাথরঘাটা থেকে মুঘল বাহিনী বিক্রমপুরের অভ্যন্তরে ও শ্রীপুরে আক্রমণ চালায়। বিক্রমপুর ও শ্রীপুরে আক্রমনের সময় যে সকল সেনাপতিরা আক্রমনে অংশ নেয় তাদের নাম তুলে ধরা হল- ইতিমাম খার অধীনে ২০০ শত নৌযান ও ৭০০ অশ্বারোহী। রাজাবাহাদুর ৫০টি জাহাজ, মীর শরীফ গোলাবী ৩০টি যুদ্ধ জাহাজ। মির্জা নূরউদ্দিন ২০, আবদুল ওয়াহিদ ৩০টি এবং মুবারিজ খা ৯০ টি নৌযান নিয়ে বিক্রমপুর ও শ্রীপুর আক্রমণ করেন। বিক্রমপুর আক্রমনের সুনিদিষ্ট তারিখ তুযুখ ও গায়েবিতে উল্লেখ্য নেই। তবে মুঘল বাহিনী বিক্রমপুরের নিকট প্রবাহিত ইছামতি নদীতে প্রবেশ করে ২৭ রবিউল আউয়াল ১০১৭ হিজরিতে যা ১১ জুলাই ১৬০৮ খ্রিষ্টাব্দে।
মগ জলুদূস্যরা শ্রীপুরে একটি গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়, তাঁরা হত্যা লুণ্ঠন করে। মগরা গ্রামবাসিদের বন্দি করে নিয়ে যায়। শ্রীপুরের শাসক শেখ ইউসুফ মক্কী মগদের প্রতিহত করতে পারেন নি। তখন শেখ ইউসুফ মক্কীর সাহায্যে শেখ আশরাফ হানসিওয়ালা ও নুরউদ্দিনকে সৈন্যসহ শ্রীপুর যাওয়ার নির্দেশ দেন ইসলাম খান। অন্যতম নৌ সেনাপতি মির্জা নাথানকেও শ্রীপুর যাওয়ার নির্দেশ দেন সুবেদার। এমনকি ইসলাম খান নিজেও চলে আসেন শ্রীপুরে গ্রাম বাসিদের শান্তনা দেওয়ার জন্য। যতটা না সাধারণ প্রজাদের জন্য তার চেয়ে বেশি ভাইকে সাহায্য করতে শ্রীপুরে উপস্থিত হন ইসলাম খান।--- এ লেখাটি সংগৃহিত হলেও বিক্রমপুর দখলের এমন ঘটনার কিছুটা সত্যতা আছে, তাই কপি করে দিলাম। নিচের ছবিটি ইসলাম খানের
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১০:১০
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×